এবার স্কুলে ব্যাঙ্কিংয়ের সহজপাঠ
ফের একটি নজির গড়তে চলেছে বাংলা (WestBengal)। ব্যাঙ্কিংয়ের(Banking) সহজপাঠ এবার স্কুলপাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। আসন্ন নতুন শিক্ষাবর্ষে সপ্তম শ্রেণীর স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষা বইয়ে বিষয়টি এবার নতুন করে সংযুক্ত করা হয়েছে। ব্যাঙ্কিংয়ের খুঁটিনাটি, চেক ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি বিশেষ অধ্যায়। গোড়া থেকেই যাতে বাচ্চারা এই সম্পর্কে জানতে পারে, তার জন্যই এই বিশেষ উদ্যোগ। পাশাপাশি ব্যাঙ্কিংয়ে সাইবার ক্রাইম নিয়েও স্কুলপড়ুয়াদের সচেতন করার চেষ্টা করা হয়েছে।
শিক্ষাদপ্তর (Education Dept) সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া(RBI) পড়ুয়াদের অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ‘সাক্ষর’ করে তোলার জন্য আবেদন করেছিল। তার ভিত্তিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। শেষমেশ আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই পড়ুয়াদের এই বিষয়ে পাঠ দেওয়ার কথা ঠিক হয়েছে। কী কী থাকছে সিলেবাসে? অর্থনৈতিক সাক্ষরতা সংক্রান্ত একটি অধ্যায়ের মধ্যে কবিতার মাধ্যমে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কীভাবে খুলতে হয়, কী কী নথি লাগে ইত্যাদি বলা হয়েছে। ফর্ম জমা করার পর ব্যাঙ্ক তা নিয়ে কী কাজ করে, সেটিও ছড়া দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছোটদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে কী প্রয়োজন, সেসবও বলা হয়েছে এই অধ্যায়ে। অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্স না থাকলে যে জরিমানা দিতে হবে, সেকথাও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এসবের সঙ্গে ব্যাঙ্কিংয়ে সাইবার অপরাধও সম্পর্কেও প্রাথমিক কিছু তথ্য দেওয়া হতে পারে বলে খবর। এক আধিকারিক বলেন, বাচ্চাদের কাছে কী করে এই অনলাইন প্রতারাণার বিষয়টি তুলে ধরা যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা হচ্ছে। পাশাপাশি, ব্যাংকের ‘আইএফএসসি’ সম্পর্কে বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এই কোডের পুরো নাম কী, কেন এটা জরুরি ইত্যাদি বলা হয়েছে। এই কোডের প্রত্যেকটি সংখ্যা যে এক একটি নির্দেশক, সেকথাও এই অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে কী কী নথি লাগে, তা নিয়ে পড়ুয়াদের অবহিত করা হয়েছে। আয়করে ছাড় মিলতে পারে, এমন কিছু প্রকল্পের নামও বলা হয়েছে এই অধ্যায়ে। কোনও প্রকল্পে গ্রাহকের প্রাপ্য টাকা যে তাঁর অ্যাকাউন্টে সরাসরি চলে যায়, সেই প্রক্রিয়া বা ‘ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার’ (ডিবিটি) সম্পর্কেও বুঝিয়ে বলা হয়েছে।
শিক্ষাদপ্তরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষকরা। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, ব্যাঙ্কিং সম্পর্কে জানা বর্তমানে ছাত্রছাত্রীদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এতে ছাত্রছাত্রীদের লাভ হবে। সিলেবাস কমিটির সদস্য তথা এই বইয়ের রূপকার দ্বীপেন বসু বলেন, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী ইত্যাদি পরিষেবা শিক্ষার্থীদের কাছে সরাসরি পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে যুগ্মভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্ট খোলা বাধ্যতামূলক। শিক্ষার্থীরা যাতে এই সংক্রান্ত সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারে এবং তার পারিবারের বা প্রতিবেশীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে, সেই উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখেই এই বিষয়টি পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সারা দেশে এটি নজিরবিহীন। আগামীদিনে অন্যান্য রাজ্যও এটি অনুসরণ করবে বলে আমাদের আশা