করোনার ধাক্কা সামলে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে এসবিএসটিসি
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তিন মাসে আয় বাড়ল দ্বিগুণেরও বেশি। তাই মহামারীর রেশ কাটিয়ে ফের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পথে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা(SBSTC)। চলতি মাসের অক্টোবর মাসে যেখানে আয় ছিল সাড়ে ছ’কোটির কাছাকাছি, সেখানে নভেম্বরে আয় বেড়ে হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি। বেড়েছে বাসের সংখ্যাও। এর ফলে উন্নত হচ্ছে পরিষেবাও। করোনার (Coronavirus) কারণে কলকাতা ও শহরতলিতে লোকাল ট্রেন ও মেট্রো পরিষেবা বন্ধ ছিল। তাই মহানগরীর জনজীবন সচল রাখতে এসবিএসটিসির সাড়ে সাতশো বাসের মধ্যে তিনশো বাস কলকাতায় পাঠানো হয়েছিল। এতে জেলার পরিষেবা কিছুটা কমলেও স্বস্তি পেয়েছিলেন কলকাতার বাসিন্দারা। এবার মেট্রো ও লোকাল পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়া পথে। তাই ধীরে ধীরে সংস্থা কলকাতা থেকে বাসগুলি তুলে নিয়ে ফের জেলার বিভিন্ন রুটে দেওয়া শুরু করছে। এতে পরিষেবা আগের অবস্থাতেই আসছে। সংস্থার অন্য রুটগুলিতে যাত্রী ভিড় বাড়লেও সদর কার্যালয় থাকা দুর্গাপুরেই টাউন সার্ভিস মুখ থুবড়ে পড়েছে। এই অবস্থায় তা কতদিন চালু রাখা যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এসবিএসটিসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর গোদালা কিরণ কুমার বলেন, কলকাতার জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে আমরা ৩০০ বাস সেখানে দিয়েছিলাম। কিন্তু অন্যান্য পরিষেবাগুলি সচল হওয়ায় সেখান থেকে বাস তুলে নিয়ে ফের জেলায় দেওয়া হচ্ছে। আর্থিকভাবেও সঙ্কট কাটিয়ে উঠেছি আমরা। তবে দুর্গাপুরে টাউন সার্ভিসের রেসপন্স ভালো নেই।
বাম আমলে সরকারি লাল বাসের বেহাল পরিষেবা বহুদিন আগেই রাজ্য থেকে বিদায় নিয়েছে। শ্রমিক আন্দোলনের দাপটে বিপুল লোকসানে চলা সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা ‘আইসিইউ’তে পৌঁছে গিয়েছিল। তবে তৃণমূল সরকারের হাত ধরে তা কর্পোরেট লুক পেয়েছে। বড় বড় কাচের জানালা দেওয়া পাওয়ার স্টিয়ারিং থাকা আধুনিক বাসগুলি যে কোনও ট্যুরিস্ট বাসকে টেক্কা দিতে পারে। সরকারি বাস চালাতে রাজ্যকে যে ব্যাপক আর্থিক বোঝা টানতে হতো সেই অবস্থাও এখন নেই। কোটি কোটি টাকা মুনাফা করতে থাকে এসবিএসটিসি। কিন্তু সব হিসেব পাল্টে দেয় করোনা। মহামারীতে বাস চালিয়ে সর্বস্তরে সংস্থা প্রশংসা পেলেও তাঁদের ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা হয়। সরকারকে ফের এগিয়ে আসতে হয়। কী পরিমাণ শোচনীয় অবস্থা হয়েছিল তা একটি পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট।
২০১৯ সালের আগস্ট মাসে যেখানে সংস্থার বাস চালিয়ে আয় হয়েছিল ১৫ কোটি ৯৫ লক্ষ ৬১ হাজার ৪০৪ টাকা, সেখানে এবছর ওই সময়ে আয় হয় ৬কোটি ৫৭লক্ষ ১৬হাজার ৩৪৪টাকা। তবে তিনমাসেই অবস্থার বদল হয়েছে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে যেখানে আয় হয়েছিল ১৪কোটি ৬৪ লক্ষ ২৫ হাজার ৯৭৯ টাকা। এবার আয় হয়েছে ১৪ কোটি ৩৭ লক্ষ ২৮ হাজার ৭৬৭ টাকা। নভেম্বর মাসজুড়ে সব রুটে মোট বাস চলাচল করেছে ২০ হাজার ১৯০টি।