সায়ন্তিকার মনোনয়নের মিছিলে ঢল যুব-মহিলাদের
সায়ন্তিকা যে যুব সমাজের হার্টথ্রব, তারই প্রমাণ মিলল মনোনয়নের মিছিলে। বুধবার দুপুরে বাঁকুড়া শহরে রোড-শো করে মনোনয়ন জমা দিলেন তৃণমূল (Trinamool) প্রার্থী অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sayantika Banerjee)। প্রার্থীকে এক ঝলক দেখার জন্য রাস্তার দু’পাশে ছিল শুধুই কালো মাথার ভিড়। প্রখর রোদ, গরমের মধ্যেই সায়ন্তিকা মানুষের সঙ্গে মিশে গেলেন। মিছিলে যুব সমাজ থেকে মহিলাদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। ভিড় দেখে যেমন প্রার্থী সন্তুষ্ট হয়েছেন, তেমনই দিনভর ভ্যাপসা গরমের পর বিকেলের এক পশলা বৃষ্টি স্বস্তি এনে দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, এদিন সায়ন্তিকাকে ঘিরে যে উৎসাহ শহরে দেখা গিয়েছে, তার টেম্পো শাসক দল ধরে রাখতে পারলে নির্বাচনে ফায়দা তুলতে পারবে।
বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র অজয় ঘটক বলেন, সেলিব্রিটিকে দেখতে কিছু ভিড় হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু মানুষ বিজেপিকেই ভোট দেবেন।
এদিন নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তাই এই দিনটিকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য বেছে নেন সায়ন্তিকাও। সেই কারণে এদিন সকাল থেকে বাঁকুড়া শহরের হিন্দু স্কুলের কাছ থেকে তৃণমূল জমায়েত করেন। সায়ন্তিকার জন্য দুর্গাপুর থেকে একটি হুডখোলা জিপের ব্যবস্থা করা হয়। সাদা চুড়িদারের সঙ্গে রঙিন ওড়না নিয়ে ওই হুডখোলা জিপে চেপে সায়ন্তিকা রোড শো করেন। হিন্দু স্কুল থেকে মাচানতলা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিমি রাস্তা শহরের মূল রাস্তা কার্যত অচল হয়ে যায়। সেই মিছিলে যুব সম্প্রদায় ও মহিলাদের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি ছিল।
প্রার্থীকে দেখতে ভরদুপুরে বাড়িতে রান্না, খাওয়া ছেড়ে মহিলারা রাস্তার ধারে এসে দাঁড়ান। ইন্দারাগোড়া মোড়, রানিগঞ্জ মোড়, সুভাষ রোড প্রভৃতি এলাকায় অন্য শাখা রাস্তাগুলি ভিড়ের চাপে কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। এমনকী বিভিন্ন বাড়ি ও দোকানের ছাদ থেকেও সায়ন্তিকাকে একবার দেখার জন্য মানুষ দাঁড়িয়ে পড়েন। মিছিলের পুরো অংশে সায়ন্তিকাও ছিলেন যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত। সারা রাস্তাজুড়ে তিনি বাসিন্দাদের দিকে হাত নাড়িয়ে, ভিক্ট্রি সাইন দেখান। সেলিব্রিটি প্রার্থীর সঙ্গে সেলফির ফ্রেমে বন্দি হওয়ার জন্য যুব সম্প্রদায়ও যথেষ্ট উদগ্রীব ছিল। তাই তাঁদের অনুরোধ রেখে সায়ন্তিকাও মোবাইল ক্যামেরায় নিজেকে বন্দি করেন। এমনকী, উৎসাহীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েও আস্থা অর্জনের চেষ্টা করেন। মিছিলে খেলা হবে স্লোগানের সঙ্গে ছিল বাজনার দল। তাছাড়া যুব তৃণমূল কর্মীরা মাঝে মধ্যে স্লোগানের সঙ্গে নাচতেও থাকেন। মাইকে বারবার সায়ন্তিকাকে ঘরের মেয়ে, বাংলার মেয়ে বলে প্রচার করতেও শোনা যায়।
এদিন দুপুরে সায়ন্তিকা জেলা প্রশাসন ভবনের সামনে বলেন, দিদি দিয়েছেন বলে অনেক বড় দায়িত্ব নিতে চলেছি। এখানকার মানুষের সাহায্যেই তাঁদের পাশে থাকার কথা দিচ্ছি। মিছিলের স্রোতই বলে দিল, নির্বাচনের ফল কী হতে চলেছে। আমি অত্যন্ত আশাবাদী। এদিন শহরে প্রার্থীর রোড শোয়ে ব্যাপক ভিড় হওয়ায় শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চর্চা। তৃণমূল কর্মীদের দাবি, এই ভিড়েরর প্রভাব ভোটবাক্সেও পড়বে। বিরোধীরা অবশ্য বহিরাগত তত্ত্ব সামনে এনেছে।
এদিন সায়ন্তিকার সঙ্গে জিপে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিবাজি বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরসভার প্রশাসক অলোকা সেন মজুমদার প্রমুখ ছিলেন। এদিন সায়ন্তিকার পাশাপাশি সংযুক্ত মোর্চার বাঁকুড়া, বড়জোড়া, ওন্দার প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেন। ওন্দার বিজেপি প্রার্থী অমর শাখাও মনোনয়ন করেছেন।