বড়দিনের আগে ঠান্ডার আমেজ গোটা রাজ্যে

আলিপুর আবহাওয়াঅফিসের চারপাশে যেভাবে উঁচু বাড়িঘর হয়েছে তাতে উত্তুরে হাওয়া অনেকটাই বাধা পাচ্ছে।

December 21, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

রবিবার ছুটির দিনে শীতের আমেজ আরও বাড়ল। আবহাওয়াবিদদের আশা আগামী শুক্রবার বড়দিন (Christmas) পর্যন্ত কনকনে ঠান্ডা মোটামুটি বজায় থাকবে। আকাশও ঝকঝকে পরিষ্কার আছে। সব মিলিয়ে বড়দিনের উৎসব পালনের অনুকূল পরিবেশ (weather) রয়েছে গোটা রাজ্যে। শনিবারের তুলনায় রবিবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ১ ডিগ্রি কমে ১২.৫ ডিগ্রি হয়েছে। এই শীতের মরশুমের নিরিখে এটাই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এই রেকর্ড অবশ্য আজ সোমবার ফের ভাঙতে পারে।

আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা জি সি দাস জানিয়েছেন, আজ তাপমাত্রা সামান্য হ্রাসেরও সম্ভাবনা রয়েছে। বড়দিনের সময় কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রির আশপাশে থাকতে পারে। রববিার কলকাতা সংলগ্ন এলাকায় তাপমাত্রা আরও কম ছিল। সল্টলেক ও দমদমে এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির আশপাশে ছিল। রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এখন ১০ ডিগ্রির নীচে নেমেছে। দক্ষিণবঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পানাগড়ে। সেখানে থার্মোমিটারের পারদ ৫ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। ‘হিমালয়ের রানি’ দার্জিলিংয়ের তুলনায় মাত্র ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা বেশি ছিল পানাগড়ে। পাহাড়ি শহর কালিম্পংয়ের তাপমাত্রা (৭.৫) পানাগড়ের থেকে বেশি ছিল। রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির কম ছিল।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়াদপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কোনও জায়গার তাপমাত্রা সেখানকার বিভিন্ন ভূ-প্রাকৃতিক কারণ ছাড়াও স্থানীয় আবহাওয়া কেন্দ্রের অবস্থানের উপর কিছুটা নির্ভর করে। উত্তর ভারতের দিক থেকে আসা কনকনে ঠান্ডা হাওয়া এখন তাপমাত্রা কমাচ্ছে। যে আবহাওয়া কেন্দ্রগুলির অবস্থানগত কারণে এই হাওয়ার স্পর্শ বেশি পাচ্ছে সেখানে তাপমাত্রা নিম্নমুখী হওয়ার মাত্রাও বেশি। আলিপুর আবহাওয়া কেন্দ্রের তুলনায় দমদম ও সল্টলেক আবহাওয়া কেন্দ্রের অবস্থান অনেক খোলামেলা। ফলে উত্তুরে হাওয়া এখানে বেশি খেলছে। কলকাতার কাছে হলেও দমদম, সল্টলেকে শীতকালে তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকে। কলকাতা থেকে খুব বেশি দূরে নয় বারাকপুর। সেখানে তাপমাত্রা এদিন ছিল পাহাড়ি এলাকা কালিম্পংয়ের কাছাকাছি। তবে বারাকপুরে তাপমাত্রার যথার্থতা নিয়ে আবহাওয়াবিদদের মধ্যে সংশয় আছে বলে খবর।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, পানাগড়ে তাপমাত্রা কম থাকার একটা প্রবণতা শীতকালে থাকে। এদিন সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রিতে নেমে আসায় শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল বলে সঞ্জীববাবু জানিয়েছেন। দক্ষিণবঙ্গের অন্যত্র তাপমাত্রা কমলেও শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি ছিল না। সমতল এলাকায় শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতির জন্য তাপমাত্রা অবশ্যই ১০ ডিগ্রির নীচে নামতে হবে। তার সঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অন্তত ৫ ডিগ্রি কম হতে হবে। কলকাতায় এখন সর্বনিম্ন স্বাভাবিক তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির আশপাশে। গত প্রায় ১০ বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে কলকাতায় এইসময়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কয়েকবার ১০ ডিগ্রির আশপাশে এলেও তার নীচে নামেনি। কলকাতায় ডিসেম্বরে ৬ ডিগ্রির আশপাশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হওয়ার নজির আছে। কিন্তু তা হয়েছিল অনেক বছর আগে ১৯৬৬ সালে। শহরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮-৯ ডিগ্রির আশপাশে এসেছে কখনওসখনও। কিন্তু, আলিপুর আবহাওয়াঅফিসের চারপাশে যেভাবে উঁচু বাড়িঘর হয়েছে তাতে উত্তুরে হাওয়া অনেকটাই বাধা পাচ্ছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen