হিন্দু দেবীর পুজো করে মুসলমান পরিবার – সম্ভব এই বাংলায়
ধর্মীয় মেরুকরণ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা আমাদের দেশে নতুন নয়। এই পরিস্থিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অন্য ছবি ধরা পড়ল বর্ধমানে। হিন্দুদের আরাধ্যা দেবীর পুজো এক মুসলমান বাড়িতে। এবং এই পুজোকে ঘিরে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে এক হয়ে গেলেন।
প্রায় ২৫০ বছর ধরে এই রীতিই চলে আসছে বর্ধমানের কয়রাপুর ও আমুনা গ্রামে। এই গ্রামের আর একটি বিশেষত্ব হল, এখানে অন্য কোনও মূর্তি পুজো হয় না। এমনকি দুর্গা পুজোও হয় না। কষ্টি পাথরের তৈরক্ষতারিণী অষ্টভুজা দেবী। গ্রামের মন্দিরেই অধিষ্ঠাত্রী তিনি।
কথিত আছে, কয়রাপুর গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন নামে এক মুসলিম ব্যক্তি এক সময়ে আর্থিক অনটনে পড়েছিলেন। সেই জয়নাল আবেদিনের মাকে দেবী ছদ্মবেশে দেখা দেন। বলেন, দেবীকে পুজো করলে তাঁদের সমস্ত অভাব দূর হবে।
আদেশ অনুযায়ী এরপর দেবীকে পুজো করলে সত্যিই ওই পরিবারের অভাব দূর হয়ে যায়। দেবীর এই মাহাত্ম্য চারিদিকে ছড়িয়ে পরে। তারপর থেকেই চৈত্র মাসে বাসন্তী পুজোর সময় দেবীকে নিয়ে যাওয়া হয় আবেদিন পরিবারে। সেখানে প্রথমে দেবীর পুজো হয়। তারপর দেবীকে নিয়ে সারা গ্রামে বাদ্যযন্ত্র সহকারে ঘোরানো হয়।
এরপর দেবীকে মন্দিরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে চলে পূজার্চনা। আর এই পুজো হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষই অংশ নেন। সেই রীতি এখনও চলে আসছে। মানুষের বিশ্বাস, দেবী সকলের মনস্কামনা পূর্ণ করেন। তাই আশপাশের এলাকা থেকে মানুষ এসে মন্দিরে ভিড় করেন। শুধু তাই নয়, বাইরে থেকেও ভক্তরা আসেন। সাত দিন ধরে চলে মেলা এবং উৎসব।