মেক ইন ইন্ডিয়া বাস্তবে সেল ইন্ডিয়াঃ তৃণমূল
আজ তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা শ্রমিক ইউনিয়নের নেত্রী দোলা সেন (Dola Sen)। তিনি মোদী সরকারের লোক দেখানো মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পকে কটাক্ষ করে বলেন সেটি বাস্তবে সেল ইন্ডিয়া। ৪৬টি লাভজনক রাস্ট্রায়ত্ব সংস্থা বিক্রি করে দেওয়ার যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে মোদী সরকার, তার তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।
প্রথম উদাহরণ তিনি তুলে ধরেন এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India)। তিনি বলেন, এয়ার ইন্ডিয়া একমাত্র বিমান যারা সারা পৃথিবীর ৯৮টি বিমানবন্দরে দেশের পতাকা বহন করে। ৮৭ বছরের এই সংস্থাকে ১০০ শতাংশ বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। জুলাই ২০১৪ থেকে মাইনে, পিএফ, গ্রাচুইটি, ইএসআই দেওয়া হচ্ছে না কর্মীদের।
এরপর তিনি বলেন বিএসএনএলের (BSNL) কথা। ৭৫ হাজার কর্মীকে স্বেচ্ছাবসর দেওয়া হয়েছে। ২৫ হাজার কর্মীকে লে অফ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, তাদের ন্যায্য প্রাপ্য ৯৮০০০ কোটি টাকার উল্লেখ বাজেটে নেই। ৫০ হাজার কর্মী মাইনে পাচ্ছে না বেশ কয়েক মাস। কাজের জন্য যে ঠিকা শ্রমিক আছে, তারাও বহুমাস মজুরি পাচ্ছে না। যেখানে অন্যান্য সংস্থা ৫জি নিয়ে কাজ করছে, সেখানে বিএসএনএল এখনও ৩জিতে পড়ে আছে। দেশে বিএসএনএলের সমস্ত টাওয়ার বিনামূল্যে জিওকে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এরপর রেল বিক্রির প্রচেষ্টা নিয়ে সরব হন তিনি। দোলার বক্তব্য, ২৫ লক্ষ মানুষ রেলে কাজ করেন। তাতেও পরিষেবা দেওয়ার নামে ১৫০টি রুট বেসরকারি করা হচ্ছে। রেল বেসরকারি করা হচ্ছে। স্টেশন বেসরকারি করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ১.৫-২ কোটি মানুষের জীবিকা যাবে। যাত্রীরা বঞ্চিত হবে।
১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল কেমিক্যাল নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। তিনি বলেন, এই ১০০ শতাংশ রাষ্ট্রীয় সংস্থাকেও বিক্রির চেষ্টা করছে মোদী সরকার। ৫ বছর আগে মোদীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কর্মীদের আবেদনে কোর্ট রায় দেয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। তারপর সরকার ডিভিশন বেঁচে যায় এই রায়ের বিরুদ্ধে। সে মামলা এখনও বিচারাধীন। তা সত্ত্বেও ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে মোদী সরকার (Modi Government) এই সংস্থাকে বিক্রি করতে চাইছে। এই সংস্থার ২০০০ শ্রমিক কাজ হারাবে এবং মানুষ এখানে উৎপন্ন দ্রব্য যা এখন সাধ্যের মধ্যে পায়, তা আর পাবে না।
দোলার অভিযোগ, স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান অয়েল এবং বিপিসিএল এর মত বেশ কিছু লাভজনক সংস্থাকেও বিক্রির চেষ্টা করছে কেন্দ্র। নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ৭৪% বিদেশি বিনিয়োগ এবং কয়লা বেসরকারিকরণ নিয়েও সরব হন তিনি।