ডানলপের মমতার সভায় উপচে পড়ল ভিড়, অস্বস্তিতে বিজেপি
ডানলপের মাঠে(Dunlop Ground) তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সভার ভিড় দেখে মুখ ভার বিজেপির(BJP)। দু’দিন আগে প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে ওই মাঠেই দলীয় সভা করিয়েছিল বিজেপি। তারপর গেরুয়া শিবিরের ছাতি ৫৬ ইঞ্চি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ২৪ ফেব্রুয়ারি তৃণমূলের সভার পর ছাতির আয়তন চুপসে যাওয়ার ভাব। নিচুতলার কর্মী থেকে জেলাস্তরের অধিকাংশ নেতার দু’দিন আগের ‘কেমন দিলাম’ গোছের হাসিটিও বেমালুম গায়েব হয়ে গিয়েছে। হাজার চেষ্টাতেও দুই সভার ভিড়ের তুলনাতে যেতে চাইছে না কোনও স্তরের নেতৃত্বই। বরং সরল বুলি হয়ে উঠেছে, ‘মুখ্যমন্ত্রীর সভাতে ভিড় হওয়াটাই স্বাভাবিক’। ভিড় নিয়ে চর্চা এড়িয়ে গেরুয়া নেতৃত্ব ‘খেলা হবে’ নিয়ে বিতর্ক উসকে দিতে সচেষ্ট হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর সভার পর থেকে বৃহস্পতিবার বিজেপি নেতাদের সম্মিলিত আক্রমণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে, তৃণমূল সুপ্রিমোর ভাষণ। হুগলির পরিচিত বিজেপি নেতা স্বপন পাল বলেন, একজন মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ‘খেলা হবে’। এটা কখনই বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নয়। বাংলার ভাবমূর্তি নিয়ে গোটা দেশে কী বার্তা গেল, তা ভাবতেও অস্বস্তি হচ্ছে। তারপরেও বলছি আমরা রাজ্যের মানুষকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেই যাব। আর ভিড়ের তুলনা করা যাবে না। কারণ, মুখ্যমন্ত্রীর সভার মাঠ আকারে ছোট করে দেওয়া হয়েছিল। এদিকে, বিজেপির নিচুতলার কর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁরা ভেবেছিলেন সভায় তেমন জমায়েত হবে না। একে বেলা ১১টায় সভা। তার উপরে প্রধানমন্ত্রীর পরে মুখ্যমন্ত্রীর সভা। ফলে ভিড়ের পার্থক্য নজরে আসবেই। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হুগলির এক সক্রিয় বিজেপি কর্মী বলেন, আমার দল যাই বলুক, তৃণমূলের সভায় নজরকাড়া ভিড় হয়েছে। এতটা আমরাও ভাবিনি। তৃণমূলস্তরের গেরুয়া নেতাকর্মীদের আরও দাবি, প্রধানমন্ত্রীর সভার প্রভাব স্থায়ী হওয়ার পথে কাঁটা বিছিয়ে গেল ঘাসফুলে সভা। এই কথা শুনে হাসছেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব, মন্ত্রী তপন দাশগুপ্তরা। তাঁরা বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিবাদী মানুষের হাতে তৈরি দল। দেশের প্রধানমন্ত্রী এসে যেভাবে মিথ্যাচার করে গিয়েছিলেন, তারই প্রতিবাদে জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। মানুষই মুখ্যমন্ত্রীর সভা ভিড়ে ভরিয়ে দিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা প্রধানমন্ত্রীর সভার মতো আমাদের সভায় কেউ জননেত্রীকে দেখতে আসেননি। তাঁর প্রতিবাদ শুনতে এবং তাতে শামিল হতে এসেছিলেন।
একথা সত্য যে, ডানলপের মাঠে প্রধানমন্ত্রীর সভা জেলা বিজেপিকে বাড়তি অক্সিজেন দিয়ে গিয়েছিল। তাই সেই সভার দু’দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রীর সভাকে তাঁরা ধর্তবে্যর মধ্যে আনেননি। কিন্তু বাস্তবে জননেত্রীর সভার জনজোয়ার থেকে উৎসাহ, উদ্দীপনা আর ধারালো প্রতি আক্রমণে আক্ষরিক অর্থেই ‘বোলতি বন্ধ’ বিজেপির। অতিরিক্ত হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সভার আমেজ দীর্ঘস্থায়ী না হওয়ার দুঃখও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে। এই মুহূর্তে