সুন্দরবন ভ্রমণে বোট ও লঞ্চ চলাচলে বিধি লাগু
সুন্দরবন ভ্রমণে বোট, লঞ্চ চলাচলের উপর কড়া বিধি লাগু করার সিদ্ধান্ত নিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা আঞ্চলিক বনবিভাগ। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকলে, বা নৌকায় যদি প্লাস্টিক জাতীয় কিছু থাকে, অথবা সাউন্ড বক্স-ডিজে ব্যবহার করা হয়, তাহলে ম্যানগ্রোভ (Mangrove) অরণ্যের নদীতে ভ্রমণ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার আঞ্চলিক বনকর্তার অফিস থেকে জারি করা এক নির্দেশিকায় একথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ম মানা না হলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। একইরকম বিধিনিষেধ সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের পক্ষেও জারি করা হবে বলে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি পর্যটকদের নৌকায় অগ্নিকাণ্ডের দু’টি পৃথক ঘটনা ঘটে। কোনও ক্ষেত্রেই অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না। এমন ঘটনা এড়াতেই এই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হল বলে মনে করা হচ্ছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা আঞ্চলিক বনবিভাগের এলাকা ঝড়খালি থেকে নামখানা পর্যন্ত বিস্তৃত। আরেকটি দিকে রয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের এলাকা। গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যে দু’টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, তা এই আঞ্চলিক বিভাগের এলাকার মধ্যে অবস্থিত। তারপর থেকেই দাবি ওঠে, পর্যটকদের বোট বা লঞ্চে রান্না করা যাবে না। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলের মধ্যে বৈঠকও হয়। আরও একটি বিষয় হল, পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তেই নদীতে প্লাস্টিক দূষণও বেড়ে গিয়েছে। তা রোধ করার জন্যও বাড়তি পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ডিএফও মিলন মণ্ডল বলেন, নামখানা থেকে বহু পর্যটক এদিকে আসছেন। পরিদর্শনের সময় দেখা যাচ্ছে, অনেকেই প্লাস্টিক ব্যবহার করে নদীতে ফেলে দিচ্ছেন। এতে দূষণ ছড়াচ্ছে। এটি বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ করা দরকার ছিল। যে তিনটি বিধি লাগু করা হয়েছে, সেসব মেনে নদী ভ্রমণ করার জন্য আগাম অনুমতি নিতে হবে বোট মালিকদের। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধিকর্তা তাপস দাসের বক্তব্য, এই নিয়ম গোটা সুন্দরবনের (Sundarbans) জন্য লাগু হবে। সেক্ষেত্রে আমাদের এলাকাতেও যাতে এসব মানা হয়, তার জন্য একটি নির্দেশিকা জারি করা হবে।
নিয়ম লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে জরিমানা করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। সেক্ষেত্রে বনবিভাগের কর্তারা বড়সড় টাকা জরিমানা করতে পারেন বলেই জানা গিয়েছে। এই বিধি মানার দায়িত্ব পর্যটকদেরও। তাঁরা যদি লুকিয়ে প্লাস্টিক আনেন এবং বনবিভাগের আধিকারিকরা ধরতে পারেন, তাহলে তাঁদেরও জরিমানার কবলে পড়তে হতে পারে। বোট মালিকদের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে বোটের লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে। এ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রচার করা হবে বলে জানিয়েছেন মিলনবাবু। প্রত্যেকেই যাতে এ নিয়ে অবহিত হতে পারেন, তার জন্য ব্যানার-পোস্টার সহকারেও প্রচার হবে।