ভুল অস্ত্রোপচারে অন্ধ ব্যক্তির দৃষ্টি ফেরাচ্ছে মমতার স্বাস্থ্যসাথী
চোখের ছানি অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে সংক্রমণ। সেখান থেকে আবছা হতে থাকে দৃষ্টিশক্তি। একহাত দূরের জিনিসও আর ঠাওর হয় না। আকস্মিক অন্ধত্বের জন্য অথৈ জলে পড়েন প্রৌঢ় বাদল গোস্বামী। এমতাবস্থায় কর্নিয়া প্রতিস্থাপনই ছিল উপায়। কিন্তু তা করার সামর্থ্য ছিল না বাঁকুড়ার এই দরিদ্র পরিবারের। অবশেষে প্রাণ বাঁচাল মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সাথী (Swasthya Sathi)। সে টাকাতেই কর্নিয়া অস্ত্রোপচার করে দেবে বারাকপুরের দিশা। যাঁদের ভুল অস্ত্রোপচারের জন্যই দৃষ্টি গিয়েছিল বাদলবাবুর।
ছানির সমস্যা নিয়ে ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারি মাসে বাঁকুড়ার সোনামুখি থেকে বিটি রোডের দিশা চক্ষু হাসপাতালে যান বাদল গোস্বামী। অভিযোগ, সেখানে ছানি কাটানোর পরই তাঁর কর্নিয়ায় সংক্রমণ দেখা যায়। চোখের সামনের স্বচ্ছ অংশটিই হল কর্নিয়া। এর সামনের ভাগকে বলা হয় স্ক্লেরা। চোখের আইরিশ এবং পিউপিল নামক অংশকে ঢেকে রাখে কর্নিয়া। এ অংশ নষ্ট হয়ে গেলে দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়াই দস্তুর। কারণ চোখের এই অংশেই আলোকরশ্মি প্রতিসারিত হয়ে লেন্স ভেদ করে রেটিনাতে গিয়ে পড়ে। তখনই সব কিছু স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায়। যে কোনও মানুষের দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক থাকার জন্য করোনার স্বচ্ছ থাকা আবশ্যক। রক্তনালী না থাকার জন্য চোখের এ অংশ এমনিই ঝকঝকে। করোনায় সংক্রমণ হলে আলোকরশ্মি আর রেটিনায় প্রবেশ করতে পারে না। যেমনটা হয়েছিল বাদলবাবুরও।
দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে অভিযোগ জানান বাদলবাবু। তাঁর কথায়, “আমার একটা চোখে ছানি অস্ত্রোপচার হয়েছিল। সেখান থেকেই সংক্রমণ। তারপর চিরতরে দৃষ্টিহীন।” অন্য জায়গায় ডাক্তার দেখিয়ে তিনি জানতে পারেন পাশের চোখটির অবস্থাও তথৈবচ। হয়তো ওই চোখ থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
অভিযোগ করোনার সময় একাধিকবার তিনি দিশা হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ফোনে পাননি। অবশেষে যোগাযোগ করা গেলে বাদলবাবুকে কর্নিয়া বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসক চোখ পরীক্ষা করে জানান চোখে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করতে হবে। তবেই ফিরে পাওয়া যাবে দৃষ্টি। তবে প্রতিস্থাপনের খরচ ছিল ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু প্রৌঢ় বাদলবাবুর দাবি, “আমি সামান্য পেনশন পাই। জমানো অর্থও নেই। এককালীন অত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।”