লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে চাষিদের থেকে রাজ্য ধান কিনল ৮ লক্ষ টন
এই সময়ের মধ্যে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে মোট ৪৬ লক্ষ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা আছে। এফসিআই-কে খরিফ মরশুমে ৬ লক্ষ টন ধান সংগ্রহ করতে বলেছে রাজ্য সরকার।

নতুন খরিফ মরশুমের প্রথম দু’মাস নভেম্বর-ডিসেম্বরে সাড়ে ৬ লক্ষ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল রাজ্য সরকারের। ডিসেম্বর শেষ হওয়ার আগেই সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে প্রায় ৮ লক্ষ টন ধান চাষিদের কাছ থেকে কেনা হয়েছে বলে খাদ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ধান এখনও পর্যন্ত কিনেছে সরকার। আগামী জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ধান কেনার পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশা করছে খাদ্যদপ্তর। প্রতি মাসে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৯ লক্ষ টন করে। চলতি খরিফ মরশুম আগামী অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। এই সময়ের মধ্যে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে মোট ৪৬ লক্ষ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা আছে। এফসিআই-কে খরিফ মরশুমে ৬ লক্ষ টন ধান সংগ্রহ করতে বলেছে রাজ্য সরকার।
খাদ্য দপ্তর সূত্রে বলা হয়েছে, বেশি সংখ্যক চাষির কাছ থেকে ধান (Paddy) কেনার জন্য প্রয়োজনে লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশি পরিমাণে ধান কেনা হবে। আগামী জুন পর্যন্ত রেশনে বিনা পয়সায় খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ইতিমধ্যে করেছেন। খাদ্যদপ্তর সেই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর রেশনে বিনাপয়সায় খাদ্য দেওয়া যে অব্যাহত থাকবে সেটাও মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। ফলে আগামী দিনে রেশনে সরবরাহ করার চালের চাহিদা বাড়বে বলে মনে করছেন খাদ্যদপ্তরের আধিকারিকরা। করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন ঘোষণার পর মুখ্যমন্ত্রী গত এপ্রিল থেকে রেশনে (Ration) বিনাপয়সায় খাদ্য সরবরাহ শুরু করেন। ফলে চালের চাহিদা বেড়ে যায়। এই কারণে গত মে থেকে ধান সংগ্রহে বিশেষ জোর দিতে হয় সরকারকে। গত খরিফ মরশুমে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে প্রায় ৪৯ লক্ষ টন ধান কেনা হয়েছে, যা সর্বকালীন রেকর্ড। গত মরশুমেও সরকারের ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৬ লক্ষ টন। ৬ লক্ষ টন ধান কিনতে বলা হয়েছিল এফসিআই-কে। যদিও এফসিআই মাত্র ৭০ হাজার টন ধান কেনে বলে খাদ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
আবহাওয়া অনুকূল থাকার জন্য এবার রাজ্যে আমন ধানের রেকর্ড ফলন হতে পারে। ফলে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করার জন্য চাষিদের আগ্রহ অনেক বেড়ে গিয়েছে। কারণ এমএসপিতে বেশি দাম পাওয়া যায়। সরকারি দর কুইন্টাল প্রতি ১৮৬৮-১৮৮৮ টাকা। সেখানে খোলবাজারের দাম ১৩০০ টাকার আশপাশে। গত মরশুমে ১৪ লক্ষের বেশি চাষি সরকারের কাছে ধান বেচেছিলেন। এবার এখনই ধান বেচতে চেয়ে ১৬ লক্ষ ৩০ হাজার চাষি নাম নথিভুক্ত করেছেন। যত বেশি সংখ্যক ছোট ও প্রান্তিক চাষির কাছ থেকে যাতে ধান কেনা যায় তার জন্য মাথাপিছু ক্রয়ের পরিমাণ ৯০ কুইন্টাল থেকে কমিয়ে ৪৫ কুইন্টাল করা হয়েছে। বেশি সংখ্যক চাষির কাছ থেকে ধান কেনার জন্য এবার স্থায়ী ক্রয়কেন্দ্রর সংখ্যা ও সেখানকার কাউন্টারের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বেড়েছে অস্থায়ী শিবিরেরও সংখ্যা। কোনও ইচ্ছুক চাষিকে নিরাশ না-করাটাই সরকারের লক্ষ্য।