রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

স্বাস্থ্য সাথী – ছেলের অপারেশন করালেন মহিষাদলের গাড়িচালক

January 6, 2021 | 2 min read

স্কুলপড়ুয়া ছেলের ভাঙা হাত জোড়া লাগাতে ৩৫হাজার টাকা খরচে নার্সিংহোমে অপারেশন করালেন মহিষাদলের নাটশাল জগন্নাথপুরের এক গাড়ি চালক। সৌজন্যে স্বাস্থ্যসাথী (Swasthyasathi) কার্ড। গত ১১ডিসেম্বর দুপুরে হনুমানের হাত থেকে বাঁচতে দৌড়ে পালাতে গিয়ে পড়ে যায় গাড়ি চালক স্বপন ভুঁইয়ার ক্লাস নাইনের পুত্র। বাম হাতে কনুয়ের কাছে জোর চোট লাগে। অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে ওই কিশোর। তমলুকে অর্থোপেডিক সার্জেনের কাছে নিয়ে যান স্বপনবাবু। চিকিৎসক জানান, কনুইয়ের হাড় কয়েক টুকরো হয়ে গিয়েছে, দ্রুত অপারেশন করা দরকার। ছেলের হাত কীভাবে জোড়া লাগবে, সেই চিন্তার সঙ্গে অপারেশন খরচ জোগাড় করা নিয়ে আতান্তরে পড়েন সামান্য গাড়ি চালক স্বপনবাবু। মুশকিল আসান করে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড।

ঘটনা দুই: স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে পেয়ে মহিষাদলের লক্ষ্যা এলাকার ক্যান্সার আক্রান্ত আরতিরানি মণ্ডলের কেমোথেরাপি শুরু করল তাঁর পরিবার। আরতিদেবীর ক্যান্সার ধরা পড়ার পর তাঁর চিকিৎসা নিয়ে অথৈ জলে পড়েন পরিবারের লোকজন। চিকিৎসকরা জানান, দ্রুত কেমোথেরাপি শুরু করতে হবে। একদিকে, সরকারি হাসপাতালে কেমোথেরাপির জন্য অপেক্ষা করতে হবে অনেকদিন। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে কেমোথেরাপি ব্যয়বহুল। স্বামী আদিত্য মণ্ডল জেলা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানান, দ্রুত স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ব্যবস্থা করা হোক। লক্ষ্যা এলাকায় দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের মাধ্যমে কার্ড দিতে সময় লাগবে। শেষমেশ ইটামগরা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের দুয়ারে সরকার ক্যাম্প থেকেই গত ২৩ডিসেম্বর তাঁদের ডেকে কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করে ব্লক প্রশাসন। এই কার্ড কার্যত বড়দিনের উপহার হিসেবে পৌঁছে দেয় প্রশাসন। 

দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পাওয়ায় গত একমাসে এধরনের অনেকগুলি মুশকিল আসানের ঘটনা সামনে এসেছে। মহিষাদল ব্লক প্রশাসন এই সাফল্য তুলে ধরতে লোকশিল্পীদের মাধ্যমে প্রচার শুরু করেছে। বাউল ও কবিগানের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে চলছে এই প্রচার। মহিষাদল ব্লকের জনশিক্ষা প্রসার আধিকারিক সৌভিক পাল বলেন, দুয়ারে সরকার কর্মসূচির ২৬টি ক্যাম্পে এখন পর্যন্ত ২৪হাজার পরিবার স্বাস্থ্যসাথীর জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পরিবারের হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। আরতিরানি মণ্ডলের মতো বেশ কয়েকজন রোগীর চিকিৎসার জন্য আপৎকালীন তৎপরতায় এক সপ্তাহের মধ্যে কার্ড তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। 

মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, দুয়ারের সরকার ক্যাম্পের মাধ্যমে ব্লকের ৮০শতাংশ পরিবারের হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তুলে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। ব্লকে প্রায় ৬৫হাজার পরিবার রয়েছে। এই কর্মসূচির আগে পর্যন্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা, স্বাস্থ্যকর্মী ও পঞ্চায়েতের লোকজন মিলিয়ে ১৪-১৫হাজার পরিবারের কাছে এই কার্ড ছিল। মুখ্যমন্ত্রী সবার জন্য এই কার্ড ব্যবস্থা করায় এখন ক্যাম্পগুলিতে ৮০শতাংশ মানুষ এই কার্ড নেওয়ার জন্য আবেদন করছেন। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে যে ৪৪হাজার আবেদন পড়েছে, তার মধ্যে ২৪হাজার স্বাস্থ্যসাথীর আবেদন। বাকি ১৮টি ক্যাম্পে আরও ১৫-২০হাজার আবেদন পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Swasthya Sathi

আরো দেখুন