দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুক্তোর বরাত আসছে অন্য রাজ্য থেকেও

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি বিভাগের সহকারী অধিকর্তা মলয় রায় বলেন, আতমা প্রকল্পের সহায়তায় এই কাজ করেছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। আগামী দিনে এই কাজে যাবতীয় সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত।

March 3, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

প্রথমবার মুক্তো (Pearls) চাষ করেই সাফল্য পেল কুলপি ব্লক। সেখানকার ঈশ্বরীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর (Self Help Group) মহিলারা এই চাষ করে নজির গড়েছেন। এখনও জল থেকে ঝিনুক তোলার সময় আসেনি। কিন্তু তার আগেই প্রায় ১০ হাজার মুক্তোর অর্ডার পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। বলা ভালো, এই প্রথম দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোনও জায়গায় এমন চাষ হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি বিভাগের সহকারী অধিকর্তা মলয় রায় বলেন, আতমা প্রকল্পের সহায়তায় এই কাজ করেছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। আগামী দিনে এই কাজে যাবতীয় সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত।

দু’ হাজার বর্গফুটের দু’টি পুকুরে (মোট ৪০০০) মুক্তো চাষ করা হয়েছে। মূলত এখানে যে প্রকারের মুক্তোর চাষ করা হয়েছে, তাকে ডিজাইন মুক্তো বলা হয়। অর্থাৎ, অস্ত্রোপচার করে ঝিনুকের ভিতরে ডিজাইন ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তার উপর প্রলেপ পড়তে পড়তে সেটি দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে। এই মুক্তো তৈরি হতে দেড় বছর সময় লাগে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঝিনুকগুলি পুকুরের জলের মধ্যে রাখা হয়েছিল। এতদিনে সেগুলি পরিণত হয়েছে। মার্চের মধ্যেই এগুলি জল থেকে তোলা হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতেকলমে এই কাজ শিখিয়েছেন সঞ্জীব মণ্ডল এবং তন্ময় মণ্ডল। সঞ্জীববাবু বলেন, নেটের ব্যাগ তৈরি করে তার মধ্যে দু’টি করে ঝিনুক রাখা হয়। তার আগে অবশ্য কী কী ডিজাইনের মুক্তো প্রয়োজন, তা অস্ত্রোপচার করে ঝিনুকের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এরপর দড়ি দিয়ে সেই ব্যাগ জলের আড়াই ফুট নীচে ঝুলিয়ে রাখা হয়। মাছের খাবারই দেওয়া হয় তাদের। এরপর এই দেড় বছর ধরে ঝিনুকের ভিতরে যে আস্তরণ পড়ে, তা ওই ডিজাইনের আকার নেয়। এই মুক্তো থেকে মূলত লকেট তৈরি হয়। জানা গিয়েছে, এই মুক্তো ভারত এবং বাংলাদেশে বেশি তৈরি হয়।

দেড় বছরের সময় এখন শেষের মুখে। কিন্তু যেভাবে বিভিন্ন জেলা এবং ভিন রাজ্য থেকে এই মুক্তোর অর্ডার এসেছে, তাতে চিন্তায় পড়েছেন গোষ্ঠীর সদস্যারা। কারণ, এখানে সাড়ে চার হাজারের মতো মুক্তো চাষ করা হয়েছে। অথচ চাহিদা ১০ হাজারের মতো। সেক্ষেত্রে বাকিটা কীভাবে পূরণ করা যাবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা। সঞ্জীববাবুর কথায়, পাঞ্জব, মহারাষ্ট্র সহ একাধিক রাজ্য আমাদের এই মুক্তো চাইছে। সবাইকে দেওয়া সম্ভব হবে কি না, জানি না। তবে ভবিষ্যতে অন্যান্য ব্লকেও যাতে এই চাষ করা যায়, তার জন্য সব রকম সাহায্য তাঁরা করবেন বলে জানিয়েছেন সঞ্জীববাবু।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen