দেশ বিভাগে ফিরে যান

বাজেটে কোভিড সেস চাপাতে পারেন মোদি

January 14, 2021 | 2 min read

পরিকাঠামো খাতে বিপুল অর্থ বরাদ্দের সম্ভাবনা। স্বাস্থ্য খাতে গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বরাদ্দ বৃদ্ধির পরিকল্পনা। করোনা (Coronavirus) ও লকডাউনের জেরে অর্থনীতির মন্দার সময় ঘোষণা করা একের পর এক প্রকল্প এবং সেগুলিতে অর্থ বরাদ্দের চাপ। সব মিলিয়ে খরচের পরিমাণ লাফিয়ে বাড়ছে। কিন্তু আয়ের পথ সীমিত। অদূর ভবিষ্যতে আয় ও রাজস্ব বৃদ্ধির সম্ভাবনাও দূরঅস্ত। এই অবস্থায় সরকারের খরচ চালানোর টাকা আসবে কোথা থেকে? এই পরিস্থিতিতে আসন্ন বাজেটে কি তাহলে কোভিড সেস (covid-19 Cess) বসছে? তেমন একটা ভাবনাই কিন্তু রয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকারের। এ নিয়ে নিয়ে অর্থমন্ত্রকের অন্দরে ইতিমধ্যেই আলোচনা হয়েছে। অন্তত ২ শতাংশ কোভিড সেস বসানোর প্রস্তাব এসেছে বাজেট বৈঠকগুলিতে। জীবন-জীবিকা ছন্দে ফিরেছে বেশিদিন নয়। এরই মধ্যে নতুন করে কোভিড সেসের বোঝা চাপলে মানুষ যে তা ভালোভাবে নেবে না, তা সরকার বিলক্ষণ জানে। তাই অর্থমন্ত্রক এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এ বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারেনি।

সাধারণত বাজেট ঘোষণার আগে প্রায় তিন মাস ধরে তুমুল ব্যস্ততা থাকে অর্থমন্ত্রক, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও নীতি আয়োগে। বাজেট ও অর্থনীতির সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন মহলের সঙ্গে দফায় দফায় চলে আলোচনা। মতামত, পরামর্শ, প্রস্তাব, সুপারিশ চাওয়া হয় শিল্প-বাণিজ্য মহল, অর্থনীতিবিদ, রাজ্য সরকার, বণিকসভাগুলির থেকে। এই প্রাক বাজেট বৈঠকেই এবার শিল্প-বাণিজ্য মহল ও বণিকসভাগুলির পক্ষ থেকে নতুন কোনও ট্যাক্স না চাপানোর জন্য সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলেছে, এমনিতেই গত আর্থিক বছরের বেশিরভাগ সময়টাতেই শিল্প উৎপাদন, বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি এবং আর্থিক লেনদেন স্তব্ধ ছিল। সবেমাত্র অর্থনীতির স্বাভাবিক চলন দেখা যাচ্ছে। এমন একটা পরিস্থিতিতে আবার যদি বাজেটে কর্পোরেট ট্যাক্স কিংবা আয়কর বেড়ে যায়, তাহলে  অর্থনৈতিক ভোগান্তি আরও বাড়বে।  এই আবেদনের জেরে অর্থমন্ত্রক পড়েছে মহাসঙ্কটে। কারণ, বিগত বছরে অর্থনীতির মন্দা, কর্মহীনতা, শহর ও গ্রামের গরিবদের রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং শিল্পোৎপাদনে ধাক্কার কারণে সরকার একঝাঁক প্রকল্প ঘোষণা করেছে। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা থেকে আত্মনির্ভর ভারত প্যাকেজ। লোনের উপর সুদ স্থগিত করায় ব্যাঙ্কের আয়ও কমেছে। এমতাবস্থায় সরকার স্থির করেছে, আসন্ন বাজেট হবে খরচ করার বাজেট।

অর্থাৎ সরকারি স্তরে বেশি করে পরিকাঠামো ও অন্য খাতে খরচ করা হবে, যাতে কর্মসংস্থান বাড়ে এবং বাজারে অর্থের জোগান মসৃণ হয়। আবার অন্যদিকে কোভিডের কারণে সরকার এবার সামাজিক উন্নয়ন ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও বরাদ্দের পরিমাণ বাড়াতে চাইছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বাজেট বরাদ্দ বাড়বে। পাশাপাশি যেহেতু লাগাতার ১০০ দিনের কাজের জন্যও চাহিদা রেকর্ড পরিমাণ বাড়ছে, তাই এবার এই প্রকল্পেও অর্থবরাদ্দ বাড়াতে হবে। এই খাতে দুই দফায় গত বছর ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ হয়েছিল। বাজেটে বরাদ্দ হয়েছিল ৬২ হাজার কোটি টাকা। পরে আরও ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। এবার সেই নিরিখেই বরাদ্দ করতে হবে। এই অবস্থায় সরকারের উদ্বেগ, টাকা আসবে কোথা থেকে! রাজস্ব আদায়ের পন্থা নির্ধারণের আলোচনাতেই তাই উঠে আসছে কোভিড সেস চালুর প্রস্তাব। এখনও সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে কোভিড সেস সরাসরি অথবা আংশিক চালুর কথা ভাবা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে একটি প্রস্তাব হল, ১০ লক্ষ টাকার বেশি বার্ষিক আয়ের ক্ষেত্রে কোভিড সেস বসানো হতে পারে। তাহলে সরকারের আয় বৃদ্ধির একটা রাস্তা পাওয়া যাবে। বাজেটের আগে এটাই এখন হাইভোল্টেজ জল্পনা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Coronavirus, #covid-19 Cess

আরো দেখুন