আলিপুরদুয়ারে বিজেপি শিবিরে দ্বন্দ্ব তুঙ্গে
এদিকে নতুন দলে পদ না পাওয়ার বিষয়ে আশিসবাবু ও অভিজিৎবাবু বলেন, আমরা পদ নিয়ে আদৌ ভাবছি না। দল আমাদের যেভাবে কাজে লাগাবে, সেভাবেই চলব।

আলিপুরদুয়ারে বিজেপির জেলা কমিটিতে কোনও পদ ফাঁকা নেই। তাই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে আসা নেতাদের সাধারণ সদস্য হিসেবেই থাকতে হবে। সোমবার বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা এমনই হুঙ্কার দেন। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে দলের জেলা কমিটির সবক’টি পদ পূর্ণ রয়েছে। তাই সদ্য তৃণমূল (Trinamool) ছেড়ে আসাদের দলে কোনও পদ দেওয়া যাবে না। তাঁরা দলে এসেছেন ভালো কথা। তাঁদেরকে দলের একজন সাধারণ সৈনিক হিসেবেই কাজ করতে হবে। একবছরেরও বেশি হয়েছে তৃণমূল ছেড়ে কালচিনির বিধায়ক উইলসন চম্প্রমারি বিজেপিতে আছেন। কিন্তু আজও উইলসনকে বিজেপি দলের কোনও পদ দেয়নি। সদ্য তৃণমূল ছেড়ে পদ্মফুল শিবিরে যাওয়া দশরথ তিরকি, আশিস দত্ত ও অভিজিৎ মজুমদারও বিজেপিতে এসে কোনও পদ পাচ্ছেন না। বিজেপিতে একজন সাধারণ কর্মী হিসেবেই তাঁদের থাকতে হবে, জেলা বিজেপির শীর্ষ নেতা সেটাই এদিন পরিষ্কার করে দিয়েছেন।
সদ্য দলবদল করা আশিসবাবু ছিলেন তৃণমূল পরিচালিত আলিপুরদুয়ার পুরসভার বিদায়ী বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। অভিজিৎবাবু ছিলেন তৃণমূলের জেলা কমিটির সহ সভাপতি। আর প্রাক্তন সংসদ সদস্য দশরথ তিরকি ছিলেন দলের জেলা কমিটির চেয়ারম্যান। সামনে বিধানসভার ভোট। ফলে জেলাজুড়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে তৃণমূল ছেড়ে আসা ওই তিন নব্য বিজেপি মুখকে গেরুয়া শিবির কীভাবে কাজে লাগাবে। উইলসন চম্প্রমারির মতো কি তৃণমূল ছেড়ে আসা ওই তিন নেতাকেও পদহীন হয়ে থাকতে হবে, এমন কানাঘুঁষো চলছে। বিজেপির জেলা সভাপতি বলেন, উইলসন পদ না পেলেও ওঁকে দলের কাজে লাগানো হচ্ছে। সদ্য তৃণমূল ছেড়ে আসা ওই তিনজন আগে জেলায় আসুক, তারপর ভাবা যাবে কীভাবে তাঁদের দলের কাজে ব্যবহার করা যায়।
প্রসঙ্গত, দশরথবাবুর যোগদানে কুমারগ্রামে বিজেপি (BJP) কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিক্ষোভ শুরু হয়। শনিবার কুমারগ্রাম ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় দশরথের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে গেরুয়া বাহিনী। দশরথবাবুকে উদ্দেশ্য করে ‘পচা আলু চাই না’ বলেও বিজেপি কর্মীরা সেই দিন স্লোগান দিয়েছিলেন। তাঁর কুশপুতুলও বিজেপি কর্মীরা পুড়িয়েছেন। জেলায় ফিরলে বিজেপি কর্মীদের হাতে হয়তো আক্রান্ত হতে পারেন, এমন আশঙ্কা করছেন দশরথবাবু। যদিও রবিবার ও সোমবার দশরথকে নিয়ে কুমারগ্রামে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভের খবর মেলেনি।
বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে কি এমন হল যে, হঠাৎ করে দশরথকে নিয়ে কর্মীদের ক্ষোভ বিক্ষোভ রাতারাতি মিলিয়ে গেল? সূত্রের খবর, দশরথকে নিয়ে কুমারগ্রামে কর্মীদের ক্ষোভ বিক্ষোভের খবর বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কানে গিয়েছে। তারপরেই জেলা নেতৃত্বেকে ক্ষোভ বিক্ষোভে রাশ টানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে নতুন দলে পদ না পাওয়ার বিষয়ে আশিসবাবু ও অভিজিৎবাবু বলেন, আমরা পদ নিয়ে আদৌ ভাবছি না। দল আমাদের যেভাবে কাজে লাগাবে, সেভাবেই চলব।