ভোট মিটতেই হবে বইমেলা, উদ্যোগী গিল্ড
বইপ্রেমীদের জন্য সুখবর। বিধানসভা ভোট মিটতেই জুন মাসের শেষ অথবা জুলাইয়ের শুরুতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ৪৫তম কলকাতা বইমেলা (International Kolkata Book Fair)। পাবলিশার্স ও বুকসেলার্স গিল্ডের পক্ষ থেকে এই সময় ডিজিটালকে এমনটাই জানানো হয়েছে। তবে করোনাকালে বইমেলা হবে একটু অন্যরকম। গিল্ডের ভাবনায় এবছর থাকছে কিছু অভিনবত্ব।
কোভিড পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার আয়োজন নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল তা অনেকটাই কেটে গিয়েছে। এমনটাই মনে করছে গিল্ড কর্তৃপক্ষ। বইমেলার উদ্যোক্তা গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বইমেলা হবেই। নির্বাচনের পর জুন মাসের শেষ অথবা জুলাই মাসের শুরুতেই আমরা বইমেলার আয়োজন করব।’ তাঁর কথায়, ‘ইতিমধ্যেই করোনার টিকা এসে গিয়েছে। আশা করি জুন মাসের মধ্যে সংক্রমণ আরও কমে যাবে। পরিস্থিতি ততদিনে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’
জুন-জুলাই অর্থাৎ রাজ্যে তখন সক্রিয় থাকবে বর্ষা। তবে কী ভরা বর্ষায় ছাতা মাথায় দিয়ে সেন্ট্রাল পার্কের জমা জল ঠেঙিয়ে পৌঁছতে হবে পছন্দের বুক স্টলে? জবাবে ত্রিদিববাবু বলেন, ‘বিদেশের বইমেলার ধাঁচে এবারের কলকাতা বইমেলা করব আমরা। থাকবে এসি হ্যাঙার। সেখানেই সমস্ত বুকস্টলগুলি থাকবে। ফলে বৃষ্টি কিংবা রোদে বইপ্রেমীদের কোনও সমস্যা হবে না।’
কী এই এসি হ্যাঙার? গিল্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, আন্তর্জাতির স্তরে বিশেষত আমেরিকা, ইউরোপে বইমেলায় আয়োজনে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অস্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি করা হয়। গিল্ড কর্তার কথায়, ‘কলকাতাতেই একমাত্র খোলা মাঠে বইমেলা হয়। কিন্তু, এ বছরের জন্য আমরা পাশ্চাত্যের অনুকরণে কলকাতাতেও এসি হ্যাঙারের মধ্য়ে বইমেলা করব।’ প্রতিবছর ইংরেজি প্রকাশনীর স্টলগুলির জন্য দুই থেকে তিনটি এসি হ্যাঙার থাকে। গিল্ড সূত্রে খবর, এবারে পুরো মাঠ জুড়েই তৈরি করা হবে এই ধরনের হ্যাঙার। তবে বইমেলায় আসা জনতাকে কড়া কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে। বেচাল দেখলেই নেওয়া হবে ব্যবস্থা।
অন্যদিকে, বইমেলা ঠিক কোন সময় হওয়া উচিত? কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বইমেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যাবে, তা নিয়ে এবার বইপ্রেমীদের দ্বারস্থ হতে চলেছে গিল্ড। সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু দে বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে বইমেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় আমরা সল্টলেকের বাসিন্দাদের মধ্যে একটি সমীক্ষা করেছিলাম। কিন্তু, সেই সময় তাঁরা মেলা আয়োজনের পক্ষপাতি ছিলেন না। বিষয়টিকে মাথায় রেখে অভিনব পন্থা অবলম্বন করতে চলেছি। ফেব্রুয়ারি মাসে হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেইল এবং ফোনের মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষের মতামত নেওয়ার চেষ্টা করব।’ গিল্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, মানুষের কাছে ওপেন ফোরামে প্রশ্ন রাখা হবে, কোন সময় বইমেলা হলে সুবিধা হয়? ঠিক কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে? কোভিডোত্তর পরিস্থিতিতে বইমেলা কেমন হতে পারে? বইপ্রেমীদের জবাব মেলা আয়োজনে তাঁদের সহায়তা করবে বলেই মনে করছেন সুধাংশুবাবু।