বাড়ি বাড়ি প্রচার ‘ঘরের মেয়ে’ সায়নীর
বুধবার বাড়ি বাড়ি প্রচারে গিয়ে কার্যত ঘরের মেয়ে হয়ে উঠলেন অভিনেত্রী তথা তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ (saayoni ghosh)। এমনকী আদিবাসী পাড়ায় গিয়ে সবার সঙ্গে চপ মুড়িও খান তিনি। প্রখর রোদেও চোখে ছিল না দামি সানগ্লাস। মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে কখনও কোলে তুলে নিলেন শিশুকে, কখনও আবার বৃদ্ধার পা ছুঁয়ে নিলেন আশীর্বাদ। শোভাযাত্রার পর বাড়ি বাড়ি প্রচারেও নজর কাড়লেন আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল (Trinamool) প্রার্থী। বুধবার হীরাপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার অলিগলি পায়ে হেঁটে ঘুরলেন একাধিক মন্দিরে। কারও বাড়িতে ঢুকে রান্নারও খবর নিলেন। অভিনেত্রীকে দেখতে সর্বত্রই ছিল মানুষের ভিড়। হীরাপুর শহরতলিতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জনসংযোগ সারার পর দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রামাঞ্চলে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। এদিন রানিগঞ্জ ব্লকের চলবলপুরে দীর্ঘক্ষণ কাটান সায়নী। চলবলপুর মাঝিপাড়ায় গিয়ে সবার সঙ্গে চপ মুড়ি খান। প্রচারে আপ্লুত ওই এলাকার সাধারণ মানুষ।
সাম্প্রতিককালে একাধিক সিনেমার মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন সায়নী। বহু সাহসী অভিনয়ও ফুটিয়ে তুলেছেন বিনা সঙ্কোচে। তাঁর অভিনয় ক্ষমতাও প্রশংসিত। এহেন অভিনেত্রী প্রত্যন্ত গ্রামের মাঝিপাড়ায় বসে চপ মুড়ি খাচ্ছেন! এটা কোনও সিনেমার শ্যুটিংয়ের দৃশ্য নয়, বাস্তবে দেখলেন এলাকার মানুষ। গ্ল্যামার নয়, সাধারণ ঘরের মেয়ে হয়েই মানুষের মন পেতে চান সায়নী। তাই লোক দেখানে ভঙ্গিমা ছেড়ে তিনি অনেক সাবলীল গ্রামের মেয়ে হিসেবে ঘুরে বেড়ালেন চলবলপুরে। এদিন বিকেলে প্রার্থীকে নিয়ে কর্মী সম্মেলন ছিল। সেখান থেকেই এলাকায় ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন তিনি। মাঝি পাড়ায় গিয়ে দেখেন খাওয়া দাওয়া চলছে। সেখানেই বসে পড়েন তিনি। আদিবাসী বাড়ির দাওয়ায় বসে শালপাতার থালায় চপ মুড়ি খেতে শুরু করেন। যা দেখে হতবাক হয়ে যান মাঝি পাড়ার বাসিন্দারা। এভাবে অভিনেত্রী তাঁদের কাছ থেকে চপ মুড়ি চেয়ে খাবেন আশা করেননি তাঁরা। এছাড়া গ্রামের নানা পাড়ায় গিয়ে মানুষের কাছে ব্যাপক সাড়া পান তিনি। এদিন আসানসোল পুরসভার ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের হীরাপুর মোড় থেকে বাড়ি বাড়ি প্রচার শুরু করেন সায়নী। পদযাত্রায় ছিল না কোনও আড়ম্বর। কয়েকজন কর্মী, সমর্থক ও ব্লক সভাপতি লক্ষ্মণ ঠাকুরকে নিয়ে প্রার্থী পাড়ায় পাড়ায় ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন। রাস্তা দিয়ে পেরিয়ে যাওয়া সাইকেল আরোহীর পথ আটকান প্রার্থী নিজেই। কাকু কোথায় যাচ্ছেন? কেমন আছেন, নিজে থেকেই কুশল বিনিময় করেন অভিনেত্রী। যেমন সুনীল ঠাকুর, ফাল্গুনি ঠাকুরদের বাড়িতে ঢুকে পড়েন। তেমনই আবার একটি বাউরি পরিবারে হাজির হয়ে সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। বাড়ির দরজায় বসেছিল ছোট্ট অভি। তাকে কোলে নিয়ে সায়নী আদর করেন। অভিনেত্রী সরাসরি বাড়িতে চলে আসায় আপ্লুত পরিবারের সদস্যরা।
এদিন অবশ্য বাড়ি বাড়ি প্রচারের পাশাপাশি ধাবার খটিয়ায় বসে চা খেতে খেতে জন সংযোগও সারেন। সেই দৃশ্য দেখে অনেকে বলছেন, শুধু অভিনেত্রী নয়, লড়াকু নেত্রী হওয়ার সব গুণই আছে এই প্রার্থীর। মঙ্গলবার রাতে প্রচার সেরে কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে ধাবার খাটিয়ায় বসে চা খাওয়ার সময়েও পথচলতি মানুষের খোঁজ নিতে দেখা যায় প্রার্থীকে।