নতুন ভোটারদের স্বাগত জানাতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে তৃণমূল কর্মীরা
বিধানসভা ভোটের (West Bengal Assembly Election 2021) আগে জনসংযোগে বিন্দুমাত্র খামতি রাখতে চায় না তৃণমূল (Trinamool)। বীরভূম জেলাজুড়ে নতুন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে শাসকদল। পাশাপাশি সেই পরিবারকেও রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্পের কথা তুলে ধরে প্রচার করছে অনুব্রত বাহিনী। ইতিমধ্যেই সাঁইথিয়ার বিধায়ক নীলাবতী সাহা নিজের এলাকার নতুন ভোটারদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। কার্ডে লেখা একটি শুভেচ্ছাবার্তাও দিচ্ছেন।
গত ১জানুয়ারি পর্যন্ত এবার বীরভূম (Birbhum) জেলায় ৮৬হাজার ৬৩৮ জন নতুন ভোটার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আবার নতুন মহিলা ভোটারের সংখ্যা বেশি। ৪৭হাজার ৭৭৮জন মহিলা ভোটার ও ৩৮হাজার ৮৫৩জন নতুন পুরুষ ভোটার হয়েছেন। অন্যান্য রয়েছেন সাতজন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই সমস্ত নতুন ভোটারকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলে ভোট দেওয়ার আর্জি জানিয়ে শুভেচ্ছা কার্ড দিচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্ব। উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে জেলার বেশকিছু বিধানসভা এলাকায় বিজেপির (BJP) উত্থান হয়েছিল। কিছু এলাকায় তৃণমূলের চেয়ে বিজেপি ভোটও বেশি পেয়েছিল। বিজেপির পাওয়া এই ভোটে নতুন প্রজন্মের ভোটারদের বড় ভূমিকা ছিল। বেকারত্ব, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ, সরকারি ক্ষেত্রে নিয়োগ বন্ধ প্রভৃতি নানা অভিযোগ তুলে বিজেপি নতুন ভোটারদের নিজের দিকে টানতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু দু’বছর কেটে যাওয়ার পর এবার নতুন ভোটারদের জন্য রাজ্য সরকার যেসব সুযোগ-সুবিধা এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে সেই সবকিছুকে প্রচারের মাধ্যমে তুলে ধরছে শাসকদল। নতুন ভোটারদের নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলাজুড়েই বিভিন্ন এলাকার দলের নেতারা নতুন ভোটারদের কখনও নিজের পার্টি অফিসে ডেকে অথবা তাঁদের বাড়ি পৌঁছে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। সেইসঙ্গে তাঁদের ভোটদানে উৎসাহী করছেন। সাঁইথিয়ার বিধায়কও নতুন ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা চালাচ্ছেন। দলীয় নেতৃত্ব সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধায়ক নীলাবতীদেবী নিজের বিধানসভা এলাকায় নতুন ভোটারদের কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। ওই কার্ডে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সর্বদাই নতুন ভোটারদের ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকবেন আগামী দিনে, এই বার্তাই দিচ্ছেন তৃণমূল বিধায়ক। গণতন্ত্রের এই উৎসবে শামিল হওয়ার জন্য পরবর্তী নতুন প্রজন্মকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের পাশে থাকার আশ্বাসও দিচ্ছেন।
ভোটাধিকার পাওয়ার পর এভাবে কোনও রাজনৈতিক দলের তরফে শুভেচ্ছা বার্তা পেয়ে খুশি নতুন ভোটাররাও। সাঁইথিয়া শহরের বাসিন্দা সুপ্রতিম বিশ্বাস বলেন, আমি রাজনীতি বুঝি না। ভালো করে পড়াশোনা করলে একটা ভালো চাকরি পাব। আমাদের সরকার যদি আমাদের জন্য সেই পরিকাঠামো তৈরি করে দেয় তাহলে আমাদের আর কিছু চাই না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে সবরকমভাবে সাহায্য করেছেন। উনি আগামী দিনেও মুখ্যমন্ত্রী থাকলে আমাদের চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রেও কোনও অসুবিধা হবে না আশা করছি।
বিধায়ক নীলাবতী সাহা বলেন, নতুন ভোটাররা সেভাবে রাজনীতি বোঝেন না। তবে তাঁরা সাবালক হলেন। তাঁদের বয়স যখন ১৮ পেরল, ভালো-মন্দ বোঝার ক্ষমতা কিছুটা হয়েছে। তাঁদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এতদিন কী করেছেন এবং আবার আগামী দিনে মুখ্যমন্ত্রী থাকলে কী করবেন সেটা তাঁরা ভালোই বোঝেন। গণতন্ত্রের এই বৃহত্তম উৎসবে শামিল হওয়ার জন্য আমরা তাঁদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আশা করি তাঁরা আমাদের প্রতি আস্থা রাখবেন।