১৯শে ডিসেম্বর ব্লক স্তরে শুরু করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগের প্রশিক্ষণ
করোনা ভ্যাকসিনের জন্য বুধবার স্টেট লেভেল ট্রেনিং শেষ হল। পূর্ব মেদিনীপুর ও নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্যজেলার অফিসাররা তিনদিনের প্রশিক্ষণ নিলেন। বুধবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ ভার্চুয়াল মাধ্যমে রাজ্যস্তরের প্রশিক্ষণ শেষ হয়। তারপর বিকেলে তমলুকে জেলাশাসকের অফিসে কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে ডিস্ট্রিক্ট লেভেল টাস্ক ফোর্সের বৈঠক হয়। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অভীক দাস ওই বৈঠক করেন। সেখানে পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্যজেলা এবং নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্যজেলার দুই সিএমওএইচ নিতাইচন্দ্র মণ্ডল এবং সুব্রত রায় অংশ নেন। কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে প্রশিক্ষণ, প্রস্তুতি এবং ভ্যাকসিন সংরক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। কয়েকদিনের মধ্যেই করোনা যোদ্ধাদের ভ্যাকসিন চলে আসার কথা। ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) রাখা এবং প্রয়োগ নিয়েও এদিনের টাস্কফোর্সের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
১৪ ডিসেম্বর থেকে করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে রাজ্যস্তরের ট্রেনিং হয়। তিনদিনের প্রশিক্ষণ বুধবার শেষ হয়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে ওই প্রশিক্ষণে দুই স্বাস্থ্যজেলার দুই সিএমওএইচ ছাড়াও ডেপুটি সিএমওএইচ-রা অংশ নিয়েছিলেন। তাঁরা মাস্টার ট্রেনার হিসেবে বিএমওএইচ, পাবলিক হেলথ নার্স(পিএইচএন) এবং পুরসভার স্বাস্থ্যদপ্তরের অফিসারদের প্রশিক্ষণ দেবেন। আগামী ১৯ তারিখ ব্লক ও পুরসভা স্তরের স্বাস্থ্যদপ্তরের অফিসারদের নিয়ে করোনা ভ্যাকসিনের প্রশিক্ষণপর্ব শুরু হবে। ব্লকস্তরে প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন ডেটা-এন্ট্রি অপারেটর, ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশনের ব্লক পর্যায়ের অফিসাররাও। মাস্টার ট্রেনারদের কাছ থেকে বিএমওএইচ প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তাঁরা নিজেদের ব্লকে প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীকে ট্রেনিং দেবেন। ১৯ থেকে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শেষ করার জন্য স্বাস্থ্যদপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা(পরিবার কল্যাণ) গত ১১ ডিসেম্বর একটি নির্দেশিকা পাঠিয়েছিলেন। সেখানে প্রশিক্ষণের সিডিউল বানিয়ে দিয়েছিল স্বাস্থ্যভবন। ১৯ তারিখ ব্লক ও পুরসভার স্বাস্থ্য অফিসারদের নিয়ে প্রশিক্ষণ হবে। তারপর টানা ২৪ তারিখ পর্যন্ত প্রশিক্ষণ আপাতত হবে না। সেটা কয়েকদিন পর শুরু হবে।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, দুই স্বাস্থ্যজেলার অফিসাররা ভ্যাকসিন নিয়ে রাজ্যস্তরের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ভ্যাকসিন সংরক্ষণ, প্রয়োগ সহ বেশকিছু বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সবার আগে করোনা যোদ্ধা এবং বয়স্ক ও অসুস্থ নাগরিকদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। দু’জন সিএমওএইচ এনিয়ে তালিকা জমা করেছেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, এদিন কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে টাস্কফোর্সের বৈঠক হয়। ১৯তারিখ ব্লক ও পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে প্রারম্ভিক প্রশিক্ষণ হবে।
তমলুক শহরে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কার্যালয়ের সামনে ডেপুটি সিএমওএইচ-৩ অফিসের নীচে কোল্ড চেন করা হয়েছে। সেখানেই ভ্যাকসিন মজুত করা হবে। ভ্যাকসিনের সুরক্ষায় সর্বক্ষণের জন্য থাকবে পুলিসি প্রহরা। মাইক্রো প্ল্যানিংয়ের মাধ্যমে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি রূপায়ণ করা হবে। ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য সর্বস্তরের সাধারণ মানুষজনকে আগ্রহী করতে স্বনির্ভর গোষ্ঠী (Self Help Group) এবং এনসিসি, এনএসএস গ্রুপের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সবমিলিয়ে ৫৮লক্ষ জনসংখ্যা। বয়স্ক, অসুস্থ নাগরিকরা আগে ভ্যাকসিন পাবেন। জেলায় সংক্রামিতদের মধ্যে বয়স্কদের মৃত্যুহার বেশি। বিশেষ করে ৭০বছরের ঊর্ধ্বে সংক্রামিতদের মৃত্যু বেশি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে ২৫৭জনের মৃত্যু হয়েছে। শেষ ২৪ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ১৯হাজার ২৫৪। গত ২৪ঘণ্টায় সংক্রামিত হয়েছেন ৮১জন।