রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

রাজ্যের প্রায় অর্ধেক করোনা হাসপাতালই রোগীশূন্য

January 20, 2021 | 2 min read

রাজ্যে বেয়াড়া কোভিডের কী দম ফুরিয়েছে? বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বিশেষজ্ঞরা অন্তত বলছেন—এই অদৃশ্য শত্রুর শক্তি এখন প্রায় তলানিতে। পরিসংখ্যানও বলছে, রাজ্যের ১০১টি কোভিড হাসপাতালের মধ্যে প্রায় অর্ধেক হাসপাতালে একজনও রোগী নেই! ২৭টি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এক থেকে পাঁচজন রোগী। সবমিলিয়ে ৯২ শতাংশের বেশি শয্যাই খালি। অন্যদিকে, করোনার চিকিৎসা করা বেসরকারি হাসপাতালগুলির ৭০ শতাংশেরও বেশি বেড খালি। স্বস্তি দিচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হারও। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আসার আশঙ্কা একরকম নেই বলেও মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

কোভিডের মোকাবিলা নিয়ে কম সমালোচনা শুনতে হয়নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)। সরকারের ভূমিকাকে তুলোধোনা করতে বিরোধীরা সর্বদাই খড়্গহস্ত। তবে বর্তমান পরিস্থিতি যা, তাতে কোভিড-যুদ্ধে বোধহয় শেষ হাসিটাই হাসতে চলেছেন মমতা। উল্লেখযোগ্য হারে কমছে করোনায় মৃত্যুর হার। তথ্য বলছে, ১১ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা সাতদিনে রোজ মৃত্যুর সংখ্যা ১৯ থেকে কমে হয়েছে ১২। আক্রান্তের লেখচিত্রও পাল্লা দিয়ে নিম্নমুখী। আলিপুরদুয়ার (৩৮), কালিম্পং (৩৬), দক্ষিণ দিনাজপুর (৩৯) এবং ঝাড়গ্রাম (৩৬)—এই চার জেলায় প্রায় ধারাবাহিকভাবে রোজকার আক্রান্তের সংখ্যা পঞ্চাশেরও নিচে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী না হয়েও বলতে পারি, দিনদিন পরিস্থিতির আরও উন্নতি হচ্ছে। আমাদের ধারণা, করোনার সেকেন্ড ওয়েভ পশ্চিমবঙ্গে আর আসবে না।’

স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, রাজ্যের ১০১টি কোভিড হাসপাতালের (Covid Hospital) মোট শয্যাসংখ্যা ১২ হাজার ৪৪০টি। ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত পাওয়া হিসেব অনুযায়ী খালি রয়েছে ১১ হাজার ৪৮৭টি শয্যা। করোনা রোগী ভর্তি নেওয়া হয় কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনা মিলিয়ে ৬৩টি বেসরকারি হাসপাতালের মোট ৩ হাজার ৬৩টি কোভিড শয্যা রয়েছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশেরও বেশি শয্যাই ফাঁকা! সবশুদ্ধ ৪৮টি কোভিড হাসপাতালের একটি বেডেও রোগী নেই। এছাড়া বহু বড়-ছোট-মাঝারি করোনা হাসপাতালে রোগী রয়েছেন নামমাত্র।

যেমন, রাজারহাটের (Rajarhat) চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে ৪২৫ শয্যার করোনা হাসপাতালে ফাঁকাই রয়েছে ৪১০টি বেড। জোকা ইএসআই হাসপাতালের ৪৭০টি শয্যার মধ্যে ৪৬৩টি, ইএসআই ব্যান্ডেলের ২৫০টির মধ্যে ২৪২টি, ইএসআই বালটিকুরিতে ৪০০টির মধ্যে ৩৯১টি শয্যা ফাঁকা এবং উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালেও ২১৬টি শয্যার মধ্যে ভর্তি রয়েছেন মাত্র দু’জন রোগী। এদিকে, মালদহের ট্রমা সেন্টারে দেড়শো’টি বেডের মধ্যে ভর্তি মাত্র তিনজন। হাওড়ার ওল্ড মাতৃ সদনের ৩০০টি বেডে রোগীর সংখ্যাও চারজন! সবমিলিয়ে এমন ২৪টি হাসপাতালে রোগী রয়েছে হাতেগোনা। তা সত্ত্বেও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলির এত শয্যা আটকে রাখা হয়েছে কেন? দপ্তরের বিশেষজ্ঞ কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘আমরা আরও কিছুদিন দেখতে চাইছি। বিশেষত ইউরোপ ও আমেরিকার যা পরিস্থিতি, তাতে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হওয়ার জো নেই। তাছাড়া যেভাবে কাতারে কাতারে মানুষ মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আমাদের অতিরিক্ত সাবধানতা নিতে হবেই।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #covid19, #covid 19 hospitals

আরো দেখুন