করোনা কমলেই হবে কলকাতার পুরভোট, মত রাজ্যের
রাজ্য সরকার কলকাতা পুরসভার ভোট করাতে চায়, কিন্তু শহরের করোনা-পরিস্থিতি যা, তাতে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ জানানো সম্ভব নয়। তবে করোনা কমলেই কলকাতার পুরভোট (Kolkata Municipal Corporation Election) করাতে রাজ্য তৎপর হবে। রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহল এমনই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। শেষ মুহূর্তে মতের কোনও বদল না-হলে রাজ্য সরকারের এই অবস্থানের কথা রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে।
তবে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কমিশনকে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে কমিশনকে এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দাখিল করতে হবে। কমিশনের এক কর্তা এ দিন বলেন, ‘‘পুর আইন অনুযায়ী রাজ্যের মতামতের বাইরে যাওয়ার এক্তিয়ার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নেই। ফলে নবান্নের ( (Nabanna) মতামত এলেই তা সর্বোচ্চ আদালতে জানানো হবে। এর পর সর্বোচ্চ আদালত যেমন নির্দেশ দেবে, সেই মতো চলতে হবে।’’
কলকাতা পুরসভার ভোট করানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৭ তারিখ সেই মামলার শুনানিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ১০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত অবস্থান জানাতে নির্দেশ দেন বিচারপতিরা। শীর্ষ আদালত বলে, বিভিন্ন রাজ্যে করোনার মধ্যেও ভোট হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার ভোট দ্রুত করানো প্রয়োজন। রাজ্য নির্বাচন কমিশন তাদের মতামত জানাক। তা না-হলে কলকাতা পুর বোর্ড পরিচালনার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা ঠিক করে দিতে হবে।
এর আগে কমিশন সুপ্রিম কোর্টকে (Supreme Court) জানিয়েছিল, ১৫ জানুয়ারি কমিশনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে। তার আগে কিছু পদক্ষেপ করা মুশকিল। কলকাতা-সহ মেয়াদ শেষ হওয়া পুরসভাগুলির ভোটের দিনক্ষণ জানাতে বলে ১২ নভেম্বর রাজ্যকে চিঠি দিয়েছিল কমিশন। রাজ্য তার জবাবে ২ ডিসেম্বর কমিশনকে জানায়, করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হবে। রাজ্যের এই অবস্থানই সর্বোচ্চ আদালতে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল কমিশন। নবান্নের কর্তারা জানাচ্ছেন, সরকার যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে আগেকার অবস্থানই বহাল থাকছে। অর্থাৎ, রাজ্য শুধু কলকাতা পুরসভায় ভোট করাতে রাজি, তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এখনই নয়।
প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্য নির্দিষ্ট দিনক্ষণ না-জানালে সুপ্রিম কোর্ট কী করতে পারে? অনেকের মতে, পুর আইন অনুযায়ী দিনক্ষণ ঠিকে করার দায়িত্ব রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু তা একান্তই পুর দফতরের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে। ফলে রাজ্য যদি দিন না-বলে সে ক্ষেত্রে পুর পরিচালনায় বিকল্প ব্যবস্থার নির্দেশ দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। যা আগের নির্দেশেই জানিয়ে রেখেছে বিচারপতি সঞ্জয় কল, বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ের বেঞ্চ।