‘খেলা হবে’ পোস্টারে ছয়লাপ দমদম
ভোট ঘোষণার আগেই জমজমাট রাজ্য রাজনীতি। পথসভা থেকে জনসভা— সর্বত্রই একুশের লড়াইকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে বাকযুদ্ধ। ভোটের হারে টেক্কা দেওয়ার আগেই চলছে একে অপরকে সাবধানবাণী ছুঁড়ে দেওয়ার পালা। আর এই লড়াইয়ের মাঝেই সর্বাধিক চর্চিত স্লোগান ‘খেলা হবে’। নেতা থেকে মন্ত্রী, তৃণমূল থেকে বিজেপি (BJP)— কমবেশি সবার বক্তৃতায় বারবার উঠে আসছে এই দুটি শব্দ। বলা ভালো, একুশের মেগা ব্যাটলের উত্তাপ কয়েকগুণ বেড়েছে স্রেফ এই ‘খেলা হবে’ শব্দ দুটিকে কেন্দ্র করেই। রাজ্যের রাজনৈতিক ময়দানে সর্বাধিক জনপ্রিয় এই স্লোগান বর্তমানে রাজনীতির বেড়া টপকে চলে এসেছে খেলার ময়দানেও। ‘খেলা হবে’ (Khela Hobe) স্লোগান লাগানো পোস্টারে ছেয়েছে গোটা দমদম। শুকুর আলি মোড় হোক বা বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে, দমদমের অলিগলিতে ঢুঁ মারলেই নজর আসবে টুর্নামেন্টের পোস্টার। তাতে বড় বড় হরফে লেখা রাজনীতির ময়দানের এই স্লোগান।
বিধানসভা ভোটে (West Bengal Election 2021) বাজিমাত করতে কোমর বেঁধেছে রাজনৈতিক দলগুলি। প্রচারের শুরু থেকেই রাজনৈতিক বক্তৃতায় ধুমকেতুর মতো উঠে আসে ‘খেলা হবে’ স্লোগান। এরপর তা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে হুমকি বা দেখে নেওয়ার প্রতিশব্দ রূপে। পরে অবশ্য মঞ্চ ছেড়ে পাড়ার রক কিংবা চায়ের আড্ডার জমজমাট চর্চাতেও হানা দিয়েছে এই দুটি শব্দ। কোথাও কোথাও পড়ুয়ারা এই স্লোগানের সঙ্গে তুমুল নাচানাচিও করেছে। এবার পালা খেলার মাঠের। দমদম ক্রীড়া উচ্ছ্বাস সংস্থার উদ্যোগে এবার মানিকপুর ফুটবল টুর্নামেন্টের ট্যাগ লাইন হল ‘খেলা হবে’। কিন্তু রাজনীতির ময়দানের এই স্লোগান হঠাত্ খেলার মাঠে কেন? টুর্নামেন্টের মূল উদ্যোক্তা তথা দমদম তৃণমূলের যুব সভাপতি জনি দাস জানান, ‘খেলা হবে’ স্লোগান ইতিমধ্যেই আট থেকে আশির কাছে জনপ্রিয় হয়েছে। চায়ের দোকান বা পাড়ার মোড়ে কান পাতলেই তা শোনা যাবে। তাই এই স্লোগানকে সামনে রেখেই ‘পলিটিক্যাল ক্যাম্পেন’ করার জন্য এই টুর্নামেন্টের আয়োজন। এবং তার ট্যাগলাইন অবশ্যই ‘খেলা হবে’। ফুটবল যেহেতু বাঙালির অন্তরাত্মার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে, তাই দর্শকদের মধ্যে এই শব্দ দুটিকে গেঁথে দিতেই চেয়েছি আমরা। তবে সবুজ ঘাসের মাঠ হোক বা রাজনীতির ময়দান, খেলা হবেই হবে।
এদিকে, আয়োজকদের সমর্থন করে দমদমের তৃণমূল (Trinamool) নেতা তথা পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য বরুণ নট্ট জানান, টুর্নামেন্টের সঙ্গে আমিও যুক্ত রয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য, ফুটবলের মাধ্যমে মানুষের মনে এই স্লোগানকে ঢুকিয়ে দেওয়া। তবে এর মধ্যে যেমন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে, তেমনই কিছুটা মজার ছলে টুর্নামেন্টের প্রচারও চলছে।
উল্লেখ্য, রাজ্য রাজনীতিতে গেরুয়া শিবির প্রাসঙ্গিক হওয়ার পর ভোটযুদ্ধের আগে বাকযুদ্ধে সরগরম হয়েছে সভা-সমাবেশ। পিছিয়ে নেই শাসকদলও। দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা হোক বা যুব নেতা তাদের একাধিক বক্তব্যে, কথায় নরমে গরমে ব্যবহৃত হয়েছে এই ‘খেলা হবে’ শব্দ। তবে রাজনীতির মাঠের স্লোগানকে সাধারণের কাছে তুলে আনতে একটা আস্ত টুর্নামেন্ট? বিষয়টি আদৌ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে, নাকি বিরূপ প্রভাব ফেলবে, তার উত্তর দেবে একুশের জনমত। পাড়ায় ফুটবল টুর্নামেন্টের বিজ্ঞাপনী তোরণ।