জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সাইকেলে প্রচার তৃণমূল প্রার্থীর
কেন্দ্রের পেট্রল-ডিজেল-রান্নার গ্যাসের(Petrol-Diesel-CookingGas) অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির(PriceHike) প্রতিবাদে সরব হয়েছে গোটা বাংলা। সেই পথেই সোমবার গাড়ি ছেড়ে সাইকেলে অভিনব প্রচার শুরু করলেন ময়ূরেশ্বর(Mayureshwar) বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল(TMC) প্রার্থী অভিজিৎ রায়(Abhijit Roy)। এদিন বীরভূমের মল্লারপুরের পথে সাইকেল(Cycle) চালিয়ে প্রচার সারলেন তিনি। এর আগে নিজের বিধানসভা মল্লারপুরের মল্লেশ্বর শিব মন্দিরে পুজো দেন অভিজিৎবাবু।
১৯৬২সাল থেকে এই কেন্দ্রটি সিপিএমের দখলে। ২০১১-র পরিবর্তনের ঝড়েও এটি তাদের দখলে ছিল। কিন্তু ২০১৬-য় তৃণমূল প্রার্থী অভিজিৎ রায়ের হাত ধরেই পরিবর্তন ঘটে। সেবার সিপিএমের অরূপ বাগকে ৩৮হাজার ৭৭০ভোটে হারান তিনি। যদিও ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের নিরিখে এখানে পিছিয়ে ছিল জোড়া ফুল শিবির। জেলার মধ্যে একমাত্র এখানেই দ্রুত উত্থান হয়েছে বিজেপির। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার মধ্যে শুধু ময়ূরেশ্বরেই বিরোধীরা নমিনেশন দাখিল করেন। শুধু তাই নয়, মল্লারপুর-১ পঞ্চায়েত দখলও করে বিজেপি। এবার এই কেন্দ্রে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে।
জেলায় বিজেপির আঁতুরঘর ময়ূরেশ্বর। এখানে দলের একাধিক প্রাক্তন জেলা সভাপতির বাস। কেন্দ্রটি পুনর্দখলে রাখতে অভিজিৎ রায়ের উপরই ভরসা রেখেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই প্রার্থী ঘোষণার পরই দলের বুথ ও অঞ্চল নেতৃত্বের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি প্রচারের রণকৌশল ঠিক করে ফেলেন অভিজিৎবাবু। সেইমতো এদিন তিনি সকালে মল্লেশ্বর শিব বাড়িতে ধুতি, ১০১টি বেলপাতা, দু’লিটার দুধ, ফল ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে পুজো দেন। একইভাবে পাশের সিদ্বেশ্বরী মাকে নতুন শাড়ি পরিয়ে ভক্তি নিবেদন করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।
মন্দির থেকে বেরিয়ে তিনি দলীয় পতাকা লাগানো সাইকেলে চেপে কেন্দ্রের পেট্রল-ডিজেল-রান্নার গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে প্রচারে নামেন। স্লোগান ওঠে, তৃতীয়বারে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বাংলার মেয়েকে চাই। অভিজিৎবাবু বলেন, বিজেপির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে নীরব। পাশাপাশি তিনি ওই সরকারকে বোবা-কালার সরকার বলেও কটাক্ষ করেন। বলেন, যেভাবে পেট্রল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ছে তাতে মানুষ দিশেহারা। এনিয়ে বিজেপির মুখে কুলুপ। তাঁরা শুধু বিভেদের রাজনীতি করে ফায়দা তুলতে চাইছে। এদিন বামেদেরও তিনি এক হাত নেন। বলেন, বামেরা এখন নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করতেই ব্যস্ত।
লোকসভা ভোটের ফলেই তা স্পষ্ট। এলাকার সিপিএম নেতা অরূপ বাগ বলেন, লোকসভা ভোটে অন্য পরিস্থিতি ছিল। সেটা আমরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করিনি। ভোটাররাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কাউকে হারানো বা জেতানো আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমরা নিজেরাই সরকার গড়ার লক্ষ্যে সংযুক্ত মোর্চার হয়ে লড়াই চালাচ্ছি। তবে এদিন তৃণমূল প্রার্থীর সাইকেল র্যালিকে গুরুত্ব দিতে চাননি এলাকার বাসিন্দা তথা বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে এমন প্রচার দিয়ে ভোলানো যাবে না। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, এবছর চাষিরা দাম না পাওয়ায় মাঠ থেকে আলু তুলতে পারছেন না। তাঁরা হতাশ। এনিয়ে তৃণমূলের কোনও নেতার কোনও উচ্চবাচ্য নেই। খুব শীঘ্রই ভোটের ফলে তাঁরা এর জবাব পেয়ে যাবেন।