সামান্য বাড়ল জিডিপির হার, অর্থনীতি সেই তিমিরেই
ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ভারতীয় অর্থনীতি (Indian Economy)। চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে, অর্থাৎ অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনমাসে ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) (GDP) বৃদ্ধি পেয়েছে ০.৪ শতাংশ হারে। হাতে গোনা যে ক’টি দেশ এই তিনমাসে আর্থিক বৃদ্ধির দিকে এগিয়েছে, তার মধ্যে ভারত অন্যতম। করোনা সংক্রমণ এবং লকডাউন বছরের শুরুতেই অর্থনীতিকে একেবারে পিছনের দিকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। হিসেব বলছে, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিনমাস অর্থাৎ এপ্রিল-জুন পর্যন্ত জিডিপি সংকুচিত হয়েছিল ২৩.৯ শতাংশ হারে। তারপরের তিনমাস, অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশজুড়ে লকডাউন ছিল না ঠিকই, কিন্তু সংক্রমণ সেইসময় মারাত্মক আকার নেয়। এর ফলে ভীষণ সংকুচিত হয় অর্থনীতি। তখন সংকোচনের হার ছিল ৭.৩ শতাংশ। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান বলছে, এরপর থেকেই, অর্থাৎ অক্টোবর থেকে ঘুরতে শুরু করেছে অর্থনীতির চাকা। বৃদ্ধির হার যদিও ০.৪ শতাংশ, কিন্তু তাতেও স্বস্তি পাচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। কারণ, তাঁরা বলছেন বৃদ্ধির হার যতই কম হোক না কেন, তা যে ওপর দিকে উঠতে শুরু করেছে, এটাই সদর্থক দিক। তবে অন্যদিক থেকে আরও একটি আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, ফের নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে দেশের নানা প্রান্তে।
যেহেতু করোনার সঙ্গে অর্থনীতির একেবারেই বিপরীত মেরুর সম্পর্ক, তাই আর্থিক বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। চলতি মাসের গোড়ার দিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তার মানিটারি পলিসি রিভিউ প্রকাশ করে। সেখানেই তারা আশা করছে, আগামী অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০২১-২২ সালে জিডিপি ১০.৫ শতাংশ হারে বাড়বে। চলতি অর্থবর্ষে যেভাবে করোনা দাপিয়ে বেড়িয়েছে, তাতে সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির সংকোচন ৭.৭ শতাংশ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। কিন্তু তৃতীয় ত্রৈমাসিকের ফলাফল ঘোষণার পর সেই শঙ্কা কিছুটা লাঘব হয়েছে বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এখন তাঁদের আশা, চলতি অর্থবর্ষে অর্থনৈতিক সংকোচনের হার ৭ শতাংশ বা তার নীচে নামতে পারে। যেভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ছে, ক্রেতাদের তরফে পণ্যের চাহিদা বাড়ছে এবং কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারগুলি বেশি করে খরচের দিকে ঝুঁকছে, তাতে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে, এমনটাই আশা করছেন অর্থনীতিবিদরা।