১০ দিনে ই-স্নানের কিট বিক্রি হয়েছে ৫০ হাজারের বেশি
খোদ মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এবার ই-স্নানেই (E-Snan) হোক গঙ্গাসাগরের পুণ্যস্নান। জেলা প্রশাসনও আগে থেকেই ভার্চুয়াল সাগরমেলা করার যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিল। যার মধ্যে ছিল ই-স্নানের সামগ্রী দেওয়ার বিষয়টি। অনলাইনে ই-স্নানের বুকিং শুরু হতেই তা কেনার চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে অনলাইন ও অফলাইনে শুরু হয়েছে বিক্রি। ১০ দিনের মধ্যেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে ৫০ হাজারের বেশি ই-স্নানের সামগ্রী। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, করোনাকালে নিজেদের সুরক্ষিত রেখে ঘরেই পুণ্যস্নানে দ্বিধা নেই তাঁদের।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও অবধি অনলাইনের মাধ্যমে ২১ হাজার এবং কাউন্টার থেকে ৩২ হাজার ই-স্নানের সামগ্রী বিক্রি হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৫টি কাউন্টার খোলা হয়েছে। ডেলিভারি চার্জ ১৫০ টাকা। অর্ডার দেওয়ার দু’-তিনদিনের মধ্যেই সেসব পৌঁছে যাচ্ছে বাড়ি বাড়ি। এই কিটে থাকছে গঙ্গাজল, প্রসাদ ও সিঁদুর রয়েছে। সাগর, হারউড পয়েন্ট এবং আউটরাম ঘাটে এই কাউন্টার খোলা হয়েছে। সাগরে মোবাইল ভ্যান ঘুরছে এই সামগ্রী নিয়ে। তীর্থযাত্রী এবং সাধারণ মানুষ সেখান থেকেও নিয়ে যাচ্ছেন কিট। ই-স্নানের এই সামগ্রী গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম চালু করেছিল জেলা প্রশাসন। সেবার পাঁচ হাজারের মতো মানুষ তা অনলাইনে অর্ডার দিয়েছিলেন। এবার সেই উদ্যোগকেই ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আমজনতার মাঝে। করোনা আবহে এই উদ্যোগ আরও জনপ্রিয় হয়েছে বলেই মত আধিকারিকদের। তবে আজ, বুধবার গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে রায় ঘোষণা করবে হাইকোর্ট (High Court)। সেক্ষেত্রে সাগরে স্নানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হলে, ই-স্নানের কিট নেওয়ার হিড়িক আরও বাড়বে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত প্রশাসনের কর্তারা। জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ই-স্নান এবার খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকেই ওই কিট কিনছেন। সরকার যে আবেদন জানিয়েছে, তাকে মান্যতা দিয়েছেন পুণ্যার্থীরা। রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, সুষ্ঠুভাবেই মেলা পরিচালনা হচ্ছে। পুণ্যার্থীরা আসুন, অসুবিধা নেই। করোনা বিধি মেনে এখানে সব ব্যবস্থাই করা হয়েছে।
এদিকে, এদিন যাঁরা সাগরে স্নান করতে পা বাড়িয়েছিলেন, তাঁদের মাঝপথেই আটকে দেওয়া হয়। কলসে জল ভরে তাঁদের স্নানের ব্যবস্থা করা হয়। তীর্থযাত্রীদের হাতে কলস তুলে দিয়ে এর সূচনা করেন জেলাশাসক নিজেই। আনুষ্ঠানিকভাবে এদিন কিয়স্কেরও উদ্বোধন করা হয়। তবে তীর্থযাত্রীদের সংখ্যা অন্যান্যবারের তুলনায় অনেকটা কম বলে কিছুটা স্বস্তিতে প্রশাসন। পাশাপাশি, এদিন থেকেই মেলাপ্রাঙ্গণ জীবাণুমুক্ত রাখার জন্য ড্রোনের মাধ্যমে স্যানিটাইজার স্প্রে করা হয়। ধাপে ধাপে ক্ষেত্র ধরে সেই কাজ করা হয়। সাগরমেলায় আগে থেকে বিলি করা হলেও আজ, বুধবার আউটরাম ঘাটে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ বিতরণ কর্মসূচি শুরু হবে। তীর্থযাত্রীরা যাঁরা ভিন রাজ্য থেকে আসছেন, তাঁদের হাতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি ওই ব্যাগ তুলে দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বক্তব্য, গ্রিন গঙ্গাসাগর (Gangasagar) করতে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।