নতুন বছরেই চালু দক্ষিণেশ্বর মেট্রো?
করোনা বাধা কাটিয়ে অবশেষে গতি পেতে চলেছে নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণের কাজ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ডিসেম্বর মাসের শেষে কিংবা জানুয়ারির গোড়াতেই মেট্রার ট্রায়াল রান শুরু হবে নর্থ-সাউথ করিডরের প্রস্তাবিত ওই বাড়তি অংশে। ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত যাত্রা শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র পেতে কমিশনার্স অব রেলওয়ে সেফটি’র (সিআরএস) কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে সিআরএসের সবুজ সংকেত মিললে নতুন বছরের গোড়াতেই উদ্বোধন হতে পারে নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণনেশ্বর মেট্রো প্রকল্পের (Dakshineswar Metro)। এ প্রসঙ্গে কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার মনোজ যোশী বলেন, ‘এই মুহূর্তে অন্তিম পর্যায়ের কাজ চলছে। আমরা আশা করছি চলতি মাসের শেষে নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত ট্রায়াল রান শুরু করতে পারব। সিআরএসের অনুমোদন মিললেই দ্রুত যাত্রীদের জন্য পরিষেবা চালু করে দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, করোনা (Coronavirus) এবং লকডাউনের জেরে এই প্রকল্পের কাজের গতি মারাত্মক কমে গিয়েছিল। বাড়তি এই অংশে স্বয়ংক্রিয় সিগনালিং ব্যবস্থা বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। গত মার্চে সুদূর জার্মানি থেকে সিগনালিং যন্ত্র আসার কথা থাকলেও, বিশ্বব্যাপী মহামারীর জেরে তা আটকে যায়। তারপর আনলক পর্বে সেপ্টেম্বর মাসে দ্বিতীয় সময়সীমার মধ্যে তা এসে পৌঁছনোর কথা থাকলেও যন্ত্র আসেনি। শেষমেষ নভেম্বরে সেই যন্ত্র হাতে পেতেই পুরো মাত্রায় কাজ শুরু হয়। বর্তমানে সিগনালিং এবং টেলি কমিউনিকেশের শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট রুটে যুক্ত হতে চলা দু’টি নয়া স্টেশন বরানগর এবং দক্ষিণেশ্বর তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই সারা হয়েছে। সবমিলিয়ে ভারতের সর্বপ্রথম এই মেট্রো পথের সঙ্গে বাড়তি দু’টি স্টেশনের যুক্ত হওয়া এই মুহূর্তে মাত্র মাস দু’য়েকের অপেক্ষা।
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে কবি সুভাষ থেকে নোয়াপাড়া পর্যন্ত রুটে ছুটছে মেট্রো। এরপর বরানগর হয়ে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত বাড়তি এই যাত্রাপথের দূরত্ব প্রায় ৪.০১ কিলোমিটার। এই প্রকল্প চালু হলে ডানলপ, বনহুগলি, বেলঘরিয়া ছাড়িয়ে আরও দূরবর্তী এলাকার মানুষ অতি সহজেই কলকাতা কিংবা দক্ষিণ শহরতলিতে পৌঁছতে পারবেন। টালা ব্রিজ ভাঙার পর সংশ্লিষ্ট অংশের মানুষের কাছে মেট্রোর এই সম্প্রসারণ কার্যত ‘লাইফ লাইন’ হয়ে উঠতে চলেছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সূত্রের দাবি, এই মুহূর্তে মেট্রোর ভাড়ার কাঠামো অনুযায়ী বাড়তি এই যাত্রাপথকে দু’টি পর্যায়ে ভাগ করা হবে। সেক্ষেত্রে প্রতি দুই কিলোমিটারের জন্য পাঁচ টাকা করে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হবে যাত্রীদের। এক্ষেত্রে নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর চার কিলোমিটারের বেশি হওয়ায় বাড়তি ১০ টাকা ভাড়া দিতে হবে যাত্রীদের। জানা গিয়েছে, বিভিন্ন কারণে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে দেরি হয়েছে। যার জেরে প্রকল্প ব্যয়ও বেড়েছে। প্রায় ৪৬৪.৮৬ কোটি টাকা লেগেছে বাড়তি এই সম্প্রসারণের কাজে। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছিলেন।