পিপিই নেই, করোনা মোকাবিলায় নিধিরাম সর্দার ভারতের ডাক্তাররা
অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২২৭ জন। চলতি সপ্তাহের শেষে দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।
পরিস্থিতি সামলাতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে পর্যাপ্ত ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবে কিছু চিকিৎসক রেনকোট এবং মোটরবাইকের হেলেমেট পরেই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। ভারতে করোনার সর্বোচ্চ প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার আগেই চিকিৎসকদের এই সুরক্ষা সামগ্রীর ঘাটতি দেশের দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরেছে।
এদিকে, সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ঘাটতি পূরণের জন্য ভারত স্থানীয়ভাবে এবং চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) সংগ্রহের চেষ্টা করছে। দেশে যখন পিপিই অপ্রতুল, সেই সময় ভারত থেকে সার্বিয়াতে পিপিই রপ্তানি করা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন এমন এক ডজনেরও বেশি চিকিৎসক রয়টার্সকে বলেছেন, পর্যাপ্ত মুখোশ এবং পিপিই ছাড়া চিকিৎসা দেয়ায় তারা উদ্বিগ্ন। এমনকি এই ভাইরাসের বাহকও হতে পারেন তারা।
বেলঘাটা হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, আমরা আমাদের জীবনের বিনিময়ে কাজ করবো না। কর্তৃপক্ষ প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে এমন আশঙ্কায় নাম প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্তাবধায়ক ডা. আশীষ মান্না মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অন্যদিকে, রাজধানী নয়াদিল্লির উত্তরাঞ্চলের হরিয়ানা প্রদেশের ইএসআই হাসপাতালের চিকিৎসক সন্দ্বীপ গর্গ বলেন, এন৯৫ মাস্ক না থাকায় তিনি মোটরবাইকের হেলমেট পরে রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি একটি হেলমেট পরেছিলাম। এর সামনে একটি মুখাবরণ রয়েছে; যা আমার মুখ ঢেকে রাখে। এর পাশাপাশি তিনি সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করেন।
রয়টার্স এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রক তাৎক্ষণিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নয়াদিল্লির ফেডারেল সরকারের এক কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা এখন শুধুমাত্র প্রার্থনা করে বেঁচে আছি। এটা এমন নয় যে, আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে আমরা বাঁচতে পারবো।
হরিয়ানার রোহতকের একটি সরকারি হাসপাতালে বেশ কয়েকজ জুনিয়র চিকিৎসক করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। যথাযথ সুরক্ষা সামগ্রী না পাওয়া পর্যন্ত তারা রোগীদের সেবা দেবেন না বলে জানিয়েছেন।
রোহতকের একজন চিকিৎসক বলেন, তারা সবাই মিলে কোভিড-১৯ নামে একটি বেসরকারি তহবিল গঠন করেছেন। এই তহবিলে প্রত্যেক চিকিৎসক মাস্ক এবং অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী কেনার জন্য এক হাজার রুপি করে সহায়তা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, প্রত্যেকেই ভীত। সুরক্ষা ছাড়া কেউই কাজ করতে চান না।
(তথ্যসূত্র: রয়টার্স)