কোমর্বিডিটি থাকা ব্যক্তিদের চিহ্নিতকরণ শুরু করল স্বাস্থ্যদপ্তর
করোনা ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) দেওয়ার জন্য সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে মুর্শিদাবাদ জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। ফ্রন্ট লাইন ওয়ার্কার বা প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের নামের তালিকা ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মী, আইসিডিএস, পুলিস কর্মী সহ অন্যান্য করোনা যোদ্ধাদের ৩৮ হাজার জনের নামের তালিকা তৈরি হয়েছে। এবার আগে থেকে অন্যান্য রোগে ভুগতে থাকা রোগীদের চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করল জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। কোমর্বিডিটি থাকা লোকজনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাই যাঁদের সুগার, প্রেসার বা অন্যান্য অসুখ রয়েছে, তাঁদের চিহ্নিত করে রাখতে চাইছেন আধিকারিকরা। করোনা যোদ্ধাদের টিকাকরণের পর তাঁদের তা দেওয়া হতে পারে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের আধিকারিকরা করোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বোলপুর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। জেলায় প্রশিক্ষণ শিবিরের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কোল্ড চেনগুলি তৈরি করে রাখা হয়েছে। করোনা যোদ্ধা বা অন্যান্য রোগে ভুগতে থাকা রোগীদের চিহ্নিতকরণ করা হচ্ছে। টিকা আসার পর আমাদের যাতে এক মুহূর্ত বসে থাকতে না হয়, তার জন্য এরকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ধাপে ধাপে জেলায় টিকা আসবে। টিকা নিয়ে আইন শৃঙ্খলার যাতে কোনও রকম অবনতি না হয় তার জন্য ইতিমধ্যেই টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। তারাই পুরো বিষয়টি দেখবে। জনগণের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলবে। এক আধিকারিক বলেন, টিকাকরণ নিয়ে এখন প্রায় দিনই ভিডিও কনফারেন্স করছেন দপ্তরের শীর্ষ আধিকারিকরা। কবে নাগাদ ভ্যাকসিন আসবে তার দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে টিকাকরণ নিয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। তাতেই মনে হচ্ছে জানুয়ারি মাসের মধ্যেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যেতে পারে। করোনা যোদ্ধাদের পর সুগার, প্রেসারে ভুগতে থাকা রোগীদের এই টিকা দেওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি রয়েছে। করোনায় তাঁরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। পাশাপাশি অন্যান্য রোগে ভুগতে থাকা রোগীদের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। কয়েকটি এলাকায় ওই রোগীদের সমীক্ষার কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধ ও বৃহস্পতিবার দু’দিন ধরে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) দু’টি কোভিড হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্তা। তিনি পরিকাঠামো নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। স্বাস্থ্য কর্তা গোপাল কৃষ্ণ ঢালি বলেন, এই জেলায় করোনা মোকাবিলায় যথেষ্ট ভালো কাজ করা হয়েছে। কোভিড হাসপাতালে পরিকাঠামো ভালো রয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলায় ১০ হাজার ৩৬১ জন এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১২৮ জনের। তাঁদের অধিকাংশই সুগার, প্রেসার বা শ্বাসকষ্টজনিত কারণে আগে থেকেই অসুখে ভুগছিলেন। এই রোগীরাই জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের চিন্তা বাড়িয়ে ছিল। এখনও যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁরাও কোনও না কোনও অসুখে আগে থেকেই ভুগছেন। সেই কারণেই এমন পদক্ষেপ বলে আধিকারিকরা মনে করছেন। আধিকারিকদের দাবি, কয়েক লক্ষ মানুষ বিভিন্ন অসুখে ভুগছেন। তাঁদের সকলকে একসঙ্গে টিকা দেওয়া সম্ভব নয়। ধাপে ধাপে তাঁদের টিকা দেওয়া হবে।