আগামী কাল দেশজুড়ে ভ্যাকসিনের ড্রাই রান, রাজ্যের প্রস্তুতি চূড়ান্ত
কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। দেশের বিভিন্ন শহরে ভ্যাকসিন পৌঁছনো এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে টিকাকরণ শুরু হয়ে যাবে। তার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিতে আগামী কাল, শুক্রবার দেশের প্রতিটি জেলায় ফের হবে করোনা ভ্যাকসিনের ‘ড্রাই রান’ (Dry Run)। অন্যান্য রাজ্যের মতো বাংলাতেও সকাল থেকেই শুরু হয়ে যাবে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি যাচাইয়ের মহড়া। প্রসঙ্গত, ২ জানুয়ারি প্রথম ‘ড্রাই রান’ হয়েছিল সমগ্র দেশে।
রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, আগের বারের মতো এবার আর রাজ্যের শুধু তিন জায়গায় এই মহড়া হবে না। হবে প্রতিটি জেলার তিন কেন্দ্রে। একটি হল জেলার যে কোনও মেডিক্যাল কলেজ বা জেলা হাসপাতাল। দ্বিতীয়টি, সেই জেলায় শহরাঞ্চলের বাছাই করা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং তৃতীয়টি সেই জেলারই নির্দিষ্ট গ্রামীণ হাসপাতাল। কোন জেলায় কখন ড্রাই রান হবে, সেই তালিকা প্রতিটি জেলা স্বাস্থ্য প্রশাসনকে প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। প্রতি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে সামগ্রিকভাবে গোটা বিষয়টি এবং উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-৩’কে ওই দিনের ‘লজিস্টিক’ বা স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকা-খাওয়া, পরিবহণ এবং আনুষঙ্গিক দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, টিকাকরণের চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার ফের ‘ড্রাই রান’ হবে। দপ্তরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, আমরা সবদিক থেকে প্রস্তুত। আধুনিক ওয়াক ইন কুলার, ওয়াক ইন ফ্রিজ সহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দেওয়ায়, টিকা মজুত করার ৯৪১টি জায়গায় করোনা ভ্যাকসিনের প্রায় ১০ কোটি ডোজ ছ’মাস পর্যন্ত মজুত রাখতে পারব আমরা।
এদিকে নবান্ন (Nabanna) সূত্রের খবর, রাজ্যকে দ্রুত ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবকে যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন, তার উত্তর এসেছে।
২ জানুয়ারি মধ্যমগ্রামের আব্দালপুর আরবান প্রাইমারি হেলথ সেন্টার, দত্তাবাদ আরবান প্রাইমারি হেলথ সেন্টার এবং আমডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে ড্রাই রান হয়েছিল। প্রতিটি কেন্দ্রে ২৫ জন করে স্বেচ্ছাসেবক স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও ভ্যাকসিন টিম, ভ্যাকসিনেটর এবং অন্যান্য কর্মী মিলিয়ে আরও প্রায় ১০ জন ছিলেন। ছিলেন ইউনিসেফ, ইউএনডিপি প্রভৃতি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও। শুক্রবারও কমবেশি একই নিয়মে ড্রাই রান হবে বলেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতরে থাকবে ওয়েটিং রুম, ভ্যাকসিনেশন রুম এবং রেস্ট রুম। প্রথম ধাপে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা স্বেচ্ছাসেবীদের নাম ডেকে ওয়েটিং রুমে পাঠানো হবে। সেখানে তাঁদের পরিচয়পত্র ও অন্য আবশ্যিক তথ্য মিলিয়ে দেখা হবে। সম্ভাব্য ভ্যাকসিন প্রাপকদের মোবাইলে চলে আসা এসএমএস মিলিয়ে পাঠানো হবে ভ্যাকসিনেশন রুমে। সেখানে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বুঝিয়ে টিকা দেওয়ার মহড়া চলার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের কোউইন ওয়েবসাইটে টিকা প্রাপকদের নাম, মোবাইল নম্বর সহ প্রয়োজনীয় নথি আপলোড চলতে থাকবে। শেষ ধাপে ভ্যাকসিন প্রাপকদের পাঠানো হবে রেস্ট রুমে। আধঘণ্টা বিশ্রামের পর তাঁরা ছাড়া পাবেন।