রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে ওপেন হার্ট সার্জারি, আপ্লুত বৃদ্ধ হকার

December 31, 2020 | 2 min read

মাত্র দেড় মাস আগে তৈরি স্বাস্থ্যসাথীর (Swasthysathi) কার্ড দেখিয়ে বিনামূল্যে ওপেন হার্ট সার্জারি হল হাবড়ার এক হকারের। প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা খরচের অপারেশন বিনামূল্যে হবে, প্রথমে সেটা ভাবতেই পারেননি হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা। বিনামূল্যে অপারেশন হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীকে (Mamata Banerjee) কার্যত ভগবান মানছেন ওই হকারের পরিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবড়া শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের হিজলপুকুর এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ দেব। ৬৭ বছরের বৃদ্ধ বিশ্বনাথবাবু এলাকায় ঘুরে ঘি, কেক, মশলা সহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করেন। একমাত্র ছেলে একাদশ শ্রেণীতে পড়াশুনা করে। বিশ্বনাথবাবুই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। গত ১২ দিন ধরে তিনি বুকের ব্যথায় ভুগছিলেন। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছেও তিনি যান। সকলে ভাবেন গ্যাসের জন্য এই সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু শনিবার বুকের ব্যথা আচমকাই বেড়ে যায়।

এরপর তাঁকে বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন পরিবারে লোকেরা। বাড়ি থেকে আসার পথে দত্তপুকুর এলাকায় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর পরিবারের লোকেরা দ্রুত বারাসতের এক সুপার স্পেশালিটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান।

চিকিৎসকরা পরীক্ষার পর জানান, বিশ্বনাথবাবুর তিনটি ধমনির ৯৯ শতাংশ ব্লক হয়ে গিয়েছে। দ্রুত অপারেশন করা জরুরি। এর জন্য হাসপাতালের প্যাকেজ অনুযায়ী ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা প্রয়োজন। এত টাকার কথা শুনে পরিবারের সদস্যরা অথই জলে পড়েন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও স্বাস্থ্যবিমা আছে কি না, জানতে চান। পরিবারের তরফে জানানো হয়, সঙ্গে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড আছে।

এরপর বিনামূল্যে বিশ্বনাথবাবুর ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়। মঙ্গলবার রাত ১২টা ১০ মিনিট  থেকে বুধবার ভোর পাঁচটা পর্যন্ত চিকিৎসকরা অপারেশন করেন। টানা প্রায় পাঁচ ঘণ্টার সফল অপারেশনের পর এখন তিনি সুস্থ রয়েছেন।

বিশ্বনাথবাবুর ছোট ভাই স্বপন দেব বলেন, আমরা টাকার কথা শুনে প্রথমে ভেঙে পড়েছিলাম। এত টাকা ঘটিবাটি বিক্রি করেও হতো না। স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে বিনামূল্যে এত টাকার চিকিৎসা হবে প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ওই কার্ডেই বিনামূল্যে অপারেশন হবে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই অপারেশন হওয়ায় আমরা ভীষণ খুশি। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমাদের কাছে দেবতার মতো। ওঁকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই। উনি না থাকলে আজ আমাদের কী যে হতো, ভাবতেই পারছি না।

এছাড়া, বারাসতেও একটি ঘটনায় স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসার সুবিধা পেয়েছেন, ৭৫ বছরের বৃদ্ধ রঞ্জিত ঘোষ। তাঁর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ছিল না। সেকথা জানার পর বারাসত পুরসভার পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে তাঁর কার্ড করে দেওয়া হয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Swasthya Sathi

আরো দেখুন