মা দুর্গা নিয়ে কুকথা, পণ্ডিতদের সমালোচনার ত্রিশূলে বিদ্ধ দিলীপ
রামের পূর্বপুরুষের নাম পাওয়া যায়, দুর্গার পাওয়া যায় কি? শুক্রবার এই প্রশ্ন তুলেই বিতর্কে জড়ান বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh)। শুক্রবার একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যম গোষ্ঠীর আলোচনাচক্রে তৃণমূলের(TMC) সমালোচনা করতে গিয়ে দিলীপ বলেন, “খুব দুর্ভাগ্যের কথা। এমন একটা দল (তৃণমূল) যার কোনও মাথামুন্ডু নেই। কোনও আদর্শ নেই। ধর্মের জায়গায় রাজনীতির কথা বলে। রাজনীতির জায়গায় কথা বলে ধর্ম-জাতপাত নিয়ে। আমরা এমনটা করি না। আমরা খোলাখুলি রাজনীতি করি। ভগবান রাম এক জন রাজা ছিলেন। রামের(RAM) পূর্বপুরুষের নাম পাওয়া যায়, দুর্গার(Ma Durga) পাওয়া যায় কি?”
বাংলার তিন পুরাণবিদ দিলীপের তোলা প্রশ্নকে নস্যাৎ করছেন এক কথায়। সকলেরই বক্তব্য, দুর্গার আর এক পরিচয় তিনি হিমালয়-কন্যা। আবার দক্ষ-কন্যা সতীও দুর্গারই এক রূপ।
বিশিষ্ট দুর্গাবিষয়ক গবেষক নবকুমার ভট্টাচার্য বলেন, দুর্গার পিতৃপরিচয় নেই এমনটা মানা যাবে না। সেই উল্লেখ রয়েছে পুরাণেই। দেবীসূক্তে এমন উল্লেখ আছে যে তিনি আম্ভৃণ ঋষির বাক্রূপী কন্যা।” একই সঙ্গে নবকুমার একটি দুর্গাস্তোত্র উল্লেখ করে বলেন, দেবীপুরাণ অনুযায়ী দেবী হলেন ‘পর্বতরাজপুত্রিম্’। নবকুমার বলেন, “তবে এটাও ঠিক যে দুর্গার পিতৃপরিচয় নানা রকম পাওয়া যায়। তিনি যেমন হিমালয় কন্যা তেমনই দক্ষের কন্যা। তিনি যেমন মা মেনকার সন্তান তেমনই এটাও বলা হয় যে, দুর্গা অযোনিসম্ভবা। তিনি অনেক দেবতার শক্তি নিয়ে জন্ম নেন।
শুনুন সংস্কৃত বিশারদ সর্বভারতীয় প্রাচ্য বিদ্যা আকাদেমির অধ্যক্ষ ডঃ জয়ন্ত কুশারী এর বক্তব্য
গবেষক ও প্রাবন্ধিক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি বলেন, প্রত্যেক দেবতারই বংশ পরিচয় আছে। দুর্গা হিমালয় কন্যা। শিব তাঁকে বিয়ে করেছেন। কার্তিক, গণেশ তাঁর ছেলে। দুই মেয়ে লক্ষ্মী আর সরস্বতী।” রামায়ণ, মহাভারত বিষয়ে গবেষক নৃসিংহপ্রসাদ আরও বলেন, দেবতাকে যাঁরা পণ্য করেছেন তাঁরাই এই সব বলেন। এঁরা কিছুই জানেন না।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সহ সাধারণ সম্পাদক তত্ত্ববিদানন্দ মহারাজ বলেন, দুর্গার বাবা হলেন হিমালয়। তিনি হিমালয় দুহিতা। মনে রাখতে হবে, যিনি পার্বতী, তিনিই দুর্গা। আগমনী গানে দুর্গা যে হিমালয় কন্যা তার ইঙ্গিত রয়েছে।