প্রার্থী হতে চান না মুকুল, চাপ দিচ্ছেন অমিত – নাজেহাল বিজেপি
বাংলায় ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখেছে দল। অথচ তার অন্যতম প্রক্রিয়া, অর্থাৎ বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই করতেই নাজেহাল বিজেপি(BJP)। আক্ষরিক অর্থেই ‘প্রার্থী’ ইস্যুতে চোখ কপালে উঠেছে শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। এমনকী, বুধবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার(JP Nadda) দিল্লির বাসভবনে দলের বঙ্গ ব্রিগেডের কোর কমিটির সঙ্গে ম্যারাথন বৈঠকেও সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলেনি কোনও সমাধানসূত্র।
এদিন সকাল সাড়ে ১১টা থেকে নিজের বাড়িতে দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয় সহ বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জে পি নাড্ডা। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্তও সমস্যা মেটানোর কোনও উপায় খুঁজে পায়নি বিজেপি। অন্তত এমনটাই জানা যাচ্ছে দলীয় সূত্রে।
রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে মঙ্গলবার পর্যন্ত দু’দফায় মোট ১২৩টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল বিজেপি। নির্বাচনী কমিটির বৈঠকের পর বুধবারও চারটি কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বারুইপুর পূর্বে চন্দন মণ্ডল, ফলতায় বিধান পারুই, জগৎবল্লভপুরে অনুপম ঘোষ এবং উলুবেড়িয়া দক্ষিণে পাপিয়া অধিকারীর নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। ইতিমধ্যে আগের ঘোষিত প্রার্থী তালিকা নিয়ে অসন্তোষ জেলা পেরিয়ে কলকাতা পর্যন্ত এসে গিয়েছে। নতুন চার প্রার্থী কি তার আঁচ আরও বাড়াবে। এই প্রশ্ন এখন ঘুরছে দিল্লি তথা কলকাতার দরবারেও।
দলের শীর্ষ সূত্রের খবর, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলে কীভাবে বাকি প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব, বুধবারের ম্যারাথন বৈঠকে মূলত তারই উত্তর খুঁজেছেন জে পি নাড্ডা। কেন্দ্রীয় বিজেপির শীর্ষ সূত্র জানাচ্ছে, এদিনের বৈঠকে দিলীপবাবুদের কাছে জে পি নাড্ডা স্পষ্ট জানতে চেয়েছেন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলানোর উপায় কী? এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য বিজেপি? এমনকী গোষ্ঠীকোন্দল সামলাতে তিনি দিলীপবাবু সহ রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের বড় অংশকেই ভোটে প্রার্থী হতে বলেছেন।
সম্ভাব্য সেই তালিকায় থাকতে পারেন বিজেপির আরও কয়েকজন এমপি। দিলীপবাবুর জন্য প্রাথমিকভাবে দুবরাজপুর আসনের কথা ভাবা হয়েছে। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি প্রার্থী হতে চান না বলেই বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে। তিনি বরং চাইছেন দলীয় প্রার্থীদের হয়ে সর্বত্র প্রচারে অংশ নিতে। এছাড়া দলবদলু প্রাক্তন রেলমন্ত্রীকে কৃষ্ণনগর দক্ষিণে প্রার্থী করা যায় কি না, সেই ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা চলছে। যদিও প্রার্থী হতে নারাজ মুকুলবাবু(Mukul Roy)।
এদিন রাতেই দিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কমিটির বৈঠক হয়। গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠক চলে। যেখানে নাম ঘোষণা এখনও বাকি, সেখানে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্র ধরে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, বিজেপির পরবর্তী প্রার্থী তালিকায় নাম থাকতে পারে নদীয়া জেলার এক দলীয় এমপির। পাশাপাশি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে উত্তরবঙ্গের একটি আসনে প্রার্থী বদল হতে পারে। তবে সেই আসনে যাঁর নাম ঘোষণা করা হয়েছিল, তাঁকে অন্য কোনও কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হতে পারে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার এক বিজেপি এমপিও থাকতে পারেন প্রার্থী তালিকায়।
দু’একদিনের মধ্যেই পরবর্তী তালিকা ঘোষণা হবে বলে জানা গিয়েছে। গভীর রাতে কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কমিটির বৈঠক শেষে ফের বঙ্গ বিজেপির কোর কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বসেন অমিত শাহ এবং জেপি নাড্ডা। গোষ্ঠীকোন্দল মিটিয়ে বঙ্গ ব্রিগেডকে অবিলম্বে ভোটের প্রচারে ঝাঁপাতে নির্দেশ দিয়েছে নেতৃত্ব।