চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের পর রাজ্যে টিকা পাবে পুলিস-প্রশাসন
চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের পর টিকা পাবে পুলিস-প্রশাসন। রাজ্যে টিকাকরণের দ্বিতীয় পর্যায়ে কোভিড-যোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করে দিল রাজ্য সরকার। সব ঠিক থাকলে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে টিকা প্রয়োগে অনুমোদন দিতে পারে আইসিএমআর। এমনটাই সূত্রের খবর। আর সেটা মিললেই কোভিড-মুক্তির দিশা দেখাবে ২০২১।
টিকাকরণ কর্মসূচিতে পুলিসকর্মীদের অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া চলছে কেন্দ্রের কোভিড গাইডলাইন মেনে। সেই মতো তালিকা তৈরির কাজে হাত দিয়েছে নবান্ন। এবং তা কীভাবে করা হবে, তার একটি নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে পুলিস সুপারদের। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে নবান্নে। তারপরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে রাজ্য। পরিকল্পনা রূপায়ণেও প্রস্তুতি প্রায় সারা। এখন শুধু অপেক্ষা টিকা প্রয়োগে আইসিএমআরের ছাড়পত্রের। সেটা পেলেই টিকাকরণের প্রথম ধাপ শুরু করে দেবে নবান্ন।
আর এই প্রথম পর্যায়ে টিকা পাবেন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। মহামারীর মোকাবিলায় এঁরাই মূলত প্রথম সারির সৈনিক। কোভিডের সঙ্গে যুঝতে গিয়ে গোটা রাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৮৫ জন চিকিৎসক। টিকাকরণে কেন্দ্রের নীতিগত অবস্থানই হল—কোভিডকে ঘায়েল করতে হলে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সংক্রমণের শৃঙ্খল ভেঙে ফেলা। তাই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা পাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ইতিমধ্যেই সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরতদের তালিকা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ। সেটি পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের কাছে। জানা গিয়েছে, রাজ্যে চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সাড়ে ছ’লক্ষ কর্মী প্রথম পর্যায়ে টিকা পাবেন।
দ্বিতীয় পর্যায়ে থাকছে পুলিস-প্রশাসনের আধিকারিক ও কর্মীরা। তাঁদের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। করোনা মোকাবিলায় পুলিসকর্মীরাও সামনে থেকে লড়াই করছেন। রাজ্যে সংক্রমণের রেখচিত্রকে নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে পুলিস কিংবা প্রশাসনের ভূমিকা কম নয়। কাজ করতে হচ্ছে মাঠে নেমে। ইদানীং আবার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়েছে বাংলায়। প্রতিটি দলই প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও সভা, সমিতি করছে। হচ্ছে পদযাত্রাও। সব’কটি কর্মসূচিতে ভিড় সামলাতে দায়িত্ব বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে প্রশাসন ও পুলিসের। আধিকারিক ও কর্মীদের মধ্যে বাড়ছে সংক্রমণের ঝুঁকিও। কলকাতা পুলিস সূত্রে খবর, শহরে করোনার মোকাবিলায় নেমে বহু পুলিসকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মারা গিয়েছেন প্রায় ২০জন।
তাই টিকাকরণ কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ে থাকছেন পুলিসকর্মীরাই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে প্রতিটি রাজ্যকে তালিকা তৈরির নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। কলকাতা পুলিসের কর্মী সংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার। রাজ্য পুলিসের সিভিক, হোমগার্ড, কনস্টেবল, সশস্ত্র পুলিস সহ সব বিভাগ মিলিয়ে সেই সংখ্যাটা লক্ষাধিক। আপাতত ১৫ জানুয়ারিকে লক্ষ্যমাত্রা ধরে প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে রাজ্য। কীভাবে টিকা দেওয়া হবে, তা নিয়ে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্যদপ্তরের অফিসারদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই আলোচনা করছেন। প্রয়োজনে পালস পোলিও মডেলে টিকাকরণ কর্মসূচি রূপায়িত করা হতে পারে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।