বিয়ে রুখে কন্যাশ্রীদের স্কুলে পাঠানোয় নজির হাসনাবাদের
বাল্যবিবাহ (Child Marriage) রুখে ছাত্রীদের ফের স্কুলে পাঠিয়ে নজির গড়ল হাসনাবাদ ব্লক (Hasnabad Block)। এক্ষেত্রে সেঞ্চুরি করেছে তারা। কন্যাশ্রী (Kanyashree) প্রকল্প চালুর পর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১০৯ জন নাবালিকা স্কুলছাত্রীর বিয়ে আটকানো গিয়েছে এই ব্লকে। এব্যাপারে আশপাশের ব্লকের থেকে অনেক এগিয়ে হাসনাবাদ।
কন্যাসন্তানদের শিক্ষায় এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং অল্পবয়সি স্কুলছাত্রীদের বাল্যবিবাহ আটকাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যজুড়ে চালু করেছে কন্যাশ্রী প্রকল্প। শুধু এই রাজ্য নয়, গোটা দেশ এবং দেশের বাইরেও যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে রাজ্য সরকারের প্রকল্পটি। ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা দিয়ে সমাজের প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে কন্যাশ্রী প্রকল্পকে তিনটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম প্রকল্পটির নাম কে ওয়ান। এখানে স্কুলের মাধ্যমে ফর্ম পূরণ করতে হয়। প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপ কে টু। এখানে ১৮ বছর পেরিয়ে ১৯ বছর বয়স হলেই ছাত্রীদের এককালীন ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তৃতীয় ধাপে উচ্চশিক্ষায় আরও উৎসাহ দিতে কে থ্রি দেওয়া হয় বিডিও অফিস থেকে। এক ‘কন্যাশ্রী’ রূপা মণ্ডল জানান, আমি যখন ক্লাস টেন-এ পড়ি, তখন আমার বিয়ে ঠিক করে বাড়ির অভিভাবকরা। অথচ তখন আমার ১৮ বছরও হয়নি।
এই খবর হাসনাবাদ বিডিও অফিসে পৌঁছলে কন্যাশ্রী প্রকল্পের আধিকারিকরা আমাদের বাড়িতে চলে আসেন। অভিভাবকদের তাঁরা বলেন এই বিয়ে বন্ধ করতে। কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধার কথাও বলেন মা-বাবাকে। স্কুলে পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দেন। আজ আমি পড়াশোনা করছি, খুব ভালো লাগছে। যদি ওঁরা এইভাবে আমার পাশে এসে না দাঁড়াতেন, তাহলে হয়তো সারা জীবন খুব সমস্যায় ভুগতে হতো। হাসনাবাদ ব্লকের কন্যাশ্রী আধিকারিক প্রণব মুখোপাধ্যায় বললেন, এখানকার গ্রামাঞ্চলে শিক্ষার হার কম। তাছাড়া আর্থিক সঙ্কটেও ভুগছেন এই সমস্ত ছাত্রীদের মা-বাবা। তাই তড়িঘড়ি অল্প বয়সের মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হতে চান তাঁরা। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে বিপুল সাহায্য করেছে কন্যাশ্রী প্রকল্পটি। এই বিষয়ে হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি এসকেন্দার গাজি জানান, এখানকার বেশিরভাগ অঞ্চল নদীমাতৃক।
অনেকেই সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধার কথা ঠিকঠাক জানতে পারেন না। তাই ঠিক করেছি, পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সব সুযোগ-সুবিধার কথা এলাকায় এলাকায় মাইকিং এবং লিফলেট বিলি করে সকলকে জানাব। অভিভাবকরা যাতে অল্পবয়সি ছাত্রীদের বিয়ে না দিতে পারেন, সেই দিকে লক্ষ্য রেখে সবরকম উদ্যোগ নেওয়া হবে হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে।