অর্থনৈতিক উন্নতিতে বাধার মুখে মহিলারা
রাষ্ট্রসংঘ বা ইউনাইটেড নেশনস-এর ‘গ্লোবাল কম্প্যাক্ট’ শাখার সমীক্ষা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে মহিলাকর্মীর উপস্থিতি ক্রমশই কমছে। শুধু সংখ্যায় নয়, গুণগতমানও কমছে।
এই পরিসংখ্যান বলছে, যে ধরনের কাজে মেয়েদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, সেখানে মূলত প্রয়োজন হয় ‘সফট স্কিল’ বা হালকা ধরনের দক্ষতা। বিপিও, শিক্ষকতা এবং ডেস্কের পিছনে চাকরিতেই প্রধানত মেয়েদের উপস্থিতি। কিন্তু যে সব কাজে ম্যানেজেরিয়াল দক্ষতা প্রয়োজন, যেখানে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠে আসছে, সেখানে মহিলাদের উপস্থিতি প্রায় নেই।
সাম্প্রতিকতম রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, এক অর্থনৈতিক ক্ষেত্র থেকে অন্য অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মহিলাকর্মীদের বাধা-বিপত্তির গঠনগত পার্থক্য রয়েছে। প্রায়শই এই পার্থক্যে প্রতিফলিত হয় সেই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সংস্কৃতির।
মহিলাদের মূলত দেখা যায়, শিক্ষকতায় এবং কেরানিদের মতো কম পারিশ্রমিকের কাজে। কখনওই এমন দেখা যায় না যে মহিলারা যে কাজ করছেন তার মালিক তাঁরাই। উদাহরণ স্বরূপ কৃষি কাজে ব্যস্ত শ্রমিকদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই গ্রাম্য মহিলা, অথচ এঁদের মাত্র ১৩ শতাংশ সেই জমির মালিক। কাজ ভাগ করে নিলেও পুঁজি সে ভাবে মহিলাদের হাতে পৌঁছচ্ছে না। তাঁরা নিজেরা কোনও কাজ স্বাধীন ভাবে করার অধিকার পাচ্ছেন না।
মহিলার যদি নিজস্ব ব্যবসা থাকে, তা হলে দেখা যায় সেই সংস্থায় মহিলাকর্মীর সংখ্যা বেশি। ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে এর পরিমাণ ৯০ শতাংশ আর সার্ভিসেস সেক্টরে এর পরিমাণ ৮১ শতাংশ।
এই রিপোর্ট জানাচ্ছে, আমরা যদি এ বছরের ‘ফরচুন ৫০০ ইন্ডিয়া’র তালিকায় নজর দিই, তা হলে দেখব ২৯ সংস্থার নেতৃত্ব দিচ্ছেন মহিলারা। এর অধিকাংশই ব্যাঙ্কিং এবং ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস সেক্টরে। এর অর্থ এই নয়, ব্যাঙ্কিং এবং ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস সেক্টর ভালো কাজ করছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, মূলত ব্যাঙ্কিং সেক্টরে বেশি শতাংশ মহিলাকর্মী রয়েছেন ওয়ার্কফোর্সের মধ্যে। পাশাপাশি পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কে মহিলাদের সংখ্যা প্রাইভেট ব্যাঙ্কের তুলনায় অনেকটাই বেশি। এ থেকেও বোঝা যায়, যেখানে মহিলাদের অবস্থা তুলনামূলক ভাবে ভালো, সেখানেও তাঁরা পুরুষদের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন।
তাই ভবিষ্যতে এর উন্নতির জন্য পরিস্থিতির গোড়ায় বদল আনতে হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।