প্রচারে ভালোবাসা পেয়ে আপ্লুত সায়ন্তিকা
‘তোমরা চাইলেও আমাকে দূরে সরিয়ে দিতে পারবে না।’ ফেসবুক লাইভে আবেগপ্রবণ হয়ে এমনই মন্তব্য করলেন বাঁকুড়ার(Bankura) তৃণমূল(TMC) প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়(Sayantika Banerjee)। বাঁকুড়ার মানুষের কাছ থেকে ভালোবাসা পেয়ে তিনি আর কোথাও যেতে চান না বলেও শনিবার রাতে ফেসবুক লাইভে জানিয়েছেন। বাঁকুড়ার তৃণমূল ভবনে বসে ওই রাতে ফেসবুক লাইভে আসেন এই তৃণমূল প্রার্থী। ফেসবুকের বন্ধুদের কাছে তিনি ঢালাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদিও তিনি অফিসিয়ালি এই ঘোষণা করছেন না বলেও ফেসবুকে জানিয়েছেন।
প্রার্থী তালিকায় নাম ঘোষণার পর পরই সায়ন্তিকাকে ‘বহিরাগত’ বলে দেগে দিয়েছিল বিরোধীরা। রুপোলি পর্দার নায়িকা সায়ন্তিকা ভোটে জিতে চলে যাবেন না তো! এমন সংশয় অনেকের মধ্যে ঘোরাঘুরি করছে। কিন্তু ফেসবুক লাইভে তিনি সেই জল্পনারও অবসান ঘটিয়েছেন। লাইভে তিনি সাফ জানিয়েছেন, পাঁচটি আঙুল সমান নয়। তাই বাঁকুড়ায় আমাকে তিন জায়গায় পাওয়া যাবে। তিনটি অফিস হবে। সেখান থেকেই আমার কাজকর্ম চলবে। বাঁকুড়া শহরের পাশাপাশি বাঁকুড়া-১ ও ২ নম্বর ব্লকে পৃথক তিনটি অফিস হবে। মানুষ যাতে কাজে এসে কোনও রকম হয়রানির শিকার না হন তারজন্যই এমন ভেবেছি। বাঁকুড়ার মানুষের এতো ভালোবাসা ছেড়ে কেউ কখনও কোথাও পালিয়ে যায় নাকি! তার সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, আমি বাঁকুড়ায় এসে হোটেলে থাকছি না। বাঁকুড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়েছি।
প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণার পরপর সায়ন্তিকার ফেসবুক পেজে লাইক, ফলোয়ারের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, ভোটে বাঁকুড়ায় ওই তারকাকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল, তাই তাঁর ফেসবুক পেজে ইদানিং বাঁকুড়ার মানুষের নজর কিছুটা হলেও বেড়েছে। সায়ন্তিকা বাঁকুড়ায় প্রচারের বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি ওই পেজে পোস্টও করেছেন। ওই রাতেও তাঁর লাইভে ভক্তরা যেমন সায়ন্তিকাকে দেখে উৎসাহিত হয়েছেন। অনেকে আবার বিরূপ মন্তব্যও করেছেন।
যদিও ফেসবুক পেজের লাইভে এসে সায়ন্তিকা কিছু কাজের ক্ষেত্রে তাঁর মনের ‘ইচ্ছে’র কথাও তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রচারে বেরিয়ে বেশ কিছু ব্যাপার তাঁর গোচরে এসেছে। সেগুলির সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। ফেসবুক পেজে তাঁর দাবি, বাঁকুড়ায় এখনও জলের সমস্যা রয়েছে। যদিও দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) (Mamata Banerjee) জলের সেই সমস্যা প্রায় ৬০ শতাংশ মিটিয়েছেন। যে কাজ বাকি আছে তা আরও দ্রুতগতিতে করার চেষ্টা করব। তাছাড়া কিছু এলাকায় স্ট্রিট লাইট বসানোর কথাও বলেছেন। এমনকী, কিছু রাস্তা বেহাল হয়ে রয়েছে বলেও তাঁর নজরে এসেছে। তাই সেই রাস্তাগুলি করার ক্ষেত্রেও তিনি ভাববেন বলে লাইভে জানিয়েছেন। এছাড়া স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উন্নতির কথা চিন্তা করবেন। ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসা সহায়তা কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর। এমনকী, বাঁকুড়ার প্রবীণ মানুষদের ভাতা বাড়িতে বসে পাওয়া যায় কি না তার চিন্তাভাবনা করার কথা বলেছেন। এছাড়া পর্যটনস্থল গড়ে তোলার ইচ্ছেও তাঁর রয়েছে। ১৭ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের ওই লাইভে সায়ন্তিকা প্রধানত মানুষের চাহিদার কথা তুলে ধরে ভিউয়ারদর মন জয় করার চেষ্টা করেছেন।
এ ব্যাপারে বিজেপির বাঁকুড়া কেন্দ্রের প্রার্থী নিলাদ্রি শেখর দানা বলেন, তৃণমূলের শেখানো বুলি তিনি আওড়েছেন। কোনও প্রতিশ্রুতিই রক্ষা করেনি তৃণমূল।
কংগ্রেসের প্রার্থী রাধারানি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রাস্তা, জলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মানে বিগত ১০ বছরে তৃণমূল সরকার কোনও কাজই করেনি। ব্যর্থতা নিয়েই তিনি নির্বাচনে নামছেন। মুনমুন সেনকে জিতিয়ে মানুষ ঠকেছেন।