ঘুমিয়ে কেন্দ্র? এবার অরুণাচল সীমান্তেও গ্রাম তৈরি করল চীন
লাদাখের(Ladakh) পর এবার অরুণাচল প্রদেশ(Arunachal Pradesh)। পরবর্তী লক্ষ্য কি সিকিম(Sikkim)? সেক্ষেত্রে সন্দেহ জোরদার হচ্ছে, চীনের নিশানায় এবার সম্ভবত সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্ট শিলিগুড়ি করিডর(Siliguri Corridor)? কয়েকদিন আগেই বিজেপি(BJP) এমপি সুব্রহ্মণ্যম স্বামী(Subramanian Swamy) সরকারকে সতর্ক করেছিলেন। বলেছিলেন, অরুণাচল সীমান্ত লাগোয়া বেশ কিছু স্থানে চীন একের পর এক গ্রাম তৈরি করেছে। ভারত এই ইস্যুতে যেন সতর্ক থাকে। সুব্রহ্মণ্যম স্বামী আরও বলেছিলেন, ‘টু ফ্রন্ট ওয়ার’ কি যে কোনও সময় শুরু হয়ে যাবে? টু ফ্রন্ট ওয়ারের অর্থ চীন ও পাকিস্তান একজোট হয়ে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে।
সম্প্রতি সেনাপ্রধান মনোজ নারাভানে সেনাদিবসে এই একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছিলেন, ভারত ‘টু ফ্রন্ট ওয়ার-এর জন্য তৈরি। এবার জানা যাচ্ছে, সত্যিই অরুণাচল প্রদেশের বেশ কিছু এলাকায় গ্রাম নির্মাণ করেছে চীন। কয়েকটি গ্রামে শতাধিক মানুষ বাস করছে। পাশাপাশি সীমান্তবর্তী এলাকায় সারিবদ্ধ তাঁবু দেখা গিয়েছে। আপার সুবানসিরি জেলায় সারি চু নদীর তটবর্তী বিস্তীর্ণ কিছু এলাকাকে তাদের অংশ বলেই দীর্ঘদিন ধরে চীন দাবি করে এসেছে। যদিও ওই অংশগুলি সর্বাংশে ভারতেরই।
কিন্তু চীন সেকথা মানতে নারাজ। নিয়ম করে আকাশপথে প্রতি বছর এই এলাকাগুলির সংলগ্ন জনবসতিতে চীনের লালফৌজ চকোলেট, বিস্কুট ইত্যাদি এয়ারড্রপিং করে। অর্থাৎ চীন প্রমাণ করতে চায় যে, এই গোটা এলাকাটাই আসলে তাদের অংশ। এর আগে একাধিকবার অরুণাচল প্রদেশের বিজেপি এমপি তাপির গাও জানিয়েছিলেন, অরুণাচল প্রদেশের সুবানসিরি জেলায় বহুলাংশে ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার ঢুকে পড়েছে। শুধুই যে গ্রাম ও তাঁবু নির্মাণ করছে তাই নয়, তারা রাস্তা ও পরিকাঠামো নির্মাণও করছে। অন্যদিকে, চীন গত বছরের অক্টোবর মাসে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে ভারত লাদাখের বিস্তীর্ণ অংশে পরিকাঠামো নির্মাণ করে চলেছে। বস্তুত ভারতের বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন এবং সেনাবাহিনী বেশ কিছু বছর ধরেই লে ও লাদাখের অগম্য স্থানগুলিতে সড়ক নির্মাণ করেছে। তৈরি হয়েছে বেশ কিছু সেতু। এটাই চীনের গাত্রদাহ। বেশ কয়েকবার বলা সত্ত্বেও ভারত জানিয়ে দিয়েছে, লাদাখ থেকে অরুণাচল প্রদেশ, দেশের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সুতরাং ভারত অবশ্যই পরিকাঠামো নির্মাণ করে যাবে। পূর্ব লাদাখে চীনের সেনার অনুপ্রবেশের পর সংঘাত চলছে ভারতের সঙ্গে। এবার সেই টানাপোড়েনের মধ্যেই অরুণাচল প্রদেশেও হাত বাড়ানোর চেষ্টা করছে চীন। গোটা বিষয়টির দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা মনে করছে চীনের লক্ষ্য অনেক দূরগামী। তারা চাইছে চিকেন নেক হিসেবে পরিচিত শিলিগুড়ি করিডরে প্রভাব বিস্তার করবে আগামীদিনে। তাই লাদাখ থেকে সিকিম পর্যন্ত মোতায়েন করা সেনা সরাতে রাজি নয় ভারত।