এবার তৈরি হবে কলকাতায় ট্রামলাইনের মানচিত্র
লন্ডনের টিউব রেলের কায়দায় এবার কলকাতার ট্রামগুলি বিশেষ ‘কালার কোডে’ সাজতে চলেছে। শহরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এই পরিবেশবান্ধব যানের জয়প্রিয়তা বাড়াতে সম্প্রতি এই উদ্যোগ নিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (ডব্লুবিটিসি)। সংস্থার দাবি, ট্রামের মাথায় নির্দিষ্ট রং দিয়ে চিহ্নিত করা হবে। একইসঙ্গে নির্দিষ্ট রুটের ট্রামগুলিতে থাকবে আলাদা রঙের সাঙ্কেতিক চিহ্ন। যার মাধ্যমে যাত্রীরা সহজেই নিজের নিজের রুটের ট্রামকে চিহ্নিত করতে পারবেন। প্রসঙ্গত, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে কলকাতার ট্রাম কার্যত উপেক্ষিত। পরিবহণ দপ্তরের এই নয়া ভাবনায় ট্রামের বহিরঙ্গের অঙ্গসজ্জায় নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে মনে করছেন বিভাগীয় কর্তারা। মূলত ছ’টি ভিন্ন রঙের কোডে সাজতে চলেছে এই ঐতিহাসিক যান।
টালিগঞ্জ থেকে বালিগঞ্জ রুটের ট্রামের মাথায় যে সাঙ্কেতিক চিহ্ন দেওয়া থাকবে, তার রং হবে গোলাপি। একই রঙের চিহ্ন নিয়ে ২৪ এবং ২৯ নম্বর রুটের ট্রামগুলি দক্ষিণ কলকাতাকে প্রতিনিধিত্ব করবে। ২৫ নম্বর রুট অর্থাৎ গড়িয়াহাট থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত এই যাত্রাপথটি সাজবে হলুদ রংয়ের কোডে। লাল রঙে সাজবে বইপাড়ায় ট্রাম রুটগুলি। একইসঙ্গে বেগুনি রঙে সাজতে চলেছে ১৮ নম্বর রুট। হাওড়া ব্রিজ থেকে রাজাবাজার ট্রাম ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত এই রুট। আবার হাওড়া ব্রিজ থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত ১১ নম্বর ট্রাম সাজতে চলেছে সবুজ রঙে। ধর্মতলা থেকে খিদিরপুর পর্যন্ত ট্রাম রুটটি উম-পুনের কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বর্তমানে এই রুটে ট্রাম পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। সংস্কার কাজ শেষে রুটটি চালু হলে তা সাজবে নীল রঙে। এ প্রসঙ্গে ডব্লুবিটিসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর রজনবীর সিং কাপুর বলেন, ১৪০ বছরের ইতিহাসে ট্রাম রুটের কোনও মানচিত্র ছিল না। আগামিদিনে নির্দিষ্ট রুটের ট্রামের মাথায় সুনির্দিষ্ট রং থাকবে। পাশাপাশি যাত্রীদের সুবিধার জন্য ট্রামের ভিতরে, ডিপোয় ও বিভিন্ন জায়গায় এই মানচিত্র প্রদর্শিত হবে। যা শহরের ট্রাম পরিষেবায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে বলে দাবি করেন কাপুর।
ইতিমধ্যেই ডব্লুবিটিসি ট্রাম, বাস ও ফেরির জন্য অভিন্ন পাস চালু করেছে। ১০০ টাকায় একজন যাত্রী সারাদিনে যতবার খুশি এই তিন ধরনের যান ব্যবহার করতে পারবেন। কর্তাদের আশা, নতুন সাজে ট্রাম পথে নামলে যাত্রী সংখ্যা আরও বাড়বে।