শুভেন্দুকে বিশ্বাসঘাতক বলল নন্দীগ্রাম ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি
শহীদ স্মরণ অনুষ্ঠান ঘিরে টানটান উত্তেজনা। বুধবার রাত ১১টা ৪০ মিনিট নাগাদ নন্দীগ্রামের ভাঙ্গাবেড়া শহীদ মিনারে মাল্যদান করলেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে টিপ্পনী কাটা হল তা নিয়ে। নন্দীগ্রামের ভাঙাবেরিয়ায় ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভা থেকে নেতারা বিশ্বাসঘাতক বলে আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari)।
২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি। জমিরক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ভরত মন্ডল, শেখ সেলিম ও বিশ্বজিৎ মাইতির দেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় সোনাচূড়ার ভাঙাবেড়া সেতুর কাছ থেকে৷ এই তিন জনকে জমি রক্ষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ সম্মান দেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের স্মরণ করেই প্রতি বছর ভাঙাবেড়িয়াতে শহীদ স্মরণ করে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে রাজ্যের শাসক দলের হয়ে এই কাজ করে আসতেন এতদিন শুভেন্দু অধিকারী। এবার সেই দায়িত্ব তিনি পালন করলেন বিজেপির হয়ে।
তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, “যারা আজ বাইরে থেকে এখানে আসছেন তারা ভোটের জন্যে আসছেন। ভোট মিটে গেলে সবাই ভুলে যাবেন নন্দীগ্রামকে।” যদিও শুভেন্দুর এই বক্তব্যকে মানতে রাজি নয় তৃণমূল (Trinamool)। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। সেখানে প্রত্যেকেই তীব্র আক্রমণ করেন শুভেন্দুকে। ফিরোজা বিবি জানান, “নন্দীগ্রামের শহিদদের কেউ অপমানিত হয়নি। আমাদের অনুষ্ঠানে কোনও তাল কাটেনি। শেখ সুফিয়ান জানান, শহিদ মিনার পাপের পয়সা। যারা শহিদদের খুন করল, তাদের জমিতে সভা করেছে। পাপের পয়সা, তোলাবাজির পয়সা। উনি একদিনও এক রাত কাটাননি। ভোর ৪ঃ৪০ শহিদ হয়েছিল। আর এল রাত সাড়ে ১১ঃ৩০। ওর এখন জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে। মাথা খারাপ হয়ে গেছে। শিশির বাবুকে বলব ছেলেকে ডাক্তার দেখান। না হলে উল্টোপাল্টা হয়ে যাবে। এখন পাগল হয়ে গেছে।”
আবু তাহের জানিয়েছেন, যিনি বলছেন আমি একাই আন্দোলন করেছি৷ তাকে বলছি, আমরা কি বিদেশে ছিলাম? মমতা বন্দোপাধ্যায় এখানে একাধিববার এসেছেন। সারা রাজ্যের মানুষ সমর্থন করেছেন। এখানে কেউ একা আন্দোলন করেনি। আমরা আগামী দিনে কারও মাথা নত করব না। নেত্রী এখনও বেঁচে আছেন। তাকে অবমাননা করতে পারব না। কেউ যদি বলে আমি একা আন্দোলন করেছি। সেটা ভুল। আমাদের আর একটা আন্দোলন করতে হবে। যারা নন্দীগ্রামের (Nandiram) মানুষকে ভুলে যায়। তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হবে। সুব্রত বক্সী জানিয়েছেন ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি কোনও বিশেষ ব্যক্তিকে নিয়ে নয়। সকলকে নিয়ে করা হয়েছিল। যখন প্রয়োজন হবে তখনই হাজির হবো।নন্দীগ্রামের শহীদ দিবস পালন ঘিরে সময় এড়ানো গেলেও রাজনৈতিক সংঘাত এড়াতে পারল না দু’পক্ষই।
নন্দীগ্রামে শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে কড়া ভাষায় শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করেন ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক তথা তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় শুভেন্দুকে সেখানে বিশেষ দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। ‘একটা রাতও নন্দীগ্রামে কাটাননি, আন্দোলনের সঙ্গেও ছিল না ‘, শুভেন্দু অধিকারীর সম্বন্ধে বলেন সুফিয়ান।