দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল! ‘বিশ্বাসঘাতক’ শুভেন্দুকে তোপ কল্যাণ-সৌগতর
দীর্ঘ জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বুধবার বিধানসভায় গিয়ে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর এই পদক্ষেপকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলেই ব্যাখ্যা করছেন দলীয় নেতৃত্ব। উলটোদিকে, তৃণমূলের (TMC) সঙ্গে পাকাপাকিভাবে সম্পর্কছেদের প্রক্রিয়া তরান্বিত করতেই আরও উজ্জ্বল হল তাঁর বিজেপিতে যোগের আশা। শুভেন্দুর পদত্যাগের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেন মুকুল রায়-দিলীপ ঘোষ-সহ গোটা গেরুয়া শিবির।
দুপুরে কাঁথির বাড়ি থেকে কলকাতা আসেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)। এরপরই বিধানসভায় গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। সেই খবর পেতেই রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে কটাক্ষ করে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দেন, “সব ভোগ করার পর এখন ছেড়ে চলে যাচ্ছে। দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল। এরকম যতজন চলে যেতে চাইবে যাক। যত তাড়াতাড়ি যায় ততই ভাল।” কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ও। বলে দেন, “শুভেন্দু বিশ্বাসঘাতকতা করল। আমাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছিল। কিন্তু পরে বলে দেয় একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়। জানি, ও বিজেপির সঙ্গে কথা বলেছে। পদ পাওয়ার আশ্বাস পেয়েই চলে গিয়েছে।”
উল্লেখ্য, শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রী পদ থেকে সরে যাওয়ার পরও একবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে প্রশান্ত কিশোর এবং দলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়ের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের পরও সৌগত রায় আশাপ্রকাশ করেছিলেন যে সমস্যা মিটে যাবে। কিন্তু দলের অভ্যন্তরীণ বৈঠকের কথা কেন তিনি প্রকাশ্যে এনেছেন, তা নিয়ে সৌগতর প্রতি তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু। এসএমএস করে স্পষ্ট জানান, “এভাবে একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়।” তারপরই আরও তীব্র হল তাঁর বিজেপি যোগের জল্পনা। তবে বিধায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পরও তিনি কবে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেবেন, তা নিয়ে বিজেপির তরফে কিছু বলা হচ্ছে না। যদিও শোনা যাচ্ছে, আগামী শনিবারই যোগ দিতে পারেন তিনি। এদিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, আজকের পর শুভেন্দুর পদ্মশিবিরে আসার আশাই আরও উজ্জ্বল হল।
শুভেন্দুর পদত্যাগকে স্বাগত জানিয়ে দিলীপ বলেন, “এভাবেই মে মাসে বাংলাকে তৃণমূলমুক্ত করতে চাই আমরা।” একই সুর মুকুল রায়ের গলাতেও। বলে দেন, “বাংলায় গণ আন্দোলনের ক্ষেত্রে এটা একটা বড় সিদ্ধান্ত। ওঁর (শুভেন্দু) এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। তবে কবে বিজেপিতে যোগ দেবে, এখনও জানি না। সময় মতো ভেবেচিন্তে সঠিক সিদ্ধান্তই নিশ্চয়ই নেবে।”