১০ দিনে ১ লক্ষ স্বাস্থ্য কার্ড বিলি রাজ্য সরকারের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) স্বপ্নের প্রকল্প ‘স্বাস্থ্যসাথী’ (Swasthya Sathi) বিমা নিয়ে একের পর এক রেকর্ড ভাঙছে রাজ্য প্রশাসন। ১ ডিসেম্বর শুরু হওয়া ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পে রাজ্যের মানুষের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ স্বাস্থ্যসাথী বিমায়। প্রতিশ্রুতিমতো এই কার্ড আবেদনকারীর হাতে দ্রুত তুলে দিতে বদ্ধপরিকর প্রশাসন। ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প শুরুর মাত্র ১০ দিনের মধ্যে যাচাইপর্ব শেষ করে গৃহীত হয়েছে ১০ লক্ষ আবেদনপত্র। আর এই অল্প সময়ের মধ্যেই এক লক্ষ মানুষের হাতে কার্ড তুলে দিয়েছে রাজ্য। শনিবার স্বাস্থ্যভবন সূত্রে এমনই তথ্য জানা গিয়েছে।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, ‘দুয়ারে সরকার’ চালুর পর থেকে আবেদনের ঠেলায় নাওয়াখাওয়া ভুলেছেন দপ্তরের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ সেলের আধিকারিকরা। শনিবার সকাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ১০ দিনে প্রায় ৩০ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। এমনকী ইতিমধ্যে কার্ড থাকা বহু মানুষও আবেদন করেছেন। আগের কার্ড দেখতে ভালো নয়, নতুন কার্ডটি সুন্দর, এই যুক্তি দেখিয়েও আবেদন জমা পড়েছে। সেইসব আবেদন যাচাই করে এদিন সকাল পর্যন্ত প্রায় ১০ লক্ষ আবেদন গৃহীত হয়েছে ও অনলাইনে সেগুলি নথিভুক্ত করা হয়েছে। বাকি আবেদনগুলি থেকে পরবর্তী পর্যায়ে ঝাড়াইবাছাইয়ের কাজ করে, বিভিন্ন তথ্যের সত্যাসত্য যাচাই করে কার্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যসাথী টিম অসম্ভব ভালো কাজ করছে। আশা করছি, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো প্রতিশ্রুতি পালনে সমর্থ হব।’
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য এখনও পর্যন্ত ৪৫০ শিবির করেছে রাজ্য। আবেদনপত্র গ্রহণ, বায়োমেট্রিক করা, কার্ড তুলে দেওয়া এবং তারপর ফের ছবি তুলে রাখা—ধাপে ধাপে কাজ চলছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, শুধু নিম্নবিত্ত বা গরিব মানুষই নয়, স্বাস্থ্যসাথী আলোড়ন তুলেছে মধ্যবিত্ত সমাজের মধ্যেও। কারণ, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম খাতে খরচ ফি-বছর লাফিয়ে বাড়ছে। এ ছাড়াও বাড়ির বয়স্ক পিতা-মাতাকে স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করতে গিয়ে বা বিমার প্রধান গ্রাহকের বয়স বাড়লে প্রিমিয়ামের অঙ্কও অনেকটা বেড়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যসাথী সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এই প্রকল্পের প্রিমিয়ামের পুরো খরচটাই বহন করছে রাজ্য সরকার। কানাকড়িও দিতে হচ্ছে না উপভোক্তাদের। তাই দুয়ারে সরকারের শিবিরগুলিতেও অন্যান্য পরিষেবার মধ্যে নির্দিষ্টভাবে স্বাস্থ্যসাথীর জন্য উপচে পড়ছে ভিড়।
একদিকে যেমন সরকারের এই প্রকল্পে সামিল হওয়ার চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছে, অন্যদিকে ভেলোরের হাসপাতালে (সিএমসি) চিকিৎসা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে করানোর আবেদনও দিন দিন বাড়ছে। ১০ সেপ্টেম্বর সিএমসিকে এই প্রকল্পের তালিকাভুক্ত হাসপাতালে অন্তর্ভুক্ত করে রাজ্য। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত ১০০ জনের বেশি মানুষ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে সেখানে ক্যাশলেস চিকিৎসা পাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে।