বিজেপি সন্ত্রাসের রাজনীতি করছেঃ তৃণমূল
‘প্রথমে সিএএ আন্দোলন, এখন কৃষক আন্দোলন (Farmers Protest) রুখতে সন্ত্রাসের রাজনীতি করছে বিজেপি’ (BJP)। এভাবেই দিল্লির সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) সাংসদ সৌগত রায় (Saugata Roy)। সোমবারের রাজ্যসভায় রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা, শুরুতেই কৃষকদের প্রতি কেন্দ্রের আচরণের প্রতিবাদে বিরোধী সাংসদরা বয়কট করেন। সে বিষয়ে সাংসদ বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার দেশবাসীর বাকস্বাধীনতার অধিকারকে হনন করছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের মূল সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলছেন না। উনি বলেছিলেন ২ কোটি চাকরি দেবেন। তার পরিবর্তে বিগত ৪৫ বছরে দেশে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ’।
তিনি আরো বলেন, ‘অতিমারীর সময় যখন সারা দেশে প্রায় ১ কোটি চাকরি গেছে, তখন বাংলায় ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমেছে। নোট বন্দীর সময় মোদীজি দেশবাসীর কাছে ৫০ দিন চেয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র বলেছিলেন এই ক্ষতি অপূরণীয়। পরে সেই কথাই প্রমাণিত হয়’।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতাকে উদ্ধৃত করে সাংসদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলছেন, বাংলায় কৃষকরা অবহেলিত। কিন্তু আসলে কৃষক বন্ধু (Krishak Bondhu) প্রকল্পে রাজ্য সরকার প্রতি কৃষককে পাঁচ হাজার টাকা করে দেয়। যেখানে পিএম কিষান যোজনায় কৃষকরা মাত্র ১২১৪ টাকা করে পায়। রাজ্য সব কৃষকদের সুবিধা দেয়। কেন্দ্র শুধুমাত্র ছোট এবং প্রান্তিক কৃষকদের এই সুবিধা দিয়ে থাকে। কোন কৃষক মারা গেলে রাজ্য সরকার তাঁর পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা দেয়। কেন্দ্রের প্রকল্পে এরকম কোন ব্যবস্থা নেই। ২০১৮- ১৯ এ কৃষক বন্ধু প্রকল্প শুরু হওয়ার প্রথম আট মাসেই ৯৪ শতাংশ কৃষক এই সুবিধা পায়। পিএম কিষাণে ৪৮ শতাংশ কৃষক আজও এই সুবিধা পায় নি’।
কেন্দ্রের সাথে রাজ্যের তুলনা টেনে তিনি বলেন, ‘রাজ্য সরকারের ফসল বিমায় পুরো প্রিমিয়াম রাজ্যই দেয়। প্রধানমন্ত্রীর ফসল বিমায় কৃষকদেরও প্রিমিয়াম দিতে হয়। রাজ্যে কৃষকদের আয় ৩ গুণ হয়েছে। ২০১১ সালে যা ছিল ৯০,০০০ টাকা, এখন তা বেড়ে ২ লক্ষ ৯০ হাজার হয়েছে’।
কেন্দ্রের রাজ্যকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তুলে সৌগত বাবু বলেন, ‘বাংলাই দেশের মধ্যে প্রধান চাল উৎপাদককারী রাজ্য। রাজ্য কেন্দ্রকে ৬ লাখ মেট্রিকটন চাল কেনার অনুরোধ করেছিল। কেন্দ্র মাত্র ৭৬, ০০০ মেট্রিকটন কিনেছে। কম চাল উৎপাদককারী রাজ্য থেকে বেশি কেনা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ থেকে ৭১ লক্ষ মেট্রিকটন, হরিয়ানা থেকে ৬৪ লক্ষ, ছত্রিশগড়ে ৭৪ লক্ষ, তেলেঙ্গানায় ১১১ লক্ষ। বাংলার কৃষকদের এখন পর্যন্ত কোন ফসল বীমা দেয়নি কেন্দ্র’।
প্রধানমন্ত্রীর এদিনের বক্তৃতায় মূল বিষয়গুলিকে এড়িয়ে যাওয়াকে কটাক্ষ করে সৌগতবাবু বলেন, ‘কেন লকডাউন ঘোষণা করতে দেরী হল, লকডাউন কার্যকর হতে কেন সময় দেওয়া হল না যার কারণে গোটা দেশের পরিযায়ী শ্রমিকরা বিপদে পড়লেন, সে বিষয়ে কোন সদুত্তর দেননি প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায়। ভারত বায়োটেকের ভ্যাক্সিন নিয়ে দেশবাসীর সন্দেহকেও বিন্দুমাত্র নিরসনের চেষ্টা করেননি প্রধানমন্ত্রী। সবাই কবে ভ্যাক্সিন পাবেন তাও এখনো অবধি জানানো হয়নি’।