দলের মুখ পুড়ছে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যে, রাশ টানতে উদ্যোগী মোদী
বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে দেশের পাঁচটি রাজ্যে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিজেপির(BJP) ফোকাসে রয়েছে বাংলার(Bengal) ভোটই। কার্যত সেই নির্বাচনী প্রস্তুতিতেই রবিবার দিল্লিতে দলের সর্বভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা(JP Nadda)। এমনকী মূল বৈঠক শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও এদিন ভোট-রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের এদিন নরেন্দ্র মোদি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে(Bengal Election 2021) ভালো ফল করতেই হবে। এদিনের বৈঠকে তৈরি হয়েছে বিজেপির রাজনৈতিক প্রস্তাব। রাজ্যে দলের সংগঠন যে যথেষ্ট মজবুত রয়েছে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে সেই আশ্বাস দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা করেছেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় পদাধিকারীরা। তবে দলীয় নেতৃত্ব দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করলে দলের মুখ পুড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের। মূলত সেই কারণেই রবিবারের বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন, সংবাদমাধ্যমের সামনে দলের সব নেতাকে বিবৃতি বা প্রতিক্রিয়া দিতে হবে না। সকলের বয়ান-বাহাদুর হওয়ার প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে দলীয় মুখপাত্ররাই যা বলার, বলবেন। এমনটাই জানা যাচ্ছে বিজেপি সূত্রে।
বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে গত প্রায় তিন মাস ধরে দিল্লির সীমানাগুলিতে আন্দোলনে শামিল হয়েছেন কৃষকরা। যা স্পষ্টতই ব্যাকফুটে ফেলে দিয়েছে মোদি সরকারকে। সেই কারণেই এদিনের বৈঠকে অবধারিতভাবে উঠে এসেছে কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গ। তা স্থান পেয়েছে দলের প্রস্তাবেও। বৈঠকের ফাঁকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রমন সিং বলেছেন, ‘রাজনীতির কারণে কৃষক আন্দোলনকে অযথা টেনে লম্বা করা হচ্ছে। মোদি সরকারকে বিপাকে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে। দেশের কৃষকরা নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেই আছেন। তাঁরা কৃষি আইনে যথেষ্ট সন্তুষ্ট। তবুও যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে সবসময় তৈরি।’
দলীয় সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীও জানিয়েছেন যে, কৃষি আইন তৈরি হয়েছে দেশের কৃষকদের স্বার্থেই। তিনটি কৃষি আইনের সুফল সম্পর্কে অবহিত করতে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে বিজেপির নেতাদের। জানা যাচ্ছে, রবিবার দলের সর্বভারতীয় পদাধিকারীদের বৈঠকে বিজেপির রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় নেতারা অভিযোগ করেছেন, বাংলায় হিংসা ছড়াচ্ছে রাজ্যের শাসক দল। এদিন বৈঠক শেষে দলের অন্যতম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ভূপিন্দর যাদব বলেন, ‘অসমে বিজেপিই ক্ষমতায় আসছে। পুদুচেরিতেও বিজেপিই অন্যতম বিকল্প। তামিলনাড়ু এবং কেরলেও বিজেপির সংগঠন যথেষ্ট মজবুত হয়েছে। আর পশ্চিমবঙ্গে দল ২০০টিরও বেশি আসনে জিতবে। কারণ ওই রাজ্যে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকার চলছে। তোষণের রাজনীতি চলছে। রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে যে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে, সেখানেও তারা এর উল্লেখ করেছে।’ ভূপিন্দর যাদব জানিয়েছেন, পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে এই প্রস্তাব নিয়ে দলের সর্বস্তরে যাবে বিজেপি। দলীয় খসড়া প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েই বাংলায় এবার সরকার গড়বে বিজেপি।’ করোনার টিকাকরণকেও অন্যতম বড় জয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে খসড়া প্রস্তাবে। বলা হয়েছে, ইতিমধ্যেই দেশের এক কোটি মানুষ করোনার টিকা পেয়েছেন। এই ‘জয়ে’র তালিকায় রাখা হয়েছে শ্রম আইন সংস্কার, কৃষি সংস্কার, নয়া শিক্ষানীতির মতো বিষয়কেও। এই মুহূর্তে