জাতীয় বিজ্ঞান দিবস – জেনে নিন ‘রামন এফেক্ট’ আবিষ্কারের কাহিনী

১৯৩০ সালেই ‘রামন ইফেক্ট’ আবিষ্কারের জন্য নোবেল-পুরষ্কার পেলেন স্যার সি ভি রামন।

February 28, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামনের গবেষণা চলছে তখন পুরোদমে। ভারতের অন্যতম উল্লেখযোগ্য বিজ্ঞানী তখন তিনি। ১৯২৮-এর ফেব্রুয়ারির ২৭ তারিখ রামন ঠিক করলেন বর্ণালীবীক্ষণ যন্ত্রের (spectroscope) সাহায্যে আলোর বিক্ষেপণে পরিবর্তিত বর্ণালী পর্যবেক্ষণ করবেন। 

এসোসিয়েশানের ল্যাবোরেটরিতে আশুবাবু সারাদিন ধরে যন্ত্রপাতি সেট করলেন। সবকিছু ঠিকঠাক করতে করতে সূর্য ডুবে গেল। সূর্যালোকের অভাবে সেদিন আর কিছু করা গেলো না। পরদিন ২৮ ফেব্রুয়ারি সকালে সূর্য ওঠার পর পরই শুরু হলো পর্যবেক্ষণ। একটু পরেই দেখা গেলো নির্দিষ্ট বর্ণের আলোর বর্ণালীর পাশে আরেকটি ভিন্ন বর্ণের আলোক রেখা – “রামন রেখা”। আবিষ্কৃত হলো ‘রামন ইফেক্ট’। 

আশুবাবু একটা মার্কারি আর্ক সেট করলেন যেখান থেকে পাওয়া গেল এক বর্ণের উজ্জ্বল সাদা আলোক রেখা। এই আলোতে নীল বর্ণের তরঙ্গদৈর্ঘের চেয়ে লম্বা অন্যসব তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোক রেখা ঢাকা পড়ে যাবার কথা। ঢাকা পড়ে গেলো ঠিকই – কেবল নীল-সবুজ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সীমানায় দুটো নতুন রেখা ছাড়া। এই নতুন রেখা সৃষ্টি হয়েছে যে বিক্ষেপণের প্রভাবে তার নাম দেয়া হলো ‘রামন ইফেক্ট’।

পরদিন ১৯২৮ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সারা পৃথিবী জেনে গেলো ‘রামন ইফেক্ট’ আবিষ্কৃত হয়েছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলো ‘নিউ থিওরি অব রেডিয়েশান’। মার্চের আট তারিখে নেচার জার্নালে পাঠানো হলো ‘রামন ইফেক্ট’ সংক্রান্ত নোট। কিন্তু একজন রেফারি তা প্রকাশযোগ্য নয় বলে পেপার প্রত্যাখ্যান করলেন। কিন্তু নেচার জার্নালের এডিটর দেখলেন এটা একটা সত্যিকারের যুগান্তকারী আবিষ্কার। নেচারে প্রকাশিত হলো ‘রামন ইফেক্ট’ আবিষ্কারের কথা।

রামন ইফেক্ট আলোক তরঙ্গের অজানা পথ খুলে দিয়েছে। শক্তির স্তর এবং অণু ও পরমাণুর গঠন বুঝতে অনেক সহায়তা করেছে রামন-ইফেক্ট। পদার্থবিজ্ঞানের অনেক শাখায় রামন ইফেক্ট কাজে লাগছে। জীববিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞানেরও অনেক শাখায় রামন-ইফেক্ট কাজে লাগিয়ে অনেক নতুন নতুন গবেষণা হচ্ছে।

১৯২৯ সালে ব্রিটিশ সরকার সি ভি রামনকে নাইট খেতাব দিলে রামনের নামের আগে ‘স্যার’ যুক্ত হয়। স্যার সি ভি রামন দ্রুত হয়ে ওঠেন ভারতীয় বিজ্ঞানের জগতের জীবন্ত কিংবদন্তী। সাধারণত বিজ্ঞানের যে কোন আবিষ্কারের পর অনেক বছর লেগে যায় তার স্বীকৃতি পেতে। বিশেষ করে নোবেল পুরষ্কারের মত পুরষ্কার পাবার ক্ষেত্রে। কিন্তু রামনের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঘটে গেলো মাত্র দু’বছরের মধ্যেই। ১৯৩০ সালেই ‘রামন ইফেক্ট’ আবিষ্কারের জন্য নোবেল-পুরষ্কার পেলেন স্যার সি ভি রামন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen