পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া টাকা চেয়ে নির্মলাকে চিঠি অমিত মিত্রের
পশ্চিমবঙ্গের(West Bengal) বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিন। বাজেটের প্রাক্কালে কেন্দ্রকে পত্রাঘাত রাজ্যের। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র(Dr Amit Mitra) কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে(Nirmala Sitharaman) কড়া চিঠি লিখে বলেছেন, বাজেটে অনেক কিছুই ঘোষণা করা হবে। কিন্তু রাজ্যের যা প্রাপ্য তার অনেক কিছু এখনও কেন্দ্র মেটাচ্ছে না। চার পৃষ্ঠার চিঠিতে অমিত মিত্র বিস্তারিত তালিকা দিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে বলেছেন, কোভিড(COVID 19) ও লকডাউনের(Lockdown) আবহে একদিকে রাজ্যের রাজস্ব আদায় কমেছে, তার সঙ্গে কেন্দ্রীয় বঞ্চনারও শিকার হতে হচ্ছে।
অমিত মিত্র লিখেছেন, কোভিড সঙ্কটের মোকাবিলায় রাজ্য সরকার এ পর্যন্ত ৪ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে পাওয়া গিয়েছে মাত্র ২৭৯ কোটি টাকা। একদিকে কেন্দ্রীয় সরকার মুখে বলেছে, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত রাজ্য কোভিড যুদ্ধে ব্যয় করতে পারে। অথচ কেন্দ্র সেই বরাদ্দটাই বৃদ্ধি করেনি। মাত্র ১১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কোভিড মোকাবিলায় রাজ্যের এই আর্থিক বছরে অন্তত ১১৩৮৭ কোটি টাকা দরকার। ২০২০ সালের মে মাসে সাইক্লোন উমপুন আছড়ে পড়েছিল রাজ্যে। লক্ষ লক্ষ মানুষের সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাণহানিও ঘটেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্য সরকার ৩৫ হাজার কোটি টাকার একটি বরাদ্দ চেয়ে পাঠিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র এ পর্যন্ত দিয়েছে মাত্র ২২৫০ কোটি টাকা।
অমিত মিত্র কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে চিঠিতে বলেছেন, ২০২০-২১ আর্থিক বছরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার থেকে রাজ্যের অংশ হিসেবে করবাবদ পাওয়ার কথা ৫৮৯৬২ কোটি টাকা। অথচ এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমায় পাওয়া গিয়েছে মাত্র ২৭৯৪৩ কোটি টাকা। এখানেই শেষ নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের তাবৎ প্রকল্পের জন্য যে টাকা রাজ্যকে দেওয়ার কথা তার প্রত্যেক ক্ষেত্রেই অর্থ বকেয়া হয়ে রয়েছে। সর্বশিক্ষা অভিযান, মিড ডে মিল, স্বচ্ছ ভারত অভিযান, ১০০ দিনের কাজের গ্যারান্টি, ব্যাকওয়ার্ড রিজিওন গ্র্যান্ট ফান্ড, সেচ প্রকল্প সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য যে টাকা রাজ্যের প্রাপ্য তার পরিমাণ ৩২৪৯৪ কোটি টাকা। অমিত মিত্র নির্মলা সীতারামনকে চিঠিতে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়েছেন। অথচ কোনও লাভ হয়নি।
পাশাপাশি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাঠামোগত পরিবর্তন করার ফলেও বরাদ্দ কমে গিয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্য যে অনুপাতে কোনও প্রকল্পের জন্য টাকা বরাদ্দ করত, সেই অনুপাত বদলে দিয়ে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। জিএসটি ক্ষতিপূরণ নিয়ে কেন্দ্রকে বারংবার বলা সত্ত্বেও তারা ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলেও সেই ঋণ রাজ্যের ঘাড়েই পাঠিয়ে দিয়েছে। অমিত মিত্র কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদেরও এই চিঠির প্রতিলিপি দিয়েছেন এবং দাবি করেছেন অবিলম্বে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা হোক।