শিশুর জটিল অস্ত্রোপচারের আগেই মিলল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড
দুয়ারে সরকারের (Duare Sarkar) সুফল আবার দেখা গেল। ১ বছরের এক শিশুর খাদ্যনালীতে অস্ত্রোপচারের আগেই বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর পরিবারের হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তুলে দিলেন বারুইপুর মহকুমা শাসক সুমন পোদ্দার ও সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম। প্রশাসনের এই তৎপরতায় খুশি শিশুটির পরিবার। এজন্য মুখ্যমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানাতেও ভোলেননি তাঁরা।
নরেন্দ্রপুর (Narendrapur) থানার বনহুগলি ১ পঞ্চায়েতের দক্ষিণ রামচন্দ্রপুরের বাসিন্দা জিয়াউর মণ্ডল ও সোনালি, দু’জনেই মূক ও বধির। তাঁদের সন্তান আরমানের জন্মের পর দেখা যায়, শিশুটির খাদ্যনালী নেই। তার দিদা হামিদা সর্দার বলেন, আগে আরমানের ছ’বার অস্ত্রোপচার হয়েছিল। অবিলম্বে আরও একটি অস্ত্রোপচার হলে সে স্বাভাবিক হবে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন। কিন্তু, এবারের অস্ত্রোপচারের জন্য দরকার পাঁচ লাখ টাকা। এই পরিমাণ অর্থ আমাদের পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছিল না। কারণ, লকডাউনের পর থেকেই জামাইয়ের কাজ ছিল না। এলাকার তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সদস্য সফিউদ্দিন মণ্ডলের কাছে সমস্যার কথা জানান পরিবারের সদস্যরা। গত সোমবার তাঁর উদ্যোগেই ওই এলাকায় দুয়ারে সরকার শিবিরে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ফর্ম জমা দেয় আরমানের পরিবার। রোগীর অবস্থার কথা কানে যায় বিধায়ক ফিরদৌসি বেগমের। তিনি খোঁজখবর নিয়ে সোনারপুরের বিডিওকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেন। বিডিও তা জেনে যেনতেনপ্রকারেণ ওই শিশুর পরিবারের হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তুলে দিতে বদ্ধপরিকর হন। মহকুমা শাসকও সরকারি আধিকারিকদের নির্দেশ দেন, দ্রুত কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করতে। ওই তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সদস্যকে বলা হয় শিশুর পরিবারকে নিয়ে মহকুমা শাসকের অফিসে আসতে। সেই অনুযায়ী এদিন দুপুরে আরমানের পরিবার হাজির হয় মহকুমা শাসকের অফিসে। যাবতীয় নথি এবং বায়োমেট্রিক পরিচয়পত্রের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এনে অতি দ্রুত কাজ করেন সরকারি আধিকারিকরা। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় তাঁরা ওই পরিবারের হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তুলে দিতে সক্ষম হন।
শিশুর দিদা হামিদা বলেন, এত তাড়াতাড়ি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swasthya Sathi Card) পাব ভাবিনি। কত জায়গায় ছুটেছি টাকা জোগাড়ের জন্য। কী করে নাতিকে সুস্থ করব, ভেবে পাচ্ছিলাম না। এবারে কলকাতার নার্সিংহোমে নাতিকে ভর্তি করে অস্ত্রোপচার করাতে পারব। প্রশাসন যেভাবে পাশে দাঁড়াল, তা নিয়ে বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। আর বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম বলেন, ওই শিশুর অস্ত্রোপচার খুব জরুরি হয়ে পড়েছিল। আর্থিক সমস্যায় তা আটকে ছিল। এই কথা জেনেই বিডিও ও মহকুমা শাসককে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলি। কম সময়ের মধ্যে কার্ড তুলে দিতে পেরে ভালো লাগছে।