কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

শনিবার থেকে কলকাতায় করোনা টিকাকরণের মহড়া

January 1, 2021 | 2 min read

নতুন বছর নিয়ে এল খুশির খবর। আগামিকাল, শনিবার থেকে কলকাতায় শুরু হচ্ছে করোনা টিকাকরণের মহড়া(CoVaccine Trial)। ইতিমধ্যেই চার রাজ্যে এমন ‘ড্রাই রান’(Dry Run) সফল হয়েছে। তাই এবার নতুন বছরের দ্বিতীয় দিন থেকে দেশের প্রতিটি রাজ্যের রাজধানী শহরে ভ্যাকসিন প্রদান অভিযানের মহড়া চালুর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। সে জন্য বৃহস্পতিবার প্রায় ৮৩ কোটি সিরিঞ্জ কেনার বরাত দেওয়ার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক(Health Dept)। আরও ৩৫ কোটি সিরিঞ্জের জন্য টেন্ডার ডাকা হচ্ছে। অন্যদিকে, নতুন বছরের প্রথম দিনেই ভ্যাকসিনে ছাড়পত্র মিলতে পারে বলে জল্পনা তুঙ্গে। তার প্রধান কারণ অবশ্য আজ, শুক্রবার করোনা টিকায় জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্রের লক্ষ্যে  বৈঠকে বসছে সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের (সিডিএসসিও) সাবজেক্ট এক্সপার্ট কমিটি। সেখানে সিরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড এবং ভারত বায়োটেকের কোভ্যাকসিনের আবেদন খতিয়ে দেখা হবে। কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার (ডিসিজিআই) কর্তা ডাঃ ভি জি সোমানি এদিন বলেছেন, ‘নববর্ষ হবে খুশির বছর, এটুকু ইঙ্গিত দিচ্ছি।’ সঙ্গে এও জানিয়েছেন, ‘চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল সম্পূর্ণ না হলেও আগের পর্বের তথ্য বিশ্লেষণ করে ছাড়পত্র দেওয়ায় কোনও সমস্যা নেই।’   
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও(Narendra Modi) এদিন আমেদাবাদে(Ahmedabad) স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অনুষ্ঠানে দেওয়া ভার্চুয়াল ভাষণে বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন আসবে যে কোনও সময়। সব রাজ্যকেই বলা হয়েছে প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে। তবে ২০২১ সালের জন্য আমাদের মন্ত্র হবে দাওয়াই ভি, কড়হাই  ভি (ওষুধ থাকবে, কঠোর সতর্কতাও)।’ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ ব্যাপারে রাজ্যগুলির সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। প্রতিটি শহরে কমপক্ষে তিনটি করে টিকাকরণ কেন্দ্রে এই ‘ড্রাই রান’ হবে। রাজ্যগুলি চাইলে রাজধানী শহরের পাশাপাশি অন্যত্রও এই মহড়া দিতে পারে বলেও জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। ভ্যাকসিন আসার প্রাক্কালে দেশবরাসীর উদ্দেশে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে গুজব খুব দ্রুত ছড়ায়। ভ্যাকসিন নিয়ে নানারকম বিভ্রান্তি ছড়ানোর সম্ভাবনা আছে। আমি দেশবাসীর কাছে আবেদন করব তারা যেন ভ্যাকসিন সংক্রান্ত গুজবকে গুরুত্ব না দেন। আর ভ্যাকসিন নিয়ে কোনও মেসেজ কিংবা ভুয়ো প্রচার যেন মোবাইলে শেয়ার অথবা ফরওয়ার্ড করেন। ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি যাতে ব্যাহত হয় এবং টিকা নিয়ে দেশের বদনাম হয়, সেই লক্ষ্যে গুজব ছড়ানো হবে। যা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।’ 
ভ্যাকসিন আসার বিষয়ে আজ, শুক্রবার ডিসিজিআইয়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা দেশ। জানা যাচ্ছে, করোনার টিকাকরণের লক্ষ্যে গোটা দেশে ৯৬ হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মীকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।  আপাতত ‘রেস্ট্রিকটেড ইউজে’র ছাড়পত্র মিলবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল সম্পূর্ণ হলে সাধারণ টিকাকরণ কর্মসূচিও শুরু হবে। 
প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিস, সাফাইকর্মী, জটিল রোগাক্রান্ত সহ মোট ৩০ কোটি নাগরিককে অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা হয়েছে। তবে করোনার কবল থেকে বাঁচাতে দেশের পঞ্চাশোর্ধ্ব সমস্ত নাগরিককেই টিকা দেওয়া হবে বলেই জানিয়েছেন আইসিএমআরের মহামারীবিদ্যা বিভাগের প্রধান ডাঃ সমীরণ পাণ্ডা। আগামী জুলাই মাসের ম঩ধ্যে প্রবীণদের টিকাকরণ কর্মসূচি শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র। 
ডাঃ পাণ্ডা বলেছেন, যদিও মনে রাখতে হবে ভ্যাকসিন দিলেই যে সংক্রমণ ১০০ শতাংশ আটকে যাবে, তা কিন্তু নয়। তবুও টিকা দেওয়ার লক্ষ্য মূলত তিনটি— সংক্রমণ আটকানো, সংক্রামিত হলেও যাতে রোগীর অবস্থা দ্রুত আশঙ্কাজনক হয়ে না ওঠে এবং কোভিড আক্রান্ত বয়স্কদের মৃত্যুহার যথাসম্ভব প্রতিরোধ। বিনামূল্যে টিকা দিতে যাবতীয় ডোজ কিনবে কেন্দ্র। বাকি টিকাকরণের দায়িত্ব রাজ্যের। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kolkata, #covid19, #corona vaccine, #human trial

আরো দেখুন