জেলা জুড়ে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করে এনিয়ে লাগাম টানার চেষ্টা করছেন দলের জেলা সভাপতি।

January 7, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

 মূল সংগঠন থেকে শাখা সংগঠনে পদ নিয়ে বিজেপি (BJP) অন্দরে চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছে। জেলা নেতৃত্বকে অন্ধকারে রেখেই নিজের ইচ্ছামতো মোর্চা নেতা থেকে স্থানীয় স্তরের পদাধিকারিকরা নতুন কাউকে দায়িত্ব দিচ্ছেন। কখনও আবার পদ থেকে অপসারণও করে দিচ্ছেন। অনেক সময় স্থানীয় আক্রোশ থেকেও এটা হচ্ছে। যার জেরে ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরে দ্বন্দ্ব (Infighting) স্পষ্ট। বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করে এনিয়ে লাগাম টানার চেষ্টা করছেন দলের জেলা সভাপতি। তবে ভোটের আগে এই ঘটনাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল।

বিজেপি জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, অনেক সময় আমাদের নজরে না এনেই কিছু পদে নতুন কর্মকর্তাদের বসানো হচ্ছিল। কাউকে আবার আমাদের না জানিয়েই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। যা দলীয় শৃঙ্খলার বাইরে। তাই সোশ্যাল সাইটে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে। দল বড় হচ্ছে। তাই এধরনের ছোট কিছু ঘটনা ঘটতেই পারে। এতে তৃণমূলের আনন্দের কিছু নেই। আমাদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। ওরা নিজেদের দ্বন্দ্ব নিয়ে ভাবুক। 

তৃণমূল রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন দাসু বলেন, বিজেপি একটা বিশৃঙ্খল দল। নিজেদের পদ নিয়েই মারামারি করে আবার ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখে। ওরা রাজ্যের ভোটে হালে পানি পাবে না।

কয়েকমাস পরেই রাজ্যের বিধানসভা ভোট। দল বদলের হাওয়া চলছে বিভিন্ন জায়গায়। বিজেপির দাবি, তৃণমূল ভেঙে তাঁদের দলে নেতা থেকে কর্মী-সমর্থকরা যোগ দিচ্ছেন। অনেক অতি উৎসাহী বিজেপি নেতারা আবার তৃণমূল দল থাকবে না বলেই দাবি করেন। কিন্তু সেইসব এলাকায় নতুন পুরনো দ্বন্দ্ব ক্রমশ বাড়ছে। তবে, পশ্চিম বর্ধমানে এখনও সেই অবস্থা হয়নি। কোনও দল বদলের বড় ঘটনাও ঘটেনি। তাতেই দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত আকার নিয়েছে। সাম্প্রতিককালে দেখা গিয়েছে, মহিলা মোর্চা থেকে একাধিক স্থানীয় স্তরের পদাধিকারিদের নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্ব ক্রমশ প্রকাশ্যে এসেছে। বারাবনি-১ মণ্ডলের মহিলা মোর্চার সভানেত্রী করা নিয়ে মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রীর সঙ্গে মণ্ডল সভাপতির দ্বন্দ্ব লাগে। আরও একাধিক মণ্ডলে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। মূল সংগঠনেও এমন অনেক পদাধিকারীর পরিবর্তনের ঘটনা ঘটেছে যা জেলা নেতৃত্বর গোচরে আনা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ মিটিংয়ে সতর্ক করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই এবার জনসমক্ষে আনা হল বিষয়টি।

জেলা সভাপতির ফেসবুক প্রোফাইলে দেখা গিয়েছে, দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বিশেষ বার্তা। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘বিজেপি আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সমস্ত পদাধিকারীরা, কার্যকর্তাদের সূচিত করা হইতেছে যে, জোনাল ইনচার্জ, জেলার সাধারণ সম্পাদক ও জেলা সভাপতির সাথে আলোচনা ব্যতীত কোনওরকম সাংগঠনিক পদ বা দায়িত্বের রদবদল, সংযুক্ত বা বিয়োজন করা যাইবে না’। তবে, পশ্চিম বর্ধমানে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল নতুন নয়। জেলা সভাপতি নির্বাচন থেকে মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন সব বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। একাধিকবার জেলা সভাপতির সঙ্গে আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মতপার্থক্যও বারবার শিরোনামে এসেছে। এবার নিচুতলায় এই ঘটনায় যাতে জেলার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর হাত থেকে নিয়ন্ত্রণ না চলে যায়, তারজন্য সোশ্যাল সাইটে এই বার্তা বলে অনেকে মনে করছেন। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen