রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

নাড্ডার সভায় লোক হল না কেন? বিজেপিতে অন্তর্কলহ

February 11, 2021 | 2 min read

লোক না হওয়ায় মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার (JP Nadda) সভা বাতিল হওয়ার ঘটনায় বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে চাপান-উতোর। ওই দিন রাতেই দলের জেলা কার্যালয়ে আলোচনায় বসে নেতৃত্ব। আলোচনায় কয়েকজন বলেন, লালগড়ের সভায় জমায়েত যথেষ্ট কম হয়েছে। ঝাড়গ্রামের সভা ভণ্ডুল হওয়াও মেনে নেওয়া যায় না। যেখানে গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থে‌কে লোকসভা ভোট পর্যন্ত জেলায় বিজেপি ভালো ফল করেছে, সেখানে এই ঘটনা অপ্রত্যাশিত বলেই মনে করছেন দলের অনেক নেতা-কর্মী। যদিও এনিয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে চাননি।

প্রসঙ্গত, ওই দিন লালগড়ের ভিলেজ মাঠের সভার পর ঝাড়গ্রামের রানি বিনোদমঞ্জুরী স্কুলের সামনে একটি সভায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার। ওই সভার জন্য মাইকে ঘোষণাও করা হয়েছিল। ওই দিন সকাল থেকেই ঝাড়গ্রামের মঞ্চ থেকে টানা মাইকিং করে বিজেপি (BJP)। কিন্তু, সভাস্থলে লোকজন না থাকায় নাড্ডা মঞ্চে ওঠেননি। কিছুক্ষণ দলীয় কার্যালয়ে কাটিয়েই খড়্গপুরে চলে যান। এনিয়ে জেলা বিজেপির অন্দরে শোরগোল পড়ে যায়। নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহের মতোই ধারে-ভারে একই সারিতে রয়েছেন নাড্ডাজি। তিনি দলের সর্বভারতীয় সভাপতি। তাঁর সভায় যেখানে উপচে পড়া ভিড় হওয়ার কথা, সেখানে উল্টো ছবি ধরা পড়েছে। কার্যত ফাঁকা মাঠে পরিবর্তন যাত্রার সভা শেষ করতে হয়েছে। তা নিয়ে চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন বিজেপি নেতারা। রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চর্চা, তাহলে কি এলাকাবাসীর মন থেকে গেরুয়া রং ফিকে হতে শুরু করেছে?

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, জঙ্গলমহলের কেন্দ্রবিন্দু ঝাড়গ্রাম এলাকা আদিবাসী অধ্যুষিত। তাঁদের ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম নিজস্ব। ভিনসংস্কৃতির প্রতি তাঁদের তেমন আগ্রহ নেই। ফলে রথযাত্রার (Rath Yatra) বিষয়টিও তাঁরা মন থেকে মেনে নিতে পারেননি।

জেলা বিজেপি অবশ্য এই পরিস্থিতির জন্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ তুলছে। তাঁদের বক্তব্য, লালগড় থেকে কর্মী-সমর্থক ও শিল্পীরা আসার সময় গাড়ি আটকে দিয়ে পুলিশ তাঁদের যথা সময়ে ঝাড়গ্রামে আসতে দেয়নি। দলের একাংশের দাবি, ঝাড়গ্রাম কোনও দলীয় সভা ছিল না, ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাত হয়ে যাওয়ায় নাড্ডার নিরাপত্তা রক্ষীরা ঝুঁকি নিতে চাননি। আবার কেউ কেউ বলছেন, নাড্ডার সভা বানচাল করার পিছনে শাসক দলের হাত রয়েছে। সভার দিনই মুণ্ডা সমাজের কয়েক হাজার কর্মী জামদা সার্কাস ময়দানে জমায়েত করে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়। এই ঘটনায় তৃণমূলের ইন্ধন রয়েছে।

বিজেপির জেলা সহ সভাপতি অবনী ঘোষ বলেন, নাড্ডাজি লালগড়ে এক ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছন। ফলে অনেকটা রাত হয়ে গিয়েছিল। ঝাড়গ্রামে আমাদের দলীয় সভা ছিল না। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল। শিল্পীরা লালগড়ে নাড্ডাজির রথযাত্রায় অনুষ্ঠান করেছেন। জঙ্গলমহলের সংস্কৃতি তিনি দেখতে চেয়েছিলেন। শিল্পীদের গাড়িগুলি আসার সময় যানজটে পড়ে। পুলিশ ইচ্ছে করে শিল্পীদের গাড়িগুলি ছাড়েনি। রাত হয়ে যাওয়ায় ঝাড়গ্রামের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।

জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত মাহাত বলেন, লোকজন আমাদের সভায় এসেছিল। সভার আগে ঝিটকার জঙ্গলে আতঙ্ক ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। সভা বানচাল করার জন্য তৃণমূল পরিকল্পিতভাবে এসব করেছে।

তৃণমূলের (Trinamool) জেলা মুখপাত্র তথা প্রাক্তন সাংসদ উমা সোরেন বলেন, জঙ্গলমহলের মানুষ নাড্ডাজির সঙ্গে নেই। ওঁদের আগ্রাসী মনোভাব এখানের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #JP Nadda, #West Bengal Assembly Elections 2021

আরো দেখুন