বিজেপির বিরুদ্ধে নীতি প্রণয়ন করতে ব্যর্থ টুইটার?
বন্ধ হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) টুইটার অ্যাকাউন্ট। এমনকি অন্যান্য সমর্থকদের প্রোফাইল ব্যবহার করে ট্রাম্প টুইট করতে গেলে তাদের অ্যাকাউন্টও বন্ধ করে দিয়েছে টুইটার।
এই নিয়েই আশঙ্কায় ভুগছেন ভারতের ‘সবচেয়ে বড়’ রাজনৈতিক দলের নেতারা। চমকপ্রদ হলেও এটাই সত্যি। আসলে, বিজেপি (BJP) নেতারা মনে করছেন, ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ হওয়াটা অশনি সংকেত। যা টুইটারের মতো সংস্থাগুলির হাতে অগাধ ক্ষমতা থাকার ইঙ্গিত।
কিন্তু সত্যি কি টুইটার বন্ধ করে দিতে পারে বিজেপি নেতা বা সমর্থকদের অ্যাকাউন্ট? বিগত কয়েক বছরের কিছু দৃষ্টান্ত অন্য কথা বলছে।
গত ২৭ শে নভেম্বর গোটা টুইটার ছেয়ে যায় একটি নির্দিষ্ট হ্যাসট্যাগে। তা হল ‘Trueindologyisback’। অর্থাৎ সবাই ‘Trueindology’ নামক টুইটার হ্যান্ডেলটিকে পুনরায় স্বাগত জানাচ্ছিল। এই হ্যান্ডেলটিকে দুবার টুইটার কর্তৃপক্ষ সাসপেন্ড করেছিল তাদের নীতি লঙ্ঘনের জন্যে। বলাইবাহুল্য এই হ্যান্ডেলটি ফেরার খুশিতে মেতেছিল শুধুই বিজেপি সমর্থকরা।
‘Trueindology’ নামক হ্যান্ডেলটি কিছু ভুয়ো ঐতিহাসিক যুক্তি দিয়ে অন্য ধর্মের ওপর হিন্দু ধর্মের মতাদর্শ চাপিয়ে দেওয়ার জন্যে কুখ্যাত। বিশেষ করে মুসলিম ধর্মের ওপর।
তৃতীয়বারের জন্যে ফিরে এসে এই হ্যান্ডেলটিতে ছবি এবং পদবী প্রকাশ করা হয়। এর আগে এই ব্যক্তিরই @TIinExile নামের প্রোফাইলটি টুইটারের পক্ষ থেকে সাস্পেন্ড করা হয়েছিল।
টুইটারের নীতিতে বলা আছে যে টুইটার কোন হ্যান্ডেলকে চিরতরে সাস্পেন্ড করলে তা আর লোকচক্ষুর সামনে আসবে না। আর সেই ব্যক্তি অন্য কোন নামেও আর কোন হ্যান্ডেল খুলতে পারবে না। যারা সাম্প্রদায়িক উস্কানি, নৃশংসতা প্রচার করে তাদের হ্যান্ডেলই এভাবে সাস্পেন্ড করা হয়।
কিন্তু অদ্ভুতভাবেই বিজেপি সমর্থকদের হ্যান্ডেলগুলি নাম বদলে টুইটারে ফিরে আসছে। ‘Trueindology’ এই প্রোফাইলটিও নাম বদলে ফিরে আসে।
@pokershash নামের একটি প্রোফাইলও চিরতরে সাসপেন্ড হওয়ার পরে আবার ফিরে আসে। ফিরে এসে ৪৬ হাজার ফলোয়ারও যোগাড় হয়ে যায় এই ব্যক্তির। বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রও এই প্রোফাইলটি সাস্পেন্ড হওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এমনকি তাকে ফেরানোর আবেদনও জানান তিনি। অতঃপর খুব সহজেই ফিরে আসে সেই হ্যান্ডেল।
বিভোর আনন্দ নামের এক ব্যক্তির প্রোফাইল চিরতরে সাসপেন্ড করে দেয় টুইটার। কারণ তিনি মহারাষ্ট্রের এক মন্ত্রীর মানহানির চেষ্টা করেন। তার বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়। সেই প্রোফাইলও ফিরে আসে। পরবর্তীতে মুম্বাই আদালত তার শর্ত সাপেক্ষ জামিন মঞ্জুর করে। সেই প্রোফাইলটিও কিছুদিনের মধ্যে অন্য নামে ফিরে আসে।
প্রশ্ন উঠছে, কেন এই জন্যপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি এই অ্যাকাউন্টগুলির ক্ষেত্রে তাদের নীতি প্রয়োগ করতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে? তাদের পুনরায় ফিরে আসা আটকানো কর্তৃপক্ষের পক্ষে কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠছে কেন? উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল, এই হ্যান্ডেলগুলি বেশিরভাগই বিজেপি সমর্থকদের। এবং এদের নতুন হ্যান্ডেল তৈরি হওয়ার পর তাদের স্বাগত জানিয়েছেন অনেক শীর্ষ বিজেপি নেতারা।
আর সেই কারণেই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি বিজেপির বিরুদ্ধে নীতি প্রণয়ন করতে ব্যর্থ টুইটার?