স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করালো বিজেপি সাংসদের পরিবার
ঝাড়খণ্ড থেকে কাজে ছুটি নিয়ে বাড়ি এসে স্বাস্থ্যসাথী(Swasthya Sathi) কার্ড করালেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোর্তিময় সিং মাহাতর (Jyotirmay Singh Mahata) পরিবারের সদস্যরা। তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করেন। ইতিমধ্যে সেই কার্ড হাতেও পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। চিকিৎসা পরিষেবায় সুবিধা পাওয়ার আশায় এমপির গ্রামের একাধিক বিজেপি(BJP) কর্মীর পরিবারও ওই কার্ড করিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
পুরুলিয়ার(Purulia) বিজেপি সাংসদ জ্যোর্তিময় সিং মাহাতর পরিবারের সদস্যরা। তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করেন। ইতিমধ্যে সেই কার্ড হাতেও পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। চিকিৎসা পরিষেবায় সুবিধা পাওয়ার আশায় এমপির গ্রামের একাধিক বিজেপি কর্মীর পরিবারও ওই কার্ড করিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। পাশাপাশি তিনি মেদিনীপুর জোনের পর্যবেক্ষকের দায়িত্বেও রয়েছেন। জ্যোর্তিময়বাবুর বাড়ি পুরুলিয়ার ঝালদা-১ ব্লকের পুস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাথরাডি গ্রামে। সেখানে থাকেন তাঁর মা অম্বিকা মাহাত। জ্যোর্তিময়বাবু পুরুলিয়া শহরের একটি ভাড়াবাড়িতে থাকেন। তবে মাঝেমধ্যেই গ্রামের বাড়িতে যান তিনি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পকে ভাঁওতা বলে প্রচার করলেও তাঁর পরিবারের অনেকেই রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়েছেন। জ্যোর্তিময়বাবুর জেঠতুতো ভাই তরুণ মাহাত ঝাড়খণ্ডের একটি দোকানে কাজ করেন। পরিবারের সদস্যদের কাছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের কথা শুনে ঝাড়খণ্ড থেকে বাড়ি ফিরে সেই কার্ড করানোর জন্য লাইন দেন। তিনি বলেন, ঝাড়খণ্ড থেকে এসে ২২ডিসেম্বর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করানোর জন্য দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে গিয়েছিলাম। সেখানে লম্বা লাইন ছিল। প্রায় ২০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে ব্লক অফিসেও যেতে হয়েছিল। সেখানেও কার্ড নেওয়ার সুষ্ঠু ব্যবস্থা ছিল না। তবে আবেদন করার সাতদিনের মধ্যেই কার্ড হাতে পেয়েছি। আমার স্ত্রী সুষমা মাহাতর নামে কার্ড হয়েছে। বৃদ্ধা মা রেশমি মাহাতরও কার্ড করানোর ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তাঁর পক্ষে অত দূরে ব্লকে যাওয়া সম্ভব ছিল না। কিছু সুবিধা পাওয়ার আশাতেই কার্ড করেছি। তরুণবাবু এলাকায় বিজেপি কর্মী হিসেবেই পরিচিত।
সাংসদের ভাইপো প্রতাপ মাহাত বলেন, আমরা বিজেপি করি ঠিকই। কিন্তু কার্ড করতে তো বাধা নেই। ব্লক থেকেই ওই কার্ড হাতে পেয়েছি। সুবিধা পাব কিনা জানি না। তবে সবাই কার্ড করাচ্ছে। আমিও কার্ড করিয়ে রাখলাম। এবিষয়ে জ্যোর্তিময়বাবুর এক আত্মীয় গ্রামেরই বাসিন্দা কৃত্তিবাস মাহাত বলেন, আমার মা দময়ন্তী মাহাতর নামে কার্ড হয়েছে। জ্যোর্তিময়দার সঙ্গেই আগে থাকতাম। বর্তমানে কিছু সমস্যা হওয়ায় এখন একসঙ্গে থাকা হয় না। গ্রামে সিপিএম, বিজেপি, তৃণমূল সব দলের বেশিরভাগ লোকই তো স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়েছেন। এতে তো দলের কোনও বিষয় নেই। আমার পরিবারের অন্যরাও কার্ড করিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে পুরুলিয়ার এমপি জ্যোর্তিময় সিং মাহাতকে ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। বিজেপির পুরুলিয়া জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা ঝালদা এলাকারই বাসিন্দা শঙ্কর মাহাত বলেন, কোথাও কি নোটিস দেওয়া আছে যে, বিজেপি দল করলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করা যাবে না? তাহলে আমাদের জিজ্ঞাসা করাটাই অবান্তর। তবে আমার পরিবার কার্ড করেনি। অন্য কে করেছেন, কে করেননি সেই খবর জানি না। এবিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। আমরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বা ওই পরিকল্পনা তো খারাপ বলছি না। আমরা বিরোধিতা করছি মুখ্যমন্ত্রীর ভাঁওতাবাজির। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যদপ্তরের সেই বাজেটই নেই, যে এতজন পরিষেবা পাবেন। আগে তো টাকা কোথা থেকে আসবে তা নির্দিষ্ট করে বলুক সরকার।